নজরে: ব্রাজিলের পাওলিনহো মন জিতে নিয়েছে কলকাতার। আগের ম্যাচে জার্মানির বিরুদ্ধে করেছে বিস্ময় গোল। আজ তার সঙ্গে লড়াই ইংল্যান্ডের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সোমবার সকালের উড়ানে কলকাতা থেকে গুয়াহাটি। মাঝরাতে ফের কলকাতায় প্রত্যাবর্তন।
ব্রাজিল শিবিরে কিন্তু তা নিয়ে ক্ষোভ নেই। উল্টে যুবভারতীতে সেমিফাইনাল স্থানান্তরিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত কার্লোস আমাদেউ। মঙ্গলবার বিকেলে যুবভারতীতে সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাজিল কোচ বললেন, ‘‘বিশ্বকাপে খেলার চেয়ে কোনও কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয় আমার কাছে। কী হয়েছে, তা নিয়ে ভাবছি না।’’ এর পরেই কার্লোসের হুঙ্কার, ‘‘ব্রাজিল ছাড়া বিশ্বকাপ হয় নাকি!’’ দশ বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের যন্ত্রণা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ব্রাজিলের ফুটবলাররা। গ্রুপ থেকে রানার্স হয়ে শেষ ষোলোয় উঠলেও সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি তারা। ঘানার কাছে হেরে ছিটকে যায় টুর্নামেন্ট থেকে।
জার্মানি-বধ করে গত রবিবারই বিশ্বকাপে বিপর্যয়ের বদলা নিয়েছে পাওলো হেনরিক সাম্পাইও হেনরিক (পাওলিনহো), লিঙ্কন ডস স্যান্টোস-রা। এ বার প্রতিপক্ষ খেতাবের আর এক দাবিদার ইংল্যান্ড। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই বদলে যায় যে কোনও দলের অন্দরমহলের আবহ। ব্যতিক্রম ব্রাজিল। কোচ থেকে ফুটবলার— প্রত্যেকেই ফুরফুরে মেজাজে।
আরও পড়ুন: তিকি তাকা বনাম শক্তির লড়াই মুম্বইতে
মঙ্গলবার বিকেলে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে ইংল্যান্ড অনুশীলন শুরু করার দশ মিনিটের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্র্যাকটিস দেখা যাবে না। ব্রাজিলের অনুশীলন দেখার ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল। সাংবাদিক বৈঠকেই কোচ বলে দিলেন, ‘‘আমাদের পুরো অনুশীলনই আপনারা দেখতে পারেন। প্রয়োজনে ছবিও তুলতে পারবেন।’’ দুরন্ত ফর্মে থাকা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহারণের আগে এতটা উদ্বেগহীন থাকার রহস্য কী? কার্লোসের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা সুন্দর ফুটবল খেলতে চাই। কারণ, সেটাই ব্রাজিলের ঐতিহ্য। বিশ্বকাপ হোক বা ফ্রেন্ডলি, আমরা সব ম্যাচে একই মানসিকতা নিয়ে নামি।’’
কার্লোস অভিভূত বাংলার ক্রীড়াপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখেও। বললেন, ‘‘কলকাতার মানুষ যে ভাবে আমাদের স্বাগত জানিয়েছেন, তাতে আমরা অভিভূত। এ বার আমাদেরও প্রতিদান দেওয়ার পালা।’’
তবে গুয়াহাটি থেকে যুবভারতীতে ম্যাচ স্থানান্তরিত হওয়ায় নেপথ্যে ব্রাজিলের কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি করলেন কার্লোস। তিনি বললেন, ‘‘গুয়াহাটিতে পৌঁছনোর পরে জানতে পারলাম, ম্যাচ কলকাতায় সরে গিয়েছে। আমরা কিন্তু কখনওই ফিফাকে ম্যাচ স্থানান্তরিত করার জন্য অনুরোধ করিনি। পুরোটাই ফিফার সিদ্ধান্ত।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘ম্যাচ কলকাতায় খেলতে হবে শোনার পর আমরা অবশ্য দারুণ খুশি হয়েছিলাম।’’ কেন? ব্রাজিল কোচের উত্তর, ‘‘কলকাতায় আমরা যে রকম অভ্যর্থনা পেয়েছি, তা অকল্পনীয়।’’ যদিও সূত্রের খবর, ব্রাজিল শিবিরের আপত্তিতেই বাতিল করা হয়েছে গুয়াহাটির মাঠ। শুধু তাই নয়। কার্লোসের দাবিতেই যুবভারতীতে ম্যাচ দেওয়া হয়।
কী কারণে গুয়াহাটিতে খেলতে আপত্তি জানায় ব্রাজিল? জানা গিয়েছে, গুয়াহাটি স্টেডিয়ামের মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কার্লোস। এ দিন যুবভারতীতে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল টিম ম্যানেজেন্টের এক সদস্য বলছিলেন, ‘‘গুয়াহাটির মাঠের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হওয়া গর্ত বালি দিয়ে ভরাট করা ছিল। অনেক জায়গার ঘাস উঠে গিয়েছে। ওই মাঠে খেললে যে কোনও সময় চোট পেতে পারে ফুটবলাররা। ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কখনওই সেই ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy