চলতি এশিয়া কাপকে যদি কেউ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সাল ভেবে থাকেন, তা হলে সেটা ভুল।
কারণটা সোজা। সামনের মাসে ভারতে যে রকম প্যানকেকের মতো ফ্ল্যাট উইকেটে বিশ্বকাপ হবে মনে হয়, তার ঠিক উল্টো চরিত্রের উইকেট মীরপুরে। যেখানে ক্রিকেটের ভরপুর বিনোদন পাওয়া যায়। ব্যাট-বলের এই সমানে সমানে লড়াইটা কিন্তু আমার দারুণ লাগছে।
মীরপুরের পিচে বল এত নড়ছে যে, ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষার সামনে ফেলছে ফাস্ট বোলাররা। এ রকম উইকেটেই তো বোঝা যায়, কোন ব্যাটসম্যানের কত দম। এ ধরনের উইকেটে স্কিল আর কৌশলের মিশেলে ব্যাটসম্যানকে সফল হতে হয়। তাই এখানে যে ব্যাটসম্যান ভাল করবে, বুঝবেন, সে জাত ব্যাটসম্যান।
যেমন বিরাট কোহলি। ভারত-পাক ম্যাচে ওর ব্যাটিংই বুঝিয়ে দিল, কেন ও সেরা। বিরাট আর যুবরাজের জন্যই ভারত অপ্রত্যাশিত অপমানের হাত থেকে বেঁচেছে। কম রানে গুটিয়ে গিয়েও পাকিস্তান কিন্তু ভারতকে বড় ঝাঁকুনি দিয়েছে। তা সত্ত্বেও বলব, ভারতই এশিয়া কাপে সেরা দল। যেমন ওদের ব্যালান্সড বোলিং অ্যাটাক, তেমনই ওদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ। ভারত অপ্রতিরোধ্য অবশ্য বলছি না। তবে ওদের হারানো মোটেই সোজা নয়।
নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখে বলছি, পাকিস্তানের অসাধারণ পেস বোলিং আমার দারুণ লেগেছে। শুরুতেই মহম্মদ আমের ভারতের উপর যে বোমাবাজি শুরু করেছিল, তা শুধু চরম পেস বোলিং স্কিলের নমুনা নয়, বিনোদনেও ঠাসা। শনিবার আমেরের প্রথম ওভারটাই ভারতকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। ধোনির ভাগ্য ভাল, সেই জায়গা থেকে কোহলি, যুবরাজ দলকে জিতিয়েছে। এ ধরনের উইকেটে ব্যাটসম্যানরা ১৬০ তোলার কথা ভেবে রাখলেও ক্রিজে গিয়ে বুঝতে পারে ১৩০-১৪০-এর বেশি তোলা বেশ কঠিন। এখানে পড়ে থেকে আঁটোসাঁটো ব্যাটিং ছাড়া সাফল্যের আর কোনও রাস্তা নেই।
এর পর ভারতে বিশ্বকাপে উইকেটের চরিত্র আমূল বদলে যাবে। দলগুলোকে কৌশলও বদলাতে হবে। তবে এশিয়া কাপের কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে যারা সফল হবে, তারা বিশ্বকাপে মানসিকতায় অনেক এগিয়ে থেকে নামবে।