Advertisement
E-Paper

সনি অনিশ্চিত, পাহাড় টপকাতে ভরসা ডিকা

‘‘শিলংয়ের বিরুদ্ধে নামার আগে একটা যেন বাড়তি অনুপ্রেরণা কাজ করছে আমার মধ্যে। ওদের হারাতেই হবে। গোল করতেই হবে।’’ তিন দিন আগে চার্চিল ব্রাদার্স ম্যাচের জোড়া গোলদাতার গলায় যেন ঝরে পড়ে প্রত্যয়ও।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৯
চিন্তিত: বল পায়ে কি মাঠে নামতে পারবেন সনি? ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

চিন্তিত: বল পায়ে কি মাঠে নামতে পারবেন সনি? ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দিপান্দা ডিকার চোখ দু’টো বেশ ভাসা ভাসা। অনেক কথা যেন লুকিয়ে আছে সেখানে। বুধবার মোহনবাগান মাঠ থেকে অনুশীলন করে বেরোনোর সময় সেই ক্যামেরুন স্ট্রাইকারের চোখেই অদ্ভুত একটা জেদ।

‘‘শিলংয়ের বিরুদ্ধে নামার আগে একটা যেন বাড়তি অনুপ্রেরণা কাজ করছে আমার মধ্যে। ওদের হারাতেই হবে। গোল করতেই হবে।’’ তিন দিন আগে চার্চিল ব্রাদার্স ম্যাচের জোড়া গোলদাতার গলায় যেন ঝরে পড়ে প্রত্যয়ও। গতবারের আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন ডিকা। এবং সেটা শিলং লাজংয়ের জার্সিতে। পুরনো টিমের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে আগুনে মনোভাব থাকবে স্বাভাবিক।

ডিকার শরীরী ভাষার সঙ্গে মিল নেই সনি নর্দের। পুরো টিমের মতোই উৎকণ্ঠা নিয়ে বুধবার সারাক্ষণ হয় ফিজিও, নয় ডাক্তারের কাছে সময় কাটাতে হল তাঁকে। প্রায় খাটালের মতোই কাদামাঠে সতীর্থরা যখন সেট পিস অনুশীলন বা দৌড়ে ব্যস্ত, তখন হাঁটুর চোটে কাবু সবুজ-মেরুনের হার্ট থ্রব শূন্য দৃষ্টি নিয়ে নানা ভাবে পেশির শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করে গেলেন। খেলতে পারবেন? ছেলের সঙ্গে ফেস বুকে ফুটবল খেলার ছবি পোস্ট করলেও সরাসরি ‘খেলব’ বলতে পারলেন না সনি। ‘‘খেলতে তো চাই-ই। ইউতা চোট পেয়ে গেল। অভিজ্ঞ ইউতা থাকলে মাঝমাঠ নিয়ে চিন্তা থাকত না। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। পয়েন্ট নষ্ট করা যাবে না। এখনও সময় আছে। চেষ্টা করে যাচ্ছি খেলার।’’ সনির এই অধিনায়োকোচিত মনোভাবেই বিপদে পড়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তাঁদের আশঙ্কা, সামনে পরপর ম্যাচ। দলের এক নম্বর তারকা জোর করে মাঠে নেমে পড়লে টিমের বিপদ বাড়বে।

হ্যাঁ। তবুও সনির মরিয়া মনোভাব দেখে যা কখনও করেন না, সেটাই করেছেন সঞ্জয় সেন। মোহনবাগান কোচ কুড়ি জনের তালিকা জমা দিয়েছেন ম্যাচ কমিশনারের কাছে। আজ বৃহস্পতিবার বাছবেন আঠারো। তালিকায় সনির নাম থাকলেও সঞ্জয় বলে দিলেন, ‘‘সম্ভাবনা পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। তবে কোনও ঝুঁকি নেব না। ধরে নিন না, খেলার সম্ভাবনাই বেশি।’’ তালিকায় দেখা যাচ্ছে, দীপেন্দু দুয়ারি এবং নিখিল কদমকে রাখা হয়েছে সনির পজিশনে খেলার জন্য।

আনসুমানা ক্রোমা খেলছেন। তা সত্ত্বেও চোটের ধাক্কায় সবুজ-মেরুনে বসন্তের হাওয়া উঁকি দিতে দিতেও হঠাৎই যেন উবে গিয়েছে। অনেকটা কলকাতার শীতের মতো। তিন দিন আগে গোয়ার ক্লাবকে গুনে গুনে পাঁচ গোল দেওয়ার পরও তাই সঞ্জয়ের মুখ থেকে বেরোয়, ‘‘শিলং-কে নিয়ে আতঙ্কে আছি। ইস্টবেঙ্গলের কাছে শিলং হয়তো পাঁচ গোল খেয়েছে। ওটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু টিমটা খুব সংগঠিত। কর্নার বা ফ্রি কিকে গোল পাচ্ছে নিয়মিত।’’ সম্ভবত সেই কারণেই এ দিন সকালে মাঠের যে জায়গায় এখনও সবুজ অক্ষত, সেখানেই টানা সেট পিস আটকানোর তালিম দেওয়া হল কিংগসলে ওবুমেনেমে, কিংশুক দেবনাথদের।

ডার্বি জয়ের পরের ম্যাচেই বড় ব্যবধানে জয়। যা সাধারণত দুই প্রধানে কদাচিৎ হয়েছে। তা সত্ত্বেও পাহাড়ি টিমকে কেন ভয় পাচ্ছে সঞ্জয় বিগ্রেড? তার কারণ সনি না খেললে তিন জনের বেশি বিদেশিই যে যুবভারতীতে নামাতে পারবে না মোহনবাগান! আর কে না জানে, ভাল বিদেশিরাই এখন পার্থক্য গড়ে দেয় ম্যাচে। কিন্তু সঞ্জয় যত ভয় পাচ্ছেন ততটা শক্তি কি নিয়ে এসেছেন পাহাড়ি টাট্টুঘোড়ারা? তাদের বেশিরভাগ ফুটবলারই তো অ্যাকাডেমির। শিলং কোচ ববি নমনোগেটকে দেখে মনে হল বেশ চাপে। ‘‘ইস্টবেঙ্গলের কাছে বিশ্রী হারের পর চাপে পড়ে গিয়েছি। কারণ মোহনবাগান আরও অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে সনি না খেললে সেটা আমাদের সুবিধা বইকী!’’ শিলংয়ের লাইবেরিয়ান স্টপার লরেন্স ডো অবশ্য তাঁর কোচের সঙ্গে একমত নন, ‘‘মোহনবাগানের বিরুদ্ধে অন্য ম্যাচ হবে।’’ তিনি অবশ্য সনির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলেন স্বদেশীয় ক্রোমাকে, ‘‘ও-ই মোহনবাগানের আসল প্রাণশক্তি।’’ আর তার কিছুক্ষণ পর ক্রোমা চমকে দিলেন এটা বলে যে, ‘‘ছোটবেলায় লরেন্সের খেলা দেখতে নিয়মিত স্টেডিয়ামে যেতাম।’’ তা হলে লরেন্সের বয়স এখন কত? সনি খেলবেন কি না, সেই রহস্যের মতোই এও ভাঙতে চাইলেন না ক্রোমা!

Sony Norde Dipanda Dicka Ansumana Kromah Mohun Bagan Football Injury I League
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy