আইএসএলের অভিষেক ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে রয় কৃষ্ণের গোলে এটিকে-মোহনবাগান ১-০ জিতলেও উচ্ছ্বাসে ভাসতে নারাজ সবুজ-মেরুন শিবিরের প্রাক্তনরা।
শিশির ঘোষ থেকে দীপেন্দু বিশ্বাস সকলেই মানছেন, দ্বিতীয়ার্ধে রয় কৃষ্ণ বিপক্ষ রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে একক দক্ষতায় গোল করলেও এখনও সবুজ-মেরুন শিবিরের খেলায় কিছু পরিমার্জন দরকার।
মোহনবাগানের ঘরের ছেলে শিশির ঘোষের মতে, ‘‘অতিমারির কারণে বেশ কয়েক মাস ফুটবলের বাইরে ছিল খেলোয়াড়েরা। প্রাক-মরসুম প্রস্তুতির সময়েও অনুশীলন ম্যাচ হয়নি। তাই প্রথম ম্যাচে কিছু জড়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এগুলো কাটতে সময় লাগবে।’’ একই কথা বলছেন, মোহনবাগানের প্রাক্তন গোলকিপার তনুময় বসুও। তাঁর কথায়, ‘‘হাবাস আগের বারের দলটাই পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচ না হওয়ায় দলের খেলাটা দানা বাঁধতে পারেনি। মাঝমাঠে একাধিক ভুল পাস হয়েছে। প্রথম ম্যাচ বলেই হয়তো, এটিকে-মোহনবাগান অনেকটাই রক্ষণাত্মক ছিল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘হাবাস ৩-৫-২ ছকে খেলতে ভালবাসেন। গত কয়েক বছর ধরেই আমরা তা দেখে আসছি। এই ছকে মাঝমাঠে দুই প্রান্তে যারা খেলছে, তাদের অনেকটা উঠে-নেমে দায়িত্ব পালন করতে হয় দলের আক্রমণ এবং রক্ষণের সময়। কিন্তু কেরলের বিরুদ্ধে ওই জায়গায় প্রবীর দাস প্রথম দিকে ওভারল্যাপে বেশি যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে প্রবীর আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ালেও তখন ওর দিকে চাপ দিচ্ছিল বিপক্ষ। শেষ পর্যন্ত প্রীতমেরা সেই চাপ সামাল দিয়েছে। যে সুযোগ নিয়ে কিবুর ছেলেরা আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মাইকেল সুসাইরাজ চোট পেয়ে উঠে যাওয়ার পরে শুভাশিস বসুকে নামিয়েছিলেন হাবাস। কিন্তু ও আক্রমণের বদলে রক্ষণেই বেশি ছিল। যার ফলে কখনও কখনও রয় কৃষ্ণকে একা হয়ে পড়তে দেখেছিলাম। দুরন্ত পারফরম্যান্স করতে গেলে কিন্তু আক্রমণ ভাগে লোক বাড়াতে হবে মোহনবাগানকে।’’
দুই প্রাক্তনই নজর দিয়েছেন মাঝমাঠে একাধিক ভুল পাস হওয়ার ব্যাপারটিকে। তাঁদের পরামর্শ, ডার্বির আগে এই ত্রুটি সারিয়ে ফেলতে হবে অনুশীলনে। কারণ, রোজ রোজ রয় কৃষ্ণ অর্ধেক সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোল করবেন না। শিশির আরও বলছেন, ‘‘রয় কৃষ্ণ ভারতে খেলা বিদেশিদের মধ্যে অনেক উচ্চমানের ফুটবলার হলেও, প্রথম ম্যাচ দেখে মনে হল এখনও পুরোপুরি ম্যাচ ফিট নয়। ’’
মোহনবাগানের আর এক ঘরের ছেলে সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও বললেন, ‘‘কিবুকে গত বছর খুব কাছ থেকে মোহনবাগানে দেখার সুবাদেই জানতাম ও বল ধরে মাটিতে পাস খেলতে পছন্দ করে। সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে গিয়েছিল কেরল। কারণ, বলের দখল বেশি থেকেছে ওদের ফুটবলারদের পায়েই। কিন্তু এটিকে-মোহনবাগানের মাঝমাঠ ও রক্ষণে ভারসাম্য থাকায় বিপক্ষ বড় সুযোগ পায়নি। কারণ, বলের দখল বেশি থেকেছে ওদের ফুটবলারদের পায়েই। কিন্তু এটিকে-মোহনবাগানের মাঝমাঠ ও রক্ষণে ভারসাম্য থাকায় বিপক্ষ বড় সুযোগ পায়নি। বিপদের মুহূর্তে ঠিক লোক বাড়িয়ে বল কেড়ে নিতে পেরেছে প্রণয়, কার্ল ম্যাকহিউয়েরা।’’
প্রশ্ন উঠেছে রয় কৃষ্ণকে দ্বিতীয়ার্ধে তুলে নেওয়া প্রসঙ্গেও। কারণ, এতে মানসিক ভাবে সুবিধা পেয়ে গিয়েছিল কেরল ব্লাস্টার্স। তবে মোহনবাগানের এই তিন প্রাক্তন ফুটবলারই প্রশংসা করছেন সন্দেশ জিঙ্ঘনের। শিশিরের মতে, ‘‘প্রীতমদের সঙ্গে সন্দেশকে রক্ষণে নেতৃত্ব দিয়ে খেলতে দেখলাম। অনেকটা আমাদের সময়ে সুব্রত ভট্টাচার্য এবং মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যদের মতো।’’