লড়াকু: গত বছর উইম্বলডনে স্বপ্নপূরণের পরে হালেপ। ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাসের জন্য দেশ জুড়ে লকডাউন। রাস্তায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বুখারেস্টে অন্য এক জীবন কাটাচ্ছেন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়ার জনসংখ্যা ২.১ কোটি। ১৬ মার্চ থেকেই সেখানে লকডাউন চলছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের বাড়ির বাইরে বেরোনোর অনুমতি নেই। তার চেয়ে কম বয়সি যাঁরা, শুধু কাজের জন্য বা খুব প্রয়োজন পড়লেই বাইরে বেরোতে পারবেন। কাজের জন্য যাঁরা বাইরে বেরোবেন, তাঁদের অনুমতিপত্র থাকা বাধ্যতামূলক। তা ছাড়া রাত্রে কারফিউও থাকছে।
‘‘আমি একেবারেই বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছি না,’’ রোমানিয়ায় নিজের বাড়ি থেকে বলেছেন হালেপ। তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমি এমন এক জন মানুষ যে এ সব ব্যাপারকে খুব গুরুত্ব দিয়ে এসেছি বরাবর। গোটা বিশ্বে যা চলছে, তাতে খুব উদ্বেগে আছি। রোমানিয়ায় লকডাউনে খুব কড়াকড়ি। রাস্তায় সেনা টহল দিচ্ছে। প্রয়োজন না হলে বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই।’’
হালেপের জন্ম কনস্ট্যান্টার ব্ল্যাক সি রিসর্টে। ২০১৮ সালে ফরাসি ওপেন জয়ের পরেই তিনি রোমানিয়ার বড় তারকা হয়ে উঠেছেন। গত বছর সেরিনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে উইম্বলডন জেতার পরে যখন দেশে ফেরেন, তাঁকে বরণ করে নেওয়ার জন্য দেশের মানুষের উচ্ছ্বাসের শেষ ছিল না। বুখারেস্ট জাতীয় স্টেডিয়ামে ৩০ হাজার মানুষ এসেছিলেন তাঁর জয়ের উৎসব পালন করতে। এমনকী তাঁর নামে ডাকটিকিটও প্রকাশ করা হয়।
রবিবার পর্যন্ত রোমানিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০,৬৩৫। যার মধ্যে মারা গিয়েছেন ৬০১। ‘‘খুব উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রোমানিয়ায়। আমি তো করোনা সংক্রান্ত কোনও খবর পড়ছি না বা দেখছি না। তাতে আমার চিন্তা আরও বেড়ে যায়। বরং তার চেয়ে এই সময়ে কতটা সাহায্য করতে পারি তাতে বেশি জোর দিচ্ছি,’’ বলেন হালেপ। গত মাসে তিনি কনস্ট্যান্টা ও বুখারেস্টের হাসপাতালে মেডিক্যাল সরঞ্জাম দান করেছেন। তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমার দিক থেকে কর্তব্য বাড়িতে থাকা। ইতিবাচক মানসিকতা রাখা। এ সবেই বেশি জোর দিচ্ছি।’’
মেয়েদের পেশাদার টুর, তাঁর খেলোয়াড় বন্ধুদের খুব অভাব অনুভব করছেন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন। তবে তাঁর মনে হচ্ছে, টেনিস তাড়াতাড়ি ফের শুরু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। করোনার জন্য সমস্ত পেশাদার টুর ১৩ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথম বার উইম্বলডন বাতিল হয়ে গিয়েছে। ফরাসি ওপেন, যে প্রতিযোগিতায় তিনি তিন বারের ফাইনালিস্ট তা ২৪ মে থেকে সরে গিয়েছে ২০ সেপ্টেম্বরে।
‘‘আমার বিশ্বাস যদি সেপ্টেম্বরে ফের খেলতে পারি তা হলে আমরা জিতে যাব। কারণ তার অর্থ করোনার আতঙ্ক তত দিনে দূর হয়ে যাবে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আমরা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলার স্বপ্নই দেখতে পারি শুধু,’’ বলেন হালেপ। করোনার প্রভাব হালেপের রোজকার জীবনেও পড়েছে। এখন সকালে উঠে অনুশীলন নেই। তাই দেরি করতে ঘুমোতে যাচ্ছেন। সকালে উঠছেন দেরিতে। এর মধ্যে অবশ্য শারীরচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে চলছে রান্না করা, বই পড়া, সিনেমা দেখা এবং পরিবারের সঙ্গে জমাট আড্ডাও।
তবে সব কিছুর মধ্যেও টেনিসের অভাবটা রয়েছেই। ‘‘এত দিন ধরে টেনিস ছাড়া আছি। ভাবলেই অবাক লাগছে। আমার খেলোয়াড় জীবনে এত দিন টেনিস ছাড়া থাকিনি।’’ অবশ্য লকডাউন উঠলে টেনিস নয়, অন্য কিছু করতে চান তিনি। সেটা কী? হালেপের উত্তর, ‘‘অবশ্যই রেস্তরাঁয় গিয়ে অর্ডার করব আমার প্রিয় ডেজার্ট।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy