নৃশংস: চোখে ব্যান্ডেজ রবিনের। নিজস্ব চিত্র
ফের ন্যক্কারজনক ঘটনা কলকাতা ফুটবলে। প্রথম ডিভিশনের চ্যাম্পিয়নশিপে তালতলা দীপ্তি সংঘ বনাম ডালহৌসির ম্যাচের একটি পেনাল্টির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল মঙ্গলবার বিকেলের বারাসত স্টেডিয়াম। চোখ দিয়ে রক্ত ঝরল আক্রান্ত রেফারি রবিন বিশ্বাসের। অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। আক্রান্ত রেফারি এর পর বারাসত থানাতেই অভিযোগ দায়ের করেন ডালহৌসি ক্লাবের তিন ফুটবলারের বিরুদ্ধে।
অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের রেশ এখনও রয়েছে পুরোদমে। চোখের সামনে ৫২টি ম্যাচ হয়েছে। রেফারির পেনাল্টি দেওয়া বা নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন টিমের অসন্তোষ থাকলেও কোনও ফুটবলারই সাহস দেখাননি রেফারিদের কাছে ঘেঁষার।
আরও পড়ুন: সহবাগকে সম্মান দিতে গিয়ে ঐতিহাসিক ভুল
কিন্তু তা থেকে একশো বছরের পুরানো কলকাতা ফুটবল কোনও শিক্ষাই নিতে পারেনি। ইংল্যান্ড-স্পেনের দুর্দান্ত সাত গোলের ফাইনাল দেখার পরেও ফুটবলারদের মানসিকতারও কোনও বদল হয়নি। বিশ্বকাপ ফাইনালের তিন দিন পর তাই বেরিয়ে পড়েছে পুরনো কঙ্কাল।
মাঠে পুলিশ না থাকার সুযোগে রেফারি পেটালেন ডালহৌসির তিন ফুটবলার বিরা ওঁরাও, রানা মুখোপাধ্যায় এবং ভিনসেন্ট বিবেক দাশ। একটি ভিডিও ঘুরছে সকলের কাছে। রেফারিকে তাড়া করে গিয়ে নৃশংস ভাবে মারছেন এই খেলোয়াড়রা। রেফারি মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন। চোখ ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে। তা দেখেও কোনও বিকার নেই মত্ত এই ফুটবলারদের।
আক্রান্ত রেফারি।
ঘটনার সূত্রপাত ম্যাচ শেষ হওয়ার দশ মিনিট আগে। তালতলা দীপ্তি সংঘ তখন ২-০ এগিয়ে। তালতলার দীব্যেন্দু চন্দ বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন ডালহৌসির পেনাল্টি বক্সে। তা হাত দিয়ে থামান এক ফুটবলার। রেফারি পেনাল্টি দেন। তালতলার উজ্জ্বল দেবনাথ পেনাল্টি মারতে আসেন। তখনই রেফারির উপর চড়াও হন ডালহৌসির তিন ফুটবলার। তাঁকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়।
রেফারি রবিন বিশ্বাস বললেন, ‘‘আমাকে মেরেছে ওই তিন জনই। চোখে-মুখে ঘুষি মেরেছে। আমার চোখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। মুখ ফুলে গিয়েছে। আমি ম্যাচ খেলানোর মতো অবস্থায় ছিলাম না। খেলা বন্ধ করে আমি বারাসত হাসপাতালে যাই।’’
রেফারিকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ না থাকলেও আই এফ এ-র অ্যাম্বুল্যান্স ছিল। তাতে করেই হাসপাতালে এবং থানায় যান রেফারি ও তাঁর দুই সহকারী। ম্যাচ বন্ধ হওয়ার পরেও বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মাঠেই বসেছিল দুই দল। পরে রেফারির অনুমতি নিয়ে খেলোয়াড়রা চলে যান। আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘খবর পেয়েছি। রেফারি সংস্থার সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছি। রেফারির রিপোর্ট পেলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে অভিযুক্তদের।’’ কিন্তু মাঠে কেন পুলিশ ছিল না? উৎপলবাবু বলেন, ‘‘এ সব ম্যাচে সাধারণত পুলিশ থাকে না। সব ম্যাচে পুলিশ দেওয়া সম্ভবও হয় না।’’
আই এফ এ কী শাস্তি দেবে সেটা জানতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে জানা গিয়েছে, ওই তিন ফুটবলারকেই বহিষ্কার করতে চলেছে তাদের ক্লাব। আজ, বুধবার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন ডালহৌসির কর্তারা। দলের ম্যানেজার সুবল দাশ বললেন, ‘‘মাঠে টিমের কর্তারা ছিলেন। কেউ অন্যায় সমর্থন করেননি। সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy