পুরনো কথা। বহু পুরনো! কিন্তু এই শোকের আবহে সেগুলোই মনে পড়ছে আর মনে হচ্ছে এই তো সে দিন! এই তো সে দিন আমি নটিংহ্যামশায়ার জয়েন করলাম। ক্লাইভ রাইস নামে একজনের পরিবর্ত হিসেবে। কারণ সে প্যাকার ক্রিকেটে নাম লিখিয়েছে আর তাই কাউন্টি ওকে তাড়াচ্ছে। আমাকে সই করানো হল সেই তাড়িয়ে দেওয়া প্লেয়ারের পরিবর্ত হিসেবে। সালটা ১৯৭৮। এর পর আবার প্যাকারের সঙ্গে মিটমাট হয়ে যেতে কাউন্টিও ক্লাইভকে ফিরিয়ে নিয়ে এল। আমি তো ছিলামই। দ্রুত আমরা হয়ে গেলাম দারুণ বন্ধু। ফেলে আসা সময়ের রেকর্ডগুলো যদি কেউ দেখেন, আমাদের বেশ কিছু টুর্নামেন্ট জেতানো পারফরম্যান্স খুঁজে পাবেন। আমরা ন্যাটওয়েস্ট জিতি ১৯৮৭-এ। তার আগেই অবশ্য ট্রেন্টব্রিজে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে এলে অন্য কাউন্টিগুলোর ব্যাটসম্যানদের বুক কাঁপত। তখন একটা কথা নট্স ড্রেসিংরুম থেকে কৌশলে ছড়ানো হত যে, আমাদের মাঠে আউটফিল্ড আর পিচকে আলাদা করা যায় না। দু’একটা কাউন্টি গোঁয়ার্তুমি করে আগে ব্যাটিং নিয়েছিল যে, তোদের ভয় পাওয়ার কী আছে রে! আমি আর ক্লাইভ সাধারণত এই টাইপগুলোকে ৮০-৯০-এ অল আউট করে দিতাম। ম্যাচ দু’দিনে শেষ। ক্লাইভের কেরিয়ারের মাঝামাঝি ওর একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়। ঘাড়ের সিরিয়াস চোট। তাতে ওর বলের স্পিড কমে গেছিল। কিন্তু সেই স্পিড কমার আগে পর্যন্ত ক্লাইভকে খেলা যেত না। ব্যাটসম্যান হিসেবেও তুখোড়। একই সময় ইংল্যান্ডে ইয়ান বোথামের রমরমা। কিন্তু দুটো টাইপ আলাদা ছিল। বোথাম অনেকটা ফ্ল্যামবয়্যান্ট। ইনিংসগুলো তেমন ঝোড়ো খেলত। ক্লাইভ ছিল তুলনায় অনেক মজবুত। আস্তে আস্তে ইনিংস গড়ত। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের নিয়ে তখন গোটা চারেক টুর্নামেন্ট হয়েছিল। সিঙ্গল উইকেট টুর্নামেন্ট আমাদের পাঁচ জনকে নিয়ে। আমি, ইমরান, কপিল, বোথাম, সাইমন ও’ডনেল আর ক্লাইভ। এক ওভার করে বল, এক ওভার করে ব্যাট, এই টাইপের। এর একটা জিতেছিল ইমরান। বোধহয় হংকংয়েরটায়। বাকি সব ক’টা ক্লাইভ। যেহেতু দেশের হয়ে খেলতে পারত না, এই ধরনের আন্তর্জাতিক কোনও চ্যালেঞ্জ এলেই ও মুখিয়ে থাকত। সব সময়ই যেন একটা জবাব দেওয়ার জন্য চার্জড। ঘনিষ্ঠ ছিলাম বলে ওর ব্যথাটা বুঝতামও। প্রোক্টর, ব্যারি রিচার্ডস, গ্রেম পোলক এরা সবাই টেস্ট খেলে ফেলল। কিন্তু ক্লাইভ বেচারিকে টুয়েলফ্থ ম্যান হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।