Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে রিটার্ন বনাম সার্ভিস

কেভিনের সার্ভই চিন্তায় ফেলতে পারে নাদালকে

নাদালের ফাইনালে ওঠার রাস্তাটা ছিল একেবারে মসৃণ। প্রথম সপ্তাহটা কিছুটা টালমাটাল গিয়েছিল ঠিকই। তবে এটা দ্বিতীয় সপ্তাহে ওকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করেছে।

যুযুধান: বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে মুখোমুখি রাফায়েল নাদাল এবং কেভিন অ্যান্ডারসন। কিংবদন্তি ও উঠতি তারকার লড়াই। ছবি: এএফপি।

যুযুধান: বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে মুখোমুখি রাফায়েল নাদাল এবং কেভিন অ্যান্ডারসন। কিংবদন্তি ও উঠতি তারকার লড়াই। ছবি: এএফপি।

বরিস বেকার
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৬
Share: Save:

১২ মাস আগেও যা ভাবতে পারিনি, এ বার বোধহয় সেটাই হতে চলেছে। দুটো গ্র্যান্ড স্ল্যাম রজার ফেডেরারের, দুটো রাফায়েল নাদালের। সে জন্য অবশ্য নাদালকে রবিবার ফ্লাশিং মিডোজে কেভিন অ্যান্ডারসনের বিরুদ্ধে জিততে হবে। ও-ই তো এই লড়াইয়ে ফেভারিট। বছরটা ও শেষ করছে বিশ্বের এক নম্বর হিসেবে। নাদাল যে ‘গ্রেট’, তা এ থেকেই বোঝা যায়। তবে এটা সার্কিটের অন্যদের পক্ষে তেমন ভাল খবর নয়। সে প্রসঙ্গে না হয় পরে আসা যাবে। আপাতত রবিবারের ফাইনালে আসা যাক।

কারেরো বুস্তার বিরুদ্ধে পাওয়ার গেম খেলে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে উঠল অ্যান্ডারসন। দক্ষিণ আফ্রিকার ছেলেটা কোর্টের বাইরে যেমন লাজুক, কোর্টে তেমনই আগ্রাসী। আগের ম্যাচটাতে ও যখন স্যাম কুয়েরি আর ওর ২৩ হাজার সমর্থককে হারায়, তখন থেকেই ওর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। ওই ম্যাচের ছন্দটাই ওর বুস্তার বিরুদ্ধে খুব কাজে লেগেছে।

তবে ফাইনালে ওঠাটাকেই যদি ও জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা বলে ধরে নেয়, তা হলে কিন্তু বড় ভুল করবে। উচ্ছ্বাসটা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের জন্য তুলে রাখা উচিত। এটা ঠিকই যে, যার বিরুদ্ধে ও খেলতে নামছে, সে সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু ও যদি ওর আগুনের গোলার মতো সার্ভগুলো ফাইনালেও করতে পারে, তা হলে কে বলতে পারে, অঘটন ঘটবে না? গত কয়েকটা ম্যাচে ওর এই মারাত্মক সার্ভিসগুলোই তো ওকে জেতাতে সাহায্য করেছে। তা ছাড়া কোর্টে ও যদি নিজেকে ঠান্ডা রাখতে পারে আর নিজের ওপর আস্থা বজায় রাখতে পারে, তা হলে নাদাল সমস্যায় পড়বে হয়তো।

নাদালের ফাইনালে ওঠার রাস্তাটা ছিল একেবারে মসৃণ। প্রথম সপ্তাহটা কিছুটা টালমাটাল গিয়েছিল ঠিকই। তবে এটা দ্বিতীয় সপ্তাহে ওকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করেছে। আসলে সেমিফাইনালে যে ওকে একটা ব়ড় পরীক্ষা দিতে হবে, এমন ভেবেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে আসছিল ও। ফেডেরারের সঙ্গে মুখোমুখি হতে পারে, এমন জেনেই এগোচ্ছিল ও। কিন্তু দেল পোত্রো যে সব গোলমাল করে দেবে, তা আন্দাজ করাও কঠিন ছিল। ফেডেরারকে হারালেও দেল পোত্রোর পক্ষে নাদাল ছিল বেশি কঠিন। তা ছাড়া পরপর দুটো ম্যাচে দু’জন কিংবদন্তিকে হারানো মোটেই সোজা নয়। আর্থার অ্যাশে দেল পোত্রো ফেডেরারের থেকে ২-০ এগিয়ে গেল। নিউ ইয়র্কের টেনিসপ্রেমীদের দুর্ভাগ্য যে, এ পর্যন্ত একটাও ফেডেরার-নাদাল দ্বৈরথ দেখার সুযোগ হল না ওদের।

শুক্রবার শুরুটা দেল পোত্রো ভালই করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সেট থেকেই ও ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকতে থাকে। নাদাল বরাবরই নিজের আসল জায়গায় আসতে একটু সময় নেয়। সে দিনও ও ছন্দে ফিরতে একটু সময়ই নেয়। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে কোর্টে নামাটাকে ও বরাবরই উপভোগ করে। আর আত্মবিশ্বাসের তো বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই। ও যেমন সার্ভিসটা ভাল করছে, তেমনই ওর কোর্ট কভারেজ বরাবরের মতোই অসাধারণ।

সে দিন আমার প্রিভিউয়ে লিখেছিলাম, এ বারের এই যুক্তরাষ্ট ওপেনই টেনিস বিশ্বের অনূর্ধ্ব ২৫ প্রজন্মের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার ও নতুন এক যুগের সূচনা করার সেরা সুযোগ ছিল। ডমিনিক থিয়েম, আলেকজান্দার জেরেভ ও নিকোলাস কিরিয়সদের প্রথম আট বা চারে দেখার আশায় ছিল অনেকেই। কিন্তু দেখা গেল সেমিফাইনালে পঁচিশের কম বয়সের একজনই ওঠে, রাশিয়ার আন্দ্রে রুবলেভ। ফাইনালে ৩১-এর দুই খেলোয়াড় নিজেদের মধ্যে খেতাবের লড়াইয়ে নামবে। অ্যান্ডি মারে, স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা, নোভার জকোভিচদের অনুপস্থিতিটাকে কাজে লাগাতে পারল না এই প্রজন্ম। এগিয়ে এসে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে যে মহাতারকাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে, সেই ক্ষমতা ওদের আর হল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE