সিস্টেম বনাম তাৎক্ষণিক ফর্মুলা
অমল দত্ত— ভারতীয় ক্লাব কোচিংয়ে অভিনবত্বের জনক। তাঁর মগজাস্ত্রের আবিষ্কার ডায়মন্ড কিংবা সুইপার সিস্টেম। কস্মিনকালে সিস্টেমের বাইরে বেরোতেন না। আগে সিস্টেম, পরে ফুটবলার।
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়— তাৎক্ষণিক ফর্মুলায় বিশ্বাসী। প্রতিভাকে গুরুত্ব দিয়ে দল টেনে নিয়ে যেতেন। সিস্টেমের চেয়ে ‘হিট অব দ্য মোমেন্ট’ ভাবতেন বেশি। আগে ফুটবলার, পরে সিস্টেম।
আধুনিকতা বনাম আবেগ
অমল দত্ত— আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করা কোচ। অমলদার মধ্যে সব সময় বিদেশি কোচের ছায়া দেখা যেত। আধুনিক চিন্তাধারা। স্ট্র্যাটিজিক্যালি দারুণ। ওঁর দেখানো দর্শনে আমার মতো অনেকের কোচিং-জীবন শুরু ময়দানে।
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়— মানসিক ভাবে প্রচণ্ড শক্তিশালী। ভোকাল টনিক, প্রবল উত্তেজক কর্থাবার্তা বলে দলকে তাতানোর চেষ্টা করতেন। আবেগপ্রবণ কোচ। এই চূড়ান্ত আবেগ দিয়ে এখনকার দিনে কোচিং আর বোধহয় সম্ভব নয়।
জেদ বনাম ম্যান ম্যানেজমেন্ট
অমল দত্ত— তাঁর সিস্টেমে মানিয়ে নিতে পারলে ফুটবলাররা থাকত, না হলে বাইরের দরজা খোলা। অমলদার ‘সিস্টেম আগে, ফুটবলার পরে’ মনোভাব প্রায় সব শিষ্যের কাছে তাঁকে কোনও না কোনও সময় অপ্রিয় করে তুলেছিল।
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়— টিমের স্বার্থে যে কোনও আপস করতে তৈরি থাকতেন। প্রতিভাকে যোগ্য মর্যাদা দিতেন। টিমের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখতেন সব সময়। নিজের মতামত জোর করে ফুটবলার-কর্তাদের উপর চাপিয়ে দিতেন না।
আত্মসম্মান বনাম ইয়েস ম্যান
অমল দত্ত— আন্তর্জাতিক ফুটবলজ্ঞান যদি ধরা হয় তা হলে অমলদা অতুলনীয়। তাই আত্মসম্মানবোধও অন্যদের চেয়ে বেশি ছিল। কোনও দিন কর্তাদের তোয়াক্কা করতেন না।
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়— অনেক সময় কর্তাদের চাপে দল গড়েছেন। ছক পাল্টেছেন। টিমের স্বার্থে ‘ইয়েস ম্যান’ হয়ে উঠেছেন কর্তাদের।
এককাট্টা বনাম বৈচিত্র
অমল দত্ত— সিস্টেমের দাস হয়ে যাওয়ায় যেমন সাফল্য দেখেছেন, তেমনই প্রচুর ব্যর্থতাও দেখেছেন। খামখেয়ালিপনার জন্য সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু তিনি যে সিস্টেম আমদানি করতেন সেটা আবার ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে চালু হয়েও যেত। কোনও না কোনও ভাবে সবাই মেনে চলত তাঁর দেখানো পথ।
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়— কোনও নিদিষ্ট সিস্টেমে নিজেকে বেঁধে রাখতেন না। দলের স্বার্থে পরিবর্তনে বিশ্বাসী ছিলেন। যে কোনও সময় যে কোনও ফর্মেশনে খেলতেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy