প্রতিবাদী: তেইশটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক সেরিনা উইলিয়ামসকে নিজের দেশেই চলতি বছরে পাঁচ বার ডোপ পরীক্ষা দিতে হয়েছে। ফাইল চিত্র
সেরিনা উইলিয়ামস অভিযোগ করলেন, তিনি বৈষম্যের শিকার। ‘বৈষম্য’ কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁকেই বার বার ডোপ পরীক্ষা দিতে হয়। তেইশটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের অভিযোগ, অন্য আর কাউকে এত বার করে এই পরীক্ষা দিতে হয় না।
সম্প্রতি ডোপ পরীক্ষার কর্মীরা আবার তাঁর কাছে এলে সেরিনা টুইট করে তাঁর বিরক্তিও প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, ‘‘আবার সেই সময় উপস্থিত যখন ডোপ পরীক্ষা হবে এবং একমাত্র সেরিনারই পরীক্ষা হবে। সমস্ত খেলোয়াড়ের মধ্যে শুধু আমারই পরীক্ষা হচ্ছে বার বার। বৈষম্য? আমার তা-ই মনে হচ্ছে।’’
একটি ওয়েবসাইট পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালেই সেরিনার পাঁচ বার ডোপ পরীক্ষা করেছে ‘উসাডা’ (যুক্তরাষ্ট্রের ডোপ বিরোধী সংস্থা)। সেই রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, গত ১৪ জুন সংস্থার কর্মীরা যখন তাঁর কাছে আসেন, তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। সেরিনার অভিযোগ আরও মারাত্মক, তাঁকে যে সময় দেওয়া হয়েছিল তার বারো ঘণ্টা আগেই নাকি উসাডার কর্মীরা পৌঁছে যান। অথচ উসাডা তাদের রিপোর্টে লিখে দেয়, এটা ‘মিস্ড টেস্ট’ (যেখানে যাঁর পরীক্ষা তিনি অনুপস্থিত থাকেন)। ডোপ পরীক্ষার নিয়ম, এই রকম তিন বার ‘মিস্ড টেস্ট’ হওয়া মানেই এক বার ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার সমান।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অন্য খেলোয়াড়দের থেকে দ্বিগুণ বেশি ডোপ পরীক্ষা হয়েছে সেরিনার। যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন স্লোয়ান স্টিফেন্সের পরীক্ষা হয়েছে এক বার। সেরিনার দিদি ভিনাসের হয়েছে দু’বার। সেখানে সেরিনার পাঁচ বার! মেয়েদের টেনিসের চলমান কিংবদন্তি সেরিনা বলেছেন, ‘‘আমি নিজেই জানতাম না যে, অন্যদের চেয়ে আমার পরীক্ষা এত বেশি বার হয়েছে।’’ পাশাপাশি, তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সব সময়ই চান খেলা কলঙ্কমুক্ত থাকুক। ‘‘টেনিসকে কলঙ্কমুক্ত রাখার জন্য যা যা করণীয়, সব কিছুতে আমার সায় আছে। যে কোনও রকম সহযোগিতা করতে আমি প্রস্তুতি। যত বার খুশি আমার পরীক্ষা হোক। ডোপ পরীক্ষা নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। শুধু জানতে চাইছি, বাকিদেরও কি এমন ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে?’’
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সেই রিপোর্ট সেরিনাও পড়ছেন। আর সেটা পড়েই গোটা ছবিটা তাঁর সামনে পরিষ্কার হয়েছে। তিনি বার বার জেতেন। তাঁর দেহের গঠন সার্কিটের অন্য পাঁচ জন খেলোয়াড়ের চেয়ে ভাল। তার উপর তিনি অশ্বেতকায়। ওই রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এ সবই হয়তো সেরিনাকে বার বার পরীক্ষার সামনে দাঁড় করায়। সেরিনা বলেছেন, ‘‘লেখাটা না পড়লে জানতেই পারতাম না যে, আমার প্রতি এতটা বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়ে থাকে। অবাক হয়ে দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রে অন্য কোনও খেলোয়াড়কে আমার মতো পরীক্ষা দিতে হয় না!’’
তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘আসল ব্যাপার হচ্ছে সাম্য রক্ষা করা। যদি পাঁচ বার ডোপ পরীক্ষা করতে হয়, তো করো। আমার অসুবিধে নেই। কিন্তু সেটা যেন শুধু এক জনকে ঘিরেই করা না হয়। আমার মনে হয়, সাফল্যের সংখ্যাটা আমাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে দিচ্ছে।’’ সেরিনার এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নিয়ে উসাডা বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে অতীতে তারা দাবি করেছে যে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কখনও কারও ডোপ পরীক্ষা তারা করে না। যদিও সেরিনার ‘বৈষ্যম্যের’ অভিযোগ নতুন করে ক্রীড়া বিশ্বে ঝড় তুলতে বাধ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy