Advertisement
E-Paper

টেস্টেও চলে স্পট ফিক্সিং, দাবি তদন্তে

চ্যানেলের তদন্তে চাঞ্চল্যকর ভাবে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার দু’জন ক্রিকেটার রাঁচির টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে রাজি হয়েছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৪:৩১

গত দু’বছরে ভারতীয় দল খেলেছে, এমন অন্তত তিনটি টেস্টে গড়াপেটা হয়েছিল বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল আল জাজিরা নামে একটি টিভি চ্যানেল। ভারতের কোনও ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগ ওঠেনি। তবে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কয়েক জন ক্রিকেটার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে চ্যানেলের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।

দোহা থেকে সক্রিয় এই চ্যানেল গোপন ক্যামেরা অভিযান চালিয়ে জানিয়েছে, স্পট ফিক্সিং এখনও চলছে। ভারতের খেলা যে তিনটি টেস্টের কথা বলা হয়েছে, সেগুলি হল— চেন্নাইয়ে ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট (১৬-২০ ডিসেম্বর, ২০১৬), রাঁচিতে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া (১৬-২০ মার্চ, ২০১৭) এবং গলে ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা (২৬-২৭ জুলাই, ২০১৭)। এই তিনটি টেস্টের দু’টিতে ভারত জিতেছিল, একটি ড্র হয়।

চ্যানেলের তদন্তে চাঞ্চল্যকর ভাবে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার দু’জন ক্রিকেটার রাঁচির টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে রাজি হয়েছিলেন। যদিও সেই টেস্ট ড্র হয়েছিল। কারা সেই দু’জন ক্রিকেটার, তা আপাতত গোপন রেখেছে চ্যানেলটি। তবে জানিয়েছে, এ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের স্বার্থে তাঁরা সম্পূর্ণ নথিপত্র তুলে দিতে রাজি আছে উপযুক্ত সংস্থার হাতে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, জুয়াড়িরা চেন্নাইয়ের ম্যাচে ইংল্যান্ডের কয়েক জন ক্রিকেটারকে দিয়ে স্পট ফিক্সিং করিয়েছিল। ঠিক কী ধরনের স্পট ফিক্সিং, তা বিস্তারিত ভাবে জানায়নি চ্যানেলটি। তবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, কয়েকটি ওভারে কম রান ওঠার উপর বাজি ধরা হয়েছিল। সেই হিসেব মতো যাতে রানটা ওঠে, সেটাই নাকি অভিযুক্ত ক্রিকেটারেরা নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বোর্ড কর্তারা এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের কোচ ট্রেভর বেলিস বলেছেন, ‘‘আমি অভিযোগের বিস্তারিত কিছু জানি না। তবে চেন্নাইয়ে আমি কোচ ছিলাম। এ রকম কিছু ঘটতেই পারে না।’’ একই কথা বলেছেন অধিনায়ক জো রুটও।

স্পট ফিক্সিং হচ্ছে, ম্যাচের ফলাফল নিয়ে গড়াপেটা না করে অংশবিশেষের উপর বাজি ধরা। যেমন একটি ইনিংসে কত রান উঠতে পারে বা এমনকি, একটি ওভারে বা নির্দিষ্ট একটি পর্বে কী হতে পারে, কত রান উঠতে পারে বা ক’টা উইকেট পড়তে পারে, তা নিয়েও বাজির দর তুঙ্গে উঠতে পারে। সেই সব বাজির দাঁও সঠিক লাগানোর জন্য অনেক সময়ে ক্রিকেটারদের টাকার টোপ দিয়ে গড়াপেটায় প্রলুব্ধ করতে পারে জুয়াড়িরা। সেটাকেই বলা হয় স্পট ফিক্সিং। টিভি চ্যানেলটির দাবি, শুধু ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টিতেই নয়, টেস্টেও চলছে স্পট ফিক্সিং।

গোপন ক্যামেরায় ধরা হয়েছে মুম্বই নিবাসী এক প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং এক ভারতীয় জুয়াড়ির কথোপকথন। জুয়াড়ির সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের ‘ডি’ কোম্পানির যোগাযোগ আছে বলেও দাবি করা হয়েছে। পিচ বিকৃত করে নিজেদের ইচ্ছে মতো ফল ঘটানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্রিকেটারকে প্রলুব্ধ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নানা ধরনের স্পট ফিক্সিং করা— অনেক রকম কাজই নাকি হয়ে যেতে পারে এদের অঙ্গুলিহেলনে। আনিল মুনাওয়ার নামে ভারতীয় ব্যবসায়ীকে ভিডিয়োতে বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘যে রকম চাইবেন, সেই অনুযায়ী খেলা চলবে। সেটা ঘটানোর দায়িত্ব আমাদের।’ সন্দেহ করা হচ্ছে এই মুনাওয়ারই ‘ডি’ কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত এবং ম্যাচ গড়াপেটার পাণ্ডা। সঙ্গী রবিন মরিস ভারতের এক জন প্রাক্তন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার। রমাকান্ত আচরেকরের সারদাশ্রমে ক্রিকেট শিখতেন। যে স্কুল থেকে সচিন তেন্ডুলকর বেরিয়েছেন। ভিডিয়োতে মরিসকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, দেশ-বিদেশের অন্তত ৩০ জন ক্রিকেটারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। এঁদের দিয়ে যে কোনও ম্যাচকেই প্রভাবিত করতে পারেন।

পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার হাসান রাজাও এই চক্রের মধ্যে আছেন বলে কথা উঠেছে। চ্যানেলের প্রকাশ করা একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট খেলা হাসান রাজা জুয়াড়িদের সঙ্গে বসে আছেন। পাকিস্তানের একটি চ্যানেলের কাছে যদিও রাজা বলেছেন, তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার তিন ক্রিকেটার আছেন সন্দেহের তালিকায়। আইসিসি তদন্ত শুরু করেছে। ভারতীয় বোর্ডও তদন্তের দিকে তাকিয়ে। শ্রীলঙ্কা বোর্ড এই ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনকে সাময়িক নির্বাসনেও পাঠিয়েছে।

Spot-fixing Test Cricket ICC Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy