Advertisement
E-Paper

ঘরে ভাল বল করলে বিদেশ সফরের তোফা

ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এই প্রকল্প শুরু হয়ে গিয়েছে বর্তমান দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই। দিল্লির উঠতি ফাস্ট বোলার নভদীপ সাইনি-কে নিয়ে আসা হচ্ছে ওয়ান্ডারার্সে তৃতীয় টেস্টের আগে।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৯
পরিকল্পনা: ফাস্ট বোলারদের ‘পুল’ চায় ভারত। ফাইল চিত্র

পরিকল্পনা: ফাস্ট বোলারদের ‘পুল’ চায় ভারত। ফাইল চিত্র

নতুন নতুন ফাস্ট বোলার তুলে আনার জন্য অভিনব উদ্যোগ নিচ্ছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এ বার থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে কোনও পেসার নজর কাড়লে তাঁকে বিদেশ সফরে টিমের সঙ্গে পাঠানো হবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।

ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এই প্রকল্প শুরু হয়ে গিয়েছে বর্তমান দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই। দিল্লির উঠতি ফাস্ট বোলার নভদীপ সাইনি-কে নিয়ে আসা হচ্ছে ওয়ান্ডারার্সে তৃতীয় টেস্টের আগে। এ বারে রঞ্জি ট্রফিতে দারুণ বল করে সকলের নজর কেড়েছেন সাইনি। টিম ম্যানেজমেন্টও পঁচিশ বছরের এই ডান-হাতি পেসারকে নিয়ে উৎসাহী। আর এক জন বাসিল থাম্পি। যাঁকে ইয়র্কার দেওয়ার ব্যাপারে দেশের এক নম্বর বোলার ধরা হচ্ছে। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই দু’জনের উপর।

এ বারে দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি ভারতীয় দল। দেশ থেকে জোরে বোলার নিয়ে এসে নিজেদের মতো করে তৈরি হয়েছিল। সেই তালিকায় বাসিল থাম্পি ছিলেন। তিনি প্রস্তুতি শিবিরে যে রকম বল করে গিয়েছেন, তা দেখে অনেকেই মুগ্ধ। প্র্যাক্টিস বোলারদের দলে থাকার কথা ছিল সাইনির-ও। কিন্তু দিল্লি রঞ্জি ফাইনাল খেলছিল বলে তিনি আসতে পারেননি। এ বারে তাই তাঁকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে শার্দূল ঠাকুর-ও আসতে পারেন।

ঠিক হয়েছে, নিয়মিত ভাবেই এ বার থেকে বিদেশ সফরে জোরে বোলারদের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। যাতে বিদেশের পেস-সহায়ক পরিবেশে বোলিং করার অভিজ্ঞতা এই উঠতি প্রতিভারা অর্জন করতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যাটসম্যানরা দলগত ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু বোলারদের পারফরম্যান্স যথেষ্ট সন্তোষজনক। দু’টি টেস্টে চল্লিশটি উইকেট তুলেছেন বোলাররা। স্বয়ং এ বি ডিভিলিয়ার্স-ও গত কাল বলেছেন, ভারতীয় পেসাররা তাঁদের চমকে দিয়েছেন গতি এবং স্কিল দিয়ে। এ বি বলেছেন, তাঁরা এতটা গতিসম্পন্ন ভারতীয় পেস বোলিং দেখতে পাবেন বলে আশা করেননি। কিন্তু এ বি-র প্রশংসার পাশাপাশি, ময়নাতদন্তে এটাও ধরা পড়েছে যে, আরও পেশাদারি মনোভাব আনতে হবে। আরও শৃঙ্খলা আনা জরুরি।

বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বোলারদের আরও ধারাবাহিক হওয়া দরকার। মহম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরা বা ভুবনেশ্বর কুমার-দের দেখা গিয়েছে ওভারে তিনটি ভাল বল করে চতুর্থ বলটি হাফভলি দিয়ে বাউন্ডারি গলিয়ে দিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা এই সুযোগ দিচ্ছেন না ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। তাঁরা একই মাপা লেংথে টানা বল করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে কাগিসো রাবাডা-কে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যেতে পারে। এক্সপ্রেস গতির বোলার হয়েও গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো একটানা সুন্দর লাইন-লেংথে বল করে যাচ্ছেন রাবাডা। আত্মতুষ্ট না হয়ে তাই ভারতীয় পেস বোলিংকে আরও শক্তিশালী করার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

ঠিক হয়েছে, সারা দেশের সম্ভাবনাময় ফাস্ট বোলারদের চিহ্নিত করে অন্তত দশ জনের ‘পুল’ বানানো হবে। তাঁদের জন্য তৈরি করা হবে সারা বছরের ‘প্রোগ্রামিং’। যখন খেলা থাকবে না, তখন জাতীয় অ্যাকাডেমিতে গিয়ে আলাদা ভাবে ট্রেনিং করবেন তাঁরা। কঠোর অনুশাসনের মধ্যে তাঁদের থাকতে বলা হবে যাতে ছুটির আমেজে ফিটনেস না হারিয়ে ফেলেন।

তাঁদের সঙ্গে মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা-দেরও বলা হবে ক্রিকেট না থাকলে জাতীয় অ্যাকাডেমিতে গিয়ে ফাস্ট বোলারদের জন্য তৈরি রুটিন অনুসরণ করতে। অতীতে বেশ কয়েক বার দেখা গিয়েছে, সফরে আসার পরে একশো শতাংশ ফিটনেস নেই কোনও ক্রিকেটারের। এর কারণ, ছুটির সময় ট্রেনিং থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকা। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এ সব নিয়ে জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলী এবং ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। নির্বাচকেরা ইতিমধ্যেই সম্ভাবনাময় পেসারদের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছেন। সম্ভবত প্রতিশ্রুতিমান ব্যাটসম্যানদের নিয়েও একই রকম তালিকা তৈরি করা হবে। বোলারদের মতো তরুণ কোনও ব্যাটসম্যানকে দলের সঙ্গে বিদেশে পাঠানো হবে কি না, সেটাও দেখার। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ব্যাটিং ব্যর্থতায় যে ইতিমধ্যেই শ্রেয়স আইয়ার বা পৃথ্বী শ’-এর মতো তরুণদের কথা উঠতে শুরু করেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

বোর্ডে নিয়ম হয়ে গিয়েছে, ভারতীয় দলের কোচ হলে তিনি আর আইপিএলে কোচিং করাতে পারবেন না। তাই আইপিএলের সময় হেড কোচ রবি শাস্ত্রী, বোলিং কোচ বি. অরুণ এবং ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার— সকলেই ফাঁকা থাকবেন। এই সময়টা শাস্ত্রী-অরুণরা জাতীয় অ্যাকাডেমিতে বাছাই করা তরুণদের প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখতে হাজির হতে পারেন।

যে সব বোলার বা ব্যাটসম্যানেরা আইপিএলে খেলছেন না, তাঁদের সেখানে ডাকা হতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতা যাতে ইংল্যান্ডেও সফরসঙ্গী না হয়, সেই সাবধানতা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনও মনে করা হচ্ছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ঠিক করে দিতে পারে, কোহালিদের বিদেশ অভিযানে ভবিষ্যতের রাস্তায় কে টিকে থাকবে, কে ছিটকে যাবে।

Indian Cricket Team Bowlers Overseas ground Domestic Tournaments Cricket India vs South Africa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy