Advertisement
১১ মে ২০২৪

চিনা কিংবদন্তিদের সামনেও ঘাবড়াচ্ছেন না সিন্ধু-শ্রীকান্ত

স্বাধীনতা দিবসে রিওতে ভারতীয় শিবিরে সামান্য হলেও আশার আলো। অ্যাথলেটিক্সে ললিতা বাবর, বক্সিংয়ের বিকাশ কৃষাণের হতাশার দিনে এক ঝলক বাতাস আনলেন ব্যাডমিন্টন কোর্টে কিদাম্বি শ্রীকান্ত এবং পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু। দু’জনেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন দাপট দেখিয়ে।

কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে সিন্ধু। ছবি: এএফপি

কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে সিন্ধু। ছবি: এএফপি

রতন চক্রবর্তী
রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৫১
Share: Save:

স্বাধীনতা দিবসে রিওতে ভারতীয় শিবিরে সামান্য হলেও আশার আলো।

অ্যাথলেটিক্সে ললিতা বাবর, বক্সিংয়ের বিকাশ কৃষাণের হতাশার দিনে এক ঝলক বাতাস আনলেন ব্যাডমিন্টন কোর্টে কিদাম্বি শ্রীকান্ত এবং পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু। দু’জনেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন দাপট দেখিয়ে।

হাঁটুর চোট নিয়ে খেলে সাইনা নেহওয়াল গ্রুপেই বিদায় নেওয়ার পর দেশের সেরা ব্যাডমিন্টন তারকাকে জোর বিতর্ক এখানে। কেন তিনি পায়ের চোট নিয়ে অলিম্পিক্সে নামলেন তা নিয়ে জাতীয় কোচ গোপীচন্দ-ও কিছু বলতে চাইছেন না। বেশি ডুবে রয়েছেন শ্রীকান্ত-পিভি নিয়ে। ‘‘এটা আমাদের জন্য ভাল খবর যে, দু’জন অলিম্পিক্সে সেরা আটের ভেতর উঠে এসেছে। দু’জনেই খুব ফোকাসড। ভাল তৈরি হয়ে এখানে এসেছে।’’

কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে তো দু’জনের সামনেই বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা দুই চিনা প্রতিদ্বন্দ্বী পড়েছেন। শ্রীকান্তের সামনে কিংবদন্তি লিন ডান। গত দু’বারের অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন। সিন্ধুর সামনে মেয়েদের লিন ডান— ওয়াং ইহান। বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর। এখনও র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই। দেশের দুই অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নের অন‌্যতম গোপী অবশ্য সাহসী। বলেন, ‘‘অলিম্পিক্সে যদি পদক জিততে হয় তো বিশ্বের নামীদের হারিয়েই এগোতে হবে। আমাদের দুই ছেলেমেয়ে কিন্তু মানসিক ভাবে তৈরি।’’

রিও সেন্ট্রো প্যাভিলিয়নে সোমবার প্রি-কোয়ার্টারে দুই হায়দরাবাদি শ্রীকান্ত-সিন্ধু নিখুঁত সার্ভিস, বু্দ্ধিদীপ্ত প্লেসিংয়ে নিজের-নিজের ম্যাচে ছিলেন ভাল ফর্মে। শ্রীকান্ত ২১-১৯, ২১-১৯ হারান শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী ডেনমার্কের জুরগেনসনকে। চার বছর আগে লন্ডনে পারুপল্লি কাশ্যপ শেষ আটে উঠেছিলেন পুরুষ সিঙ্গলসে। তার পর আবার শ্রীকান্ত। ‘‘আমার জীবনে এটা বড় ঘটনা। এর পর আরও কঠিন লড়াই আমার সামনে। লিন ডান আমার আইডল। ওর বিরুদ্ধে খেলাটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ব্যাপার। তবে ওঁকেও আমি হারিয়েছি,’’ বলছিলেন উচ্ছ্বসিত শ্রীকান্ত। প্রথম বার অলিম্পিক্সে নামা শ্রীকান্তের সঙ্গে সার্কিটে লিন ডানের দেখা হয়েছে তিন বার। ২০১৪-এ চিনা ওপেনে তাঁকে হারিয়েছিলেন

শেষ ষোলোয় শ্রীকান্তের চেয়ে সহজে সিন্ধু হারান চিনা তাইপের তাই জুইং-কে। ২১-১৩, ২১-১৫। সিন্ধু-ই এ বার সেরা বাজি গোপীর। ম্যাচের সময় দেখা গেল, সুযোগ পেলেই প্রিয় ছাত্রীকে টিপস দিচ্ছেন কোচ। সিন্ধু ঠান্ডা প্রকৃতির মেয়ে। আস্তে আস্তে কথা বলেন। বলছিলেন, ‘‘লড়াইটা খুব ভাল হল। স্টেডিয়ামে দর্শকরা ‘ভারত, ভারত’ বলে চিৎকার করছিলেন। ওঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, সমর্থন করার জন্য।’’ এর পর তো ইহান! সিন্ধু অল্প হাসেন। ‘‘ওর সঙ্গে অনেক বার খেলেছি। কখনও ও জিতেছে। কখনও আমি। এটা বলতে পারি, ম্যাচটা ভাল হবে।’’

সিন্ধু-শ্রীকান্তের র‌্যাকেট হাতে ঝড় তোলার দিনে ট্র্যাকে ললিতা আপ্রাণ চেষ্টা করেও নিজের সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। মেয়েদের তিন হাজার মিটার স্টিপলচেজের ফাইনালে উঠলেও চূড়ান্ত দৌড়ে তাঁকে দশ নম্বর হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল। ফাইনালে নামার আগে এখানে উপস্থিত পিটি উষার আর্শীবাদ নিয়ে গিয়েছিলেন ললিতা। ইভেন্ট শেষে বললেন, ‘‘আমার নিজের সেরা সময়টা করতে পারিনি অলিম্পিক্স ফাইনালে। তবে আমি হতাশ নই। ভারতীয় অ্যাথলিটরা অলিম্পিক্সে আসে আর ফিরে যায়, সেই অপবাদটা অন্তত ভাঙতে পেরেছি।’’ গলায় তখনও লাগানো প্রসাদী সিঁদুরের টিপ। সেখান‌ থেকে ঘাম ঝরার সময় যেন দেখাচ্ছিল রক্ত ঝরছে। তা হয়তো হয়নি। তবে হার্ডলস টপকাতে গিয়ে পায়ে চোট পান ললিতা। তা সত্ত্বেও আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র, কেনিয়ার মেয়েদের সঙ্গে এঁটে ওঠা খুব কঠিন। আমার পক্ষে যতটা সম্ভব করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

P. V. Sindhu Rio Olympics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE