Advertisement
E-Paper

ন’মিনিটে পাঁচ গোল, তাণ্ডবের নাম লেভানডস্কি

পেপ গুয়ার্দিওলার মাথায় হাত। বিস্ময়ে। সপ্তাহখানেক আগেই বিপক্ষ শিবিরে যোগ দেওয়া ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার দাতে বিশ্বাসই করতে পারছেন না। যা ঘটছে সত্যি তো! আলিয়াঞ্জ এরিনার ৭৫ হাজার দর্শকের কেউ কেউও বোধহয় চিমটি কেটে দেখছিলেন তখন। রবার্ট লেভানডস্কি। ৯ মিনিট। পাঁচ গোল। ইতিহাস। মঙ্গলবার বুন্দেশলিগায় বায়ার্ন মিউনিখ-উলফসবার্গ ম্যাচের ঘটনাক্রমের ছবিটা ছিল এ রকমই। অথচ বিস্ফোরণটা যে এত বড় মাপের হবে সেটা কিন্তু প্রথমে আন্দাজ করা যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:৩৫
ইতিহাস গড়ে নায়ক। ছবি: রয়টার্স

ইতিহাস গড়ে নায়ক। ছবি: রয়টার্স

পেপ গুয়ার্দিওলার মাথায় হাত। বিস্ময়ে।
সপ্তাহখানেক আগেই বিপক্ষ শিবিরে যোগ দেওয়া ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার দাতে বিশ্বাসই করতে পারছেন না। যা ঘটছে সত্যি তো!
আলিয়াঞ্জ এরিনার ৭৫ হাজার দর্শকের কেউ কেউও বোধহয় চিমটি কেটে দেখছিলেন তখন।
রবার্ট লেভানডস্কি। ৯ মিনিট। পাঁচ গোল। ইতিহাস।
মঙ্গলবার বুন্দেশলিগায় বায়ার্ন মিউনিখ-উলফসবার্গ ম্যাচের ঘটনাক্রমের ছবিটা ছিল এ রকমই। অথচ বিস্ফোরণটা যে এত বড় মাপের হবে সেটা কিন্তু প্রথমে আন্দাজ করা যায়নি।
গতবার বুন্দেশলিগাতে এই উলসবার্গের বিরুদ্ধেই একশো শতাংশ জয়ের রেকর্ড ছিল বায়ার্নের। কিন্তু প্রথমার্ধের মাঝামাঝি বায়ার্নই ০-১ পিছিয়ে গিয়েছিল ড্যানিয়েল কালিজুরির গোলে। মারিও গটজে, টমাস মুলার, ডগলাস কোস্তাকে নিয়ে সাজানো বায়ার্ন ফরোয়ার্ড লাইন গোলের কোনও রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছিল না। ঠিক তখনই গুয়ার্দিওলার মাস্টারস্ট্রোক।
বিরতির পরই থিয়াগো আলকান্ত্রাকে মাঝমাঠ থেকে তুলে স্ট্রাইকার লেভানডস্কিকে নামান পেপ। সলতেয় এই আগুনটুকু দেওয়াটাই যা বাকি ছিল। ছ’মিনিটের মধ্যেই বায়ার্নকে সমতায় ফেরান পোল্যান্ডের স্ট্রাইকার। তার চার মিনিটের মধ্যেই সেরে ফেলেন হ্যাটট্রিক। বুন্দেশলিগার ইতিহাসে দ্রুততম। তাও লেভানডস্কির শট তিন বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে, আর এক বার বাঁচান উলফসবার্গ কিপার দিয়েগো বেনাগলিও। সেগুলো জালে জড়ালে যে রেকর্ডটা কোথায় দাঁড়াত!
তাও পরিবর্ত হিসেবে নামা পোলিশ স্ট্রাইকারকে রোখা গেল কোথায়! যাঁর নতুন নামই হয়ে গিয়েছে ‘সুপার সাব’। হ্যাটট্রিকের দু’মিনিট পরই কোস্তার ক্রস থেকে চার নম্বর গোলটা সেরে ফেলেন। আর তার তিন মিনিটের মাথায় ওভারহেড বাইসাইকেল কিকে মধুরেণ সমাপয়েৎ!

এর আগে বুন্দেশলিগায় দ্রুততম হ্যাটট্রিকের রেকর্ড ছিল ডুইসবার্গের মাইকেল টোয়েনিসের। ২৪ বছর আগে। ৬ মিনিটে। যিনি দ্রুত অভিনন্দন জানিয়ে পোলিশ স্ট্রাইকারকে বলেন, ‘‘তুমি রেকর্ডটার যোগ্য।’’ আর লেভানডস্কির প্রতিক্রিয়া, ‘‘খুব তৃপ্ত লাগছে। কয়েক মিনিটে কী পাগলামিটাই না হল! এক গোলে পিছিয়ে ছিলাম। কিছু একটা করতে হবে মাথায় ছিল। কিন্তু পাঁচ গোল করাটা অবিশ্বাস্য।’’ একই অবস্থা লেভানডস্কির কোচেরও। ‘‘মনে হয় না এ রকম দৃশ্য এর পরে আবার কখনও দেখব। কখনও কখনও ফুটবলে অবিশ্বাস্য কিছু হয়ে যায়, ’’ বলেন পেপ।

স্ত্রী আনার সঙ্গে। ছবি: টুইটার

পরের দিন সকালেই ইনস্টাগ্রামে ম্যাচ বল নিয়ে নিজের ছবি পোস্ট করে লেভানডস্কি লিখেছেন, ‘‘দুর্দান্ত একটা রাত। দলকে সাহায্য করতে নেমেছিলাম। সেটা করতে পেরেছি। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘গোটা বিশ্ব থেকে অভিনন্দন পাচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ। আর মিডিয়াকে বলছি আপনাদের সময় দিতে পারছি না। কারণ আমায় পরের ম্যাচে ফোকাস করতে হচ্ছে। তিন দিন অন্তর আমাদের যে ম্যাচে নামতে হয়!’’

এর আগেও ফুটবলবিশ্বকে যে লেভানডস্কি চমকে দেননি তা নয়। ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর ম্যাচে চারটে গোলই তাঁর ছিল। কিন্তু তার সঙ্গে মঙ্গলবারের নজিরকেও পাশাপাশি রাখছেন তিনি, ‘‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে চার গোল আমার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা ঠিকই, তার পাশে পাঁচ গোলের এই মায়াবী রাতটাও থাকবে।’’

ও হ্যাঁ, ম্যাচটা বায়ার্ন জিতল ৫-১। ন’মিনিটের তাণ্ডবের রাতে অবশ্য সেটা আর কে মনে রাখছে!

Robert Lewandowski
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy