ক্ষুব্ধ: অনুশীলনে বুকেনিয়ার সঙ্গে মর্গ্যান। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আই লিগের ফিরতি ডার্বির ছয় দিন আগে অগ্নিগর্ভ ইস্টবেঙ্গল অন্দরমহল!
লাল-হলুদ কর্তাদের বিরুদ্ধে দল গঠনে হস্তক্ষেপ করার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন খোদ কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান!
সোমবার সকালে ইস্টবেঙ্গল মাঠে অনুশীলনের পর লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘আমার সাপোর্ট স্টাফের কেউ কেউ চাকরি হারানোর আতঙ্কে ভুগছে। কারণ, ওরা আমার কাছে অন্য কারও ঘনিষ্ঠ ফুটবলারকে খেলানোর সুপারিশ করছে না!’’
গুরুত্বপূর্ণ ডার্বির আগে হঠাৎ এই অভিযোগ কেন মর্গ্যানের? লাল-হলুদ অন্দরমহলের খবর, অনেক দিন ধরেই কোচের সঙ্গে ক্লাব কর্তাদের বিবাদ চলছে। কিন্তু তা বড় আকার নিয়েছে সম্প্রতি গোলকিপার লুইস ব্যারেটোর সইকে কেন্দ্র করে। গোয়ানিজ গোলকিপারকে বাদ দিয়েই আই লিগের দল গড়েছিলেন মর্গ্যান। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে তাঁকে অন্ধকারে রেখে হঠাৎই ব্যারেটোকে আই লিগের জন্য নথিভুক্ত করান কর্তারা। এখানেই শেষ নয়। শোনা যাচ্ছে, বেশ কয়েক জন ফুটবলারকে দলে ঢোকানোর জন্য সাপোর্ট স্টাফদের মাধ্যমে নাকি বার্তা দেওয়ার চেষ্টাও চলছিল কোচকে।
ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অবশ্য মর্গ্যানের অভিযোগ মানতে নারাজ। দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘মর্গ্যানের অভিযোগ ভিত্তিহীন। মনে হচ্ছে ওঁর কোথাও ভুল হচ্ছে। আমরা কখনও দল গঠনের ক্ষেত্রে কোচের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না।’’
লাল-হলুদ কোচের ক্ষোভ আরও বেড়েছে মাঠ সমস্যায় ডার্বির প্রস্তুতি পণ্ড হওয়ায়।
সোমবার সকালে মাঠে নেমে মর্গ্যান দেখেন বাংলার অনূর্ধ্ব-১৯ হকি দলের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ক্ষুব্ধ মর্গ্যান সঙ্গে সঙ্গেই ক্লাব তাঁবুতে ফিরে যান। কোনও মতে তাঁকে বুঝিয়েসুঝিয়ে মাঠে ফিরিয়ে আনেন ফুটবলাররা। কিন্তু মর্গ্যান সহকারী ওয়ারেন হ্যাকেট-কে অনুশীলনের দায়িত্ব দিয়ে নিজে ব্যস্ত ছিলেন ওয়েডসন আনসেলমে-কে ফিটনেস ট্রেনিং করাতে। অনুশীলনের পর ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘টিম ম্যানেজমেন্টের কারও ভুলের জন্যই হকির সঙ্গে মাঠ ভাগাভাগি করে অনুশীলন করতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু এ ভাবে চলতে পারে না।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘সামনেই আমাদের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। অথচ আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারছি না।’’
আজ, মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গলের অনূর্ধ্ব-১৮ দলের বিরুদ্ধে ফের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল রবিন সিংহ-দের। কিন্তু হকির ট্রায়ালের জন্য তাও বাতিল হয়ে গিয়েছে।
সোমবার সকালে মোহনবাগান মাঠেও অনূর্ধ্ব-১৬ বাংলা মহিলা হকি দলের ট্রায়াল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সবুজ-মেরুন কর্তাদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত কাস্টমস মাঠে সেই ট্রায়াল হয়। প্রশ্ন উঠছে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা কেন অনুশীলনের জন্য পুরো মাঠের ব্যবস্থা করতে পারলেন না? লাল-হলুদ শিবিরের অভিযোগ রাজ্য হকি সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধেই। অন্যতম শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘‘হকি সংস্থার নিজস্ব মাঠ আছে। সেখানে কেন ওরা ট্রায়াল নিচ্ছে না?’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আগে ফুটবল মরসুম ছিল ছয় মাসের। তার পর হকি শুরু হতো। এখন তো সারা বছরই ফুটবল হয়। এই কারণেই হকি সংস্থার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়েছিল, সকালে ফুটবল হবে। বিকেলে ওরা মাঠ ব্যবহার করবে। কিন্তু বাংলার ফুটবলকে ধ্বংস করার জন্যই হকি সংস্থা এখন তৎপর হয়ে উঠেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy