Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রোনাল্ডোর গোলে সুপার কাপ রিয়ালের

চোট থেকে ফিরেই আবার স্বমহিমায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সে কটাক্ষের শিকার হতে হলেও, ক্লাবের জার্সিতে এ যেন এক নতুন রোনাল্ডো। যাঁর জোড়া গোলের সৌজন্যে সেভিয়াকে ২-০ হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ জিতল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথমার্ধের মাঝমাঝি গ্যারেথ বেলের পাসে ট্রেডমার্ক জায়গা থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। বিরতির পরে আবার জোড়াল শটে পরাস্ত করেন তাঁর আন্তর্জাতিক দলের সতীর্থ বেটোকে। তাঁর চোট নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে থাকলেও, এ দিন আবার প্রমাণ করলেন কেন বিশ্বসেরা ফুটবলারের সিংহাসন তাঁর দখলে।

সুপার কাপে প্রথম গোল করে সিআর সেভেন-এর উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

সুপার কাপে প্রথম গোল করে সিআর সেভেন-এর উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫০
Share: Save:

চোট থেকে ফিরেই আবার স্বমহিমায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সে কটাক্ষের শিকার হতে হলেও, ক্লাবের জার্সিতে এ যেন এক নতুন রোনাল্ডো। যাঁর জোড়া গোলের সৌজন্যে সেভিয়াকে ২-০ হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ জিতল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথমার্ধের মাঝমাঝি গ্যারেথ বেলের পাসে ট্রেডমার্ক জায়গা থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। বিরতির পরে আবার জোড়াল শটে পরাস্ত করেন তাঁর আন্তর্জাতিক দলের সতীর্থ বেটোকে। তাঁর চোট নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে থাকলেও, এ দিন আবার প্রমাণ করলেন কেন বিশ্বসেরা ফুটবলারের সিংহাসন তাঁর দখলে।

এই দিনই। ঠিক এগারো বছর আগে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এক তরুণ ফুটবলারকে সই করিয়েছিল ১২.৪ মিলিয়ন পাউন্ডে। এক দশকে তাঁর বিশ্বের সেরা ফুটবলার হয়ে ওঠার রহস্য ভেদ করতে তাবড় বিশেষজ্ঞ কম গবেষণা চালাননি। এখনও চলছে। রিয়াল মাদ্রিদের প্রাক-মরসুম প্র্যাকটিসে হয়তো কিছুটা হলেও নিজের তুমুল সাফল্যের হদিশ দিলেন তিনি--- ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সেই ফিটনেস। তবে তাতে কিছুটা নতুনত্ব আমদানি করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ মহাতারকা।

গোটা বিশ্বকাপ যাঁকে হাঁটুর চোটের ছায়ায় কাটাতে হয়েছে। ফিটনেস নিয়ে শুনতে হয়েছে বিদ্রুপ। সেই ফিটনেসকে অস্ত্র করেই তিনি মাঠে ফেরার যুদ্ধ জিততে প্রস্তুত হচ্ছেন। যার কিছুটা আভাস পাওয়া গেল কার্ডিফে। সুপার কাপে সেভিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে প্র্যাকটিসে। রোনাল্ডো দেখালেন কেন তাঁর ফিটনেস বিশ্বসেরা। সঙ্গে তিনি যে কতটা মরিয়া মাঠে নামতে সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন সিআর সেভেন।

কিন্তু নতুনত্বটা কী?

সতীর্থদের সঙ্গে প্র্যাকটিস চলছে। পুশ-আপের। অন্যরা সাধারণ ভাবে সেটা সারলেও রোনাল্ডো খুব দ্রুত করলেন ‘ক্ল্যাপ পুশ আপ’। অর্থাৎ প্রত্যেক বার শরীরকে দু’হাত দিয়ে মাটি থেকে উপরে তুলে আনার পর তালি দিয়ে ফের শরীরকে মাটিতে নামিয়ে আনা। তাও ১৫টা খুব দ্রুত। আর শেষে ‘অ্যাথলেটিক স্টাইলে’ পিছনের দু’পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানো।

লড়াইটা কিন্তু চলছে। শুধু বিপক্ষের সঙ্গে নয়, নিজের সঙ্গেও। সেই যুদ্ধে রোনাল্ডোর অন্যতম অস্ত্র ফিটনেসের পাশাপাশি, মানসিক জোর। শরীরের সঙ্গে তাই মনের জোর বাড়ানোর প্র্যাকটিসও পর্তুগিজ তারকার রুটিনে ‘মাস্ট’। শক্তপোক্ত শরীর তৈরি করতে গেলে প্রয়োজন মনের জোরও। এটাই দর্শন সিআর সেভেনের। তাই বলে দেন, “নিজেকে সেরাটা দেওয়ার মতো জায়গায় তুলে আনতে গেলে ফোকাস করাটা জরুরি। তাই মনের জোর বাড়ানোর প্র্যাকটিসটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ,” বলে দেন রোনাল্ডো। সঙ্গে যোগ করেন, “তা হলেই কোনও বাধাই আর বাধা মনে হবে না। আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোনও পরিস্থিতিতেই নিজেকে শান্ত রাখাটা সম্ভব। পরিশ্রম আর আত্মনিয়োগটা যত বাড়বে আত্মবিশ্বাসটাও তুখোর হবে।”

কেন যে এক জনপ্রিয় স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন রোনাল্ডোকে টানা চার বার ‘ফিটেস্ট ম্যান অ্যালাইভ’ এর আসনে বসিয়েছে তার কিছুটা আভাস দিয়েছেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন কন্ডিশনিং কোচ মাইক ক্লেগ। “ওর শারীরিক উচ্চতা থেকে শরীরের আকার, পেশীবহুল দেহ, নমনীয়তা, শক্তি--- সব কিছুর ভারসাম্যই দুরন্ত।” তার সঙ্গে সংযমী জীবন যাপনও আছে। জাঙ্ক ফুড, মদ্যপান এড়িয়ে চলা। মরসুম চলাকালীন সপ্তাহে পাঁচ দিন প্রচুর দৌড়, সঙ্গে পা, বাহু, দম বাড়ানোর ট্রেনিং। এটাই সিআর সেভেনের রুটিন। যেটা তিনি কঠোর ভাবে মেনে চলেন। আর এটাই রহস্য তাঁর তুখোর ফিটনেসের। এ বার তাতেই আরও নতুনত্ব এনে মরসুমের শুরু থেকেই হয়তো ফিটনেসটা ধারাবাহিক করার চেষ্টায় রোনাল্ডো।

কিন্তু শুধুই কী ফিটনেস তার সঙ্গে নিজের সঙ্গে যুদ্ধটাও তো রয়েছে। নিজেকে প্রতিদিন সেরাটা দেওয়ার মতো প্রস্তুত করার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে মাঠে নামার তাগিদটাই হয়তো সবচেয়ে বড় অস্ত্র ‘রিয়াল রকেটের’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE