কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। ছবি: টুইটার।
নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দুশো রানের ওপর তাড়া করে ম্যাচ জেতার পরে ভারতীয় শিবিরে এক জনকে নিয়ে উচ্ছ্বাস তুঙ্গে। তিনি শ্রেয়স আইয়ার। ম্যাচের সেরা এই ব্যাটসম্যানকে কখনও দেখা যাচ্ছে ‘চহাল টিভি’-তে। কখনও কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে অকল্যান্ড ভ্রমণে। শ্রেয়সকে ‘জাদুকর’ও বলেছেন শাস্ত্রী।
আজ, রবিবার অকল্যান্ডের ইডেন পার্কেই আবার ভারত-নিউজ়িল্যান্ডের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তার আগে ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। মণীশ পাণ্ডে, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চহাল এবং শ্রেয়সকে দেখা গিয়েছে শহর ভ্রমণে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি ছড়িয়ে পড়ে। শ্রেয়সের সঙ্গে একটি ছবি টুইট করে শাস্ত্রী লিখেছেন, ‘‘ঝলমলে আকাশ। জাদুকর শ্রেয়স আইয়ারের সঙ্গে।’’
শুক্রবার চার নম্বরে নেমে ২৯ বলে অপরাজিত ৫৮ রান করে ভারতকে ছয় উইকেটে ম্যাচ জিতিয়েছেন শ্রেয়স। তার পরে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে বলাবলি হচ্ছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে শ্রেয়সই আদর্শ। ম্যাচের পরে যুজবেন্দ্র চহালের বিখ্যাত ‘চহাল টিভি’-তে এসেছিলেন শ্রেয়স। চহালের প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘‘আমার সঙ্গে থেকে কি এই ভাবে ম্যাচ জেতানো অভ্যাস করে ফেলেছ?’’ জবাবে শ্রেয়স বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই। তুমি আমাদের এত আনন্দ দাও যে ম্যাচ খেলার টেনশনই ভুলে যাই। মনেই হয় না কোনও ম্যাচে ব্যাট করছি। এই ভাবেই আমাদের আনন্দ দিয়ে যেয়ো।’’
শনিবার অকল্যান্ড শহর ঘুরে দেখছেন কুলদীপ, চহাল, ঋষভরা। ছবি: টুইটার।
এর পরে চহাল বলেন, ‘‘তুমি যখন ব্যাট করতে নেমেছিলে, বেশ চাপ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিরাট ভাই, রাহুল আউট হয়ে যায়। তোমার সঙ্গী ছিল মণীশ (পাণ্ডে)। ওই সময় কী মনে হচ্ছিল তোমার?’’ জবাবে শ্রেয়স বলেন, ‘‘ওই সময় একটা লম্বা জুটি গড়া প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম, ম্যাচটাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে। শুনেছিলাম, ইডেন পার্কে শেষ চার ওভারে ৫০ রানও তুলে দেওয়া যায়।’’
ইডেনে পার্কের মাঠের আয়তনটাই একটু অদ্ভুত রকমের। সোজা বাউন্ডারি খুবই ছোট। ফলে ব্যাটসম্যানদের লক্ষ্যই থাকে সোজা শট খেলার। ‘‘তোমাদের গেমপ্ল্যান কী ছিল?’’ চহালের প্রশ্নের জবাবে শ্রেয়স বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম ওভারে অন্তত একটা বাউন্ডারি মারতে। তাতে বোলারদের উপরে চাপটাও থাকে আর আস্কিং রেটটাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।’’
শ্রেয়সকে এখন অনেকেই নতুন ফিনিশার বলছেন। চহালও বলেন, ‘‘তোমার মধ্যে ইদানীং এই ব্যাপারটা বেশ দেখা যাচ্ছে। ম্যাচ শেষ করে আসছ। অকল্যান্ডেও যেমন করলে। এই নতুন ভূমিকা নিয়ে কী বলবে?’’ শ্রেয়সের জবাব, ‘‘আমাদের দলে রোহিত ভাই, বিরাট ভাইয়ের মতো অসাধারণ সব ব্যাটসম্যান আছে। যারা ম্যাচ শেষ করে আসে একেবারে। ওদের খেলা দেখে, ওদের সঙ্গে থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আর ম্যাচ শেষ করে আসার তৃপ্তিটাই আলাদা। যখন দেখা যায়, বল গ্যালারিতে গিয়ে পড়ছে আর ম্যাচটা আমরা জিতে গিয়েছি, তখন অনুভূতিটাই অন্য রকম হয়।’’ সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ করার আগে চহাল বলে বসেন, ‘‘মাহি ভাই (মহেন্দ্র সিংহ ধোনি) ছিল যে ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করত। তার পরে এলাম আমি। এখন দেখছি তুমিও ছয় মেরে ম্যাচ জেতাচ্ছ!’’ যা শুনে শ্রেয়সের আক্ষেপ, ‘‘সত্যিই, এ জন্য আমার আক্ষেপ যাচ্ছে না। আমি ভেবেছিলাম, ফিনিশার হিসেবে তোমার আগে থাকতে পারব। কিন্তু তুমি তো আমাকে টপকে দু’নম্বরে চলে এসেছ!’’
ভারতীয় শিবিরে হাসি ঠাট্টার আমেজ থাকলেও নিউজ়িল্যান্ডের কাছে রবিবারের ম্যাচ ফিরে দাঁড়ানোর লড়াই। যে ম্যাচ জিততে গেলে নিউজ়িল্যান্ড বোলারদের আরও আক্রমণাত্মক হতে হবে বলে মনে করছেন কেন উইলিয়ামসনের দলের স্পিনার ইশ সোধি। প্রথম ম্যাচে দুই উইকেট পাওয়া এই লেগস্পিনার বলেছেন, ‘‘আমাদের ব্যাটসম্যানেরা যথেষ্ট আগ্রাসী ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে দুশো রানের ওপর তুলে দিয়েছিল। বোলারদেরও এই আগ্রাসনটা শিখতে হবে।’’ তবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উপরে চাপ তৈরি করাটা যে সোজা হবে না, তা স্বীকার করেছেন সোধি। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় দলে পাঁচ-ছ’জন দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান আছে। ইডেন পার্কের মতো ছোট মাঠে ওদের থামানো খুবই কঠিন কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy