Advertisement
২২ মে ২০২৪

হ‌ংকং থেকে অপরাজিত হয়ে ফেরাই চ্যালেঞ্জ সনিদের

মোহনবাগানের অভিধান থেকে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গিয়েছে ‘টেনশন’, ‘মানসিক চাপ’, ‘সমস্যা’ শব্দগুলো। যে কোনও পরিস্থিতিতে লড়াই করার জন্য যেন সব সময় প্রস্তুত সনি নর্ডি-কিংশুক দেবনাথরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:০৯
Share: Save:

মোহনবাগানের অভিধান থেকে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গিয়েছে ‘টেনশন’, ‘মানসিক চাপ’, ‘সমস্যা’ শব্দগুলো। যে কোনও পরিস্থিতিতে লড়াই করার জন্য যেন সব সময় প্রস্তুত সনি নর্ডি-কিংশুক দেবনাথরা।

যে টিমটা এখনও পর্যন্ত আই লিগে অপরাজিত, তাদের এ রকম মনোবল থাকাটাই স্বাভাবিক। আর মোহন কোচ সঞ্জয় সেন চাইছেন, ফুটবলারদের এই মানসিকতাকেই জিইয়ে রাখতে। সে জন্য বুধবার এএফসি কাপের ম্যাচে সাউথ চায়নার বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে লড়াইয়েও অপরাজিত থাকার স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন সনিদের কোচ। যে গেমপ্ল্যানের সারমর্ম— জিততে না পারি, ড্র করলেও ঠিক আছে। মঙ্গলবার রাতে প্র্যাকটিসের পর সনি-কাতসুমিদের কোচ হংকং থেকে ফোনে বললেন, ‘‘এই মুহূর্তে যদি আমরা এএফসির ম্যাচ হেরে যাই, তার প্রভাব কিন্তু আই লিগেও পড়বে। সেটা আমি কোনও ভাবেই চাই না। সে জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’’

সাউথ চায়না টিম সম্পর্কে ভাল করে খোঁজখবর নিয়ে সঞ্জয় কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছেন। বলছিলেন, ‘‘টিমটা তো গতবার এএফসি কাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। ডিফেন্স বেশ শক্তিশালী। সার্বিয়ার একজন ডিফেন্ডার খেলে দেখলাম। দারুণ খেলছে।’’ হং‌কংয়ের এই ক্লাব ২০০৯-এ এএফসি কাপে সেমিফাইনালও খেলেছিল। তবে এ বার অবশ্য প্রথম ম্যাচে মায়ানমারের ক্লাবের কাছে হেরেছে। মোহনবাগান আবার মলদ্বীপের মাজিয়ার বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জিতেছে। পয়েন্টে বাগান এগিয়ে থাকলেও সঞ্জয় কিন্তু এগিয়ে রাখলেনন প্রতিপক্ষকে। বলছিলেন, ‘‘হংকংয়ে এসে ওদের হারানো সহজ হবে না। ঘরের মাঠে জেতার জন্য মরিয়া থাকবে ওরা।’’

সাউথ চায়নার কোচ ক্যাসেমিরো মিয়োর বাগানকে নিয়ে হোমওয়ার্ক নাকি ভালই করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলে দিয়েছেন, ‘‘মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আমাদের ম্যাচটা সহজ হবে না। ওদের ফরোয়ার্ড লাইন শক্তিশালী। সনি, গ্লেন, কাতসুমির মতো ফুটবলার রয়েছে। প্রথম ম্যাচে মাজিয়াকে পাঁচ গোল দিয়েছে। তবে কালকের ম্যাচটা আমাদের জিততেই হবে। নয়তো টুর্নামেন্টে সমস্যায় পড়ে যাব।’’

মোহনবাগান আবার বহু দিন বাদে এএফসি খেলছে। তাই ভাল ফল করার জন্য সঞ্জয়-ব্রিগেড মানসিক ভাবে তৈরি। বিশেষত গুয়াহাটিতে মাজিয়াকে বড় ব্যবধানে হারানোর পর আরও বেশি আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বাগান ফুটবলাররা। সনি কলকাতা ছাড়ার আগে বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আমাদের কাছে দু’টো টুর্নামেন্টের গুরুত্বই সমান। দু’ হাতে আমি দু’টো ট্রফি ধরতে চাই। আই লিগ, এএফসি কাপ’’ সনির এই ইচ্ছেই যেন গোটা টিমের মধ্যে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়েছে।

এক সিনিয়র ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘বাগান ড্রেসিংরুমের স্লোগান এখন, আই লিগ হোক কিংবা এএফসি কাপ, টপকাতে হবে সব বাধা, পেতে হবে সাফল্য।’’ তবে হংকংয়ের টিমের বিরুদ্ধে নামার আগে শিল্টন পালের চোট চিন্তায় ফেলে দিয়েছে সঞ্জয়কে। এ দিন প্র্যাকটিসের শেষের দিকে হাঁটুর পুরনো চোটের জায়গায় নতুন করে চোট পেয়েছেন বাগানের কিপার-অধিনায়ক। সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘ওর পুরনো চোটের জায়গাতে এ দিন নতুন করে লেগেছে। তবে আশা করি, বড় কোনও সমস্যা হবে না। অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে এসে সে রকম বড় কিছু চোট হলে সত্যিই সমস্যায় পড়ে যেতে হবে আমাদের।’’

জানা যাচ্ছে, হংকংয়ের যে মাঠে বুধবার খেলা, সেটা একটু ছোট। অসমানও। নানা জায়গায় গর্ত। যেটা সঞ্জয়ের চিন্তার দ্বিতীয় কারণ। ‘‘এমনি সবই ঠিক ছিল। কিন্তু মাঠটা অসমান। মাঠের মধ্যে কিছু গর্ত রয়েছে। আমরা ম্যাচ কমিশনারকে জানিয়েছি। তবে ছেলেদের এ সব নিয়ে মাথা ঘামাতে বারণ করেছি। ওদের ফোকাস কোনও কারণে নষ্ট হোক চাই না।’’

পুরো টিমই শুরুতে নামাবেন ঠিক করেছেন সঞ্জয়। তবে আই লিগের কথা মাথায় রেখে পরিস্থিতি বুঝে কিছু ফুটবলারকে আগেভাগে তুলে নিতেও পারেন বাগান কোচ। যাতে ফুটবলারদের চোট না লাগে। বা তাঁরা ক্লান্ত হয়ে না পড়েন। ফিরেই যে রবিবার আবার খালিদ জামিলের মুম্বই এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ রয়েছে। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে ঘরের মাঠে যে ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পেতেই হবে সনিদের।

বুধবারে

এএফসি কাপ— মোহনবাগান : সাউথ চায়না (ভারতীয় সময় বিকেল ৫-৩০)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mohunbagan football hongkong
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE