Advertisement
E-Paper

আগুয়েরো অপ্রতিরোধ্য, ছুটছে সিটি

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নাটকীয় ভাবে বদলে যায় ছবিটা। নেপথ্যে আগুরেয়ো-কেভিন দে ব্রুইন যুগলবন্দি। ৪৮ ও ৫৩ মিনিটে কেভিনের পাস থেকেই গোল করেন আগুয়েরো।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:২৭
উচ্ছ্বসিত আগুয়েরো। ছবি: গেটি ইমেজেস।

উচ্ছ্বসিত আগুয়েরো। ছবি: গেটি ইমেজেস।

ভয়ঙ্কর সুন্দর!

শনিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটি-র বিরুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র পাঁচ গোলে জয়ের রাতে একাই চার গোল করলেন সের্জিও আগুয়েরো। ২২ ম্যাচে ২১ গোল করে তিন বছর পরে ফের ইপিএলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে আর্জেন্তিনীয় স্ট্রাইকার। এই মুহূর্তে তাঁর সামনে শুধু ২৩ গোল করা টটেনহ্যাম হটস্পারের হ্যারি কেন।

লেস্টারের বিরুদ্ধে ম্যাচের তিন মিনিটের মধ্যেই রাহিম স্টার্লিংয়ের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। ২৪ মিনিটে গোল করে লেস্টারের হয়ে সমতা ফেরান জেমি ভার্ডি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নাটকীয় ভাবে বদলে যায় ছবিটা। নেপথ্যে আগুরেয়ো-কেভিন দে ব্রুইন যুগলবন্দি। ৪৮ ও ৫৩ মিনিটে কেভিনের পাস থেকেই গোল করেন আগুয়েরো। ৭৯ মিনিটে তিনি হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করলেন লেস্টার গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেলের ভুলে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি গোলরক্ষক পিটার স্মাইকেলের ছেলে ক্যাসপারের উত্থান ম্যান সিটি-র যুব দল থেকেই। যদিও সিনিয়র দলের হয়ে পাঁচ বছরে গোটা দশেকের বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। হতাশা নিয়েই বারো বছর আগে ম্যান সিটি ছেড়ে লোনে ডার্লিংটনে চলে গিয়েছিলেন ক্যাসপার। শনিবার রাতে আরও এক বার ব্যর্থতার যন্ত্রণা নিয়ে এতিহাদ স্টেডিয়াম ছাড়লেন তিনি। চতুর্থ গোল আগুয়েরো করেন ম্যাচের শেষ মুহূর্তে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডের জয়ের অন্যতম নায়ক ফিল ফ়ডেনের পাস থেকে।

চার গোলের রাতেই ২৯ বছর বয়সি আগুয়েরো ইপিএলে নতুন কীর্তিও গড়লেন। এই নিয়ে তৃতীয় বার চার বা তার বেশি গোল করলেন একটি ম্যাচে। ইপিএলের ইতিহাসে এই রেকর্ড অন্য কোনও ফুটবলারের নেই। সেই সঙ্গে টানা চার মরসুমে কুড়িটির বেশি গোল করে জায়গা করে নিলেন অ্যালান শিয়েরার, থিয়েরি অঁরি ও হ্যারি কেনের পাশে। এখানেই শেষ নয়। ম্যান সিটি-র ঘরের মাঠ এতিহাদ স্টেডিয়ামে শেষ তিনটি ম্যাচের দু’টোতেই হ্যাটট্রিক করার নজির গড়লেন তিনি।

মাত্র কয়েক মাস আগেও অবশ্য পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। প্রথম একাদশে নিয়মিত সুযোগ না পেয়ে ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দিয়েগো মারাদোনার প্রাক্তন জামাই। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ২০১৯-এ ফিরে যাবেন আর্জেন্তিনার ইন্ডিপেনডেন্টে এফসি-তে। এই ক্লাব থেকেই উত্থান আগুয়েরোর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, গুয়ার্দিওলার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিও আগুয়েরো-র ম্যান সিটি ছাড়তে চাওয়ার অন্যতম কারণ। সেই আগুয়েরোই এখন ম্যান সিটি ম্যানেজারের প্রধান অস্ত্র। লেস্টার ম্যাচের আগের দিনই গুয়ার্দিওলা জানিয়েছিলেন, ইচ্ছে থাকলেও আগুয়েরো-কে বিশ্রাম দিতে পারছেন না তিনি। কারণ, এই মুহূর্তে আর্জেন্তিনা তারকাই তাঁর দলের একমাত্র স্ট্রাইকার। আর লেস্টার ম্যাচের পরে আগুয়েরো-কে ম্যান সিটি-র কিংবদন্তি আখ্যা দিলেন স্প্যানিশ কোচ। উচ্ছ্বসিত গুয়ার্দিওলা বলেছেন, ‘‘আগুয়েরো ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র কিংবদন্তি। অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে জন্মেছে। বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে আগুয়েরো ভয়ঙ্কর।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আগুয়েরোর তৃতীয় ও চতুর্থ গোলটা তো অবিশ্বাস্য। আর দ্বিতীয় গোলটা করেছে নিখুঁত ভাবে।’’

ম্যান সিটি-র জয়ের নায়ক বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি দারুণ খুশি। কারণ, আমার গোল দলকে ম্যাচটা জিততে সাহায্য করেছে। আশা করছি, আমরা এই ছন্দটা ধরে রাখতে পারব।’’ আগুয়েরো উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন কেভিন দে ব্রুইনের-ও। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সৌভাগ্য যে ওর মতো ফুটবলার দলে রয়েছে। বেশির ভাগ গোলই আমি করেছি কেভিনের পাস থেকে। সব দলই চাইবে কেভিনের মতো ফুটবলারকে নিতে।’’

২৭ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে ম্যান সিটি। এখনও পর্যন্ত হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ। ড্র করছে তিনটি ম্যাচে। ফুটবল পণ্ডিতদের মতে আগুয়েরো-দের চ্যাম্পিয়ন হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। গুয়ার্দিওলা অবশ্য বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখাতে রাজি নন। পাঁচ গোলে দুর্ধর্ষ জয়ের রাতেও ফুটবলারদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘ম্যাচ আর কতগুলো বাকি আছে, তা নিয়ে ভাববে না। পরের ম্যাচের উপরে মনঃসংযোগ করো।’’

Sergio Aguero Manchester City Leicester City Football EPL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy