Advertisement
E-Paper

টি-টোয়েন্টি ভেবে খেলেই ইতিহাস, বলছে নায়করা

প্রণব ধনওয়াড়ের হাজার রানের ইনিংসের পর স্কুল ক্রিকেটের ট্রেন্ড কি পাল্টে গেল? নব নালন্দা স্কুলের ইমন চৌধুরী নিশ্চিত নয়। মুম্বইয়ের প্রণবের হাজার রানের বিশ্বরেকর্ড সে শুনেছে, কিন্তু তার প্রভাব অদৃশ্য ভাবে নিজেদের খেলাতেও পড়েছে কি না বলতে পারছে না।

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:১৩
উচ্ছ্বাসের তিন মুখ। মঙ্গলবার নব নালন্দায়। -উৎপল সরকার

উচ্ছ্বাসের তিন মুখ। মঙ্গলবার নব নালন্দায়। -উৎপল সরকার

প্রণব ধনওয়াড়ের হাজার রানের ইনিংসের পর স্কুল ক্রিকেটের ট্রেন্ড কি পাল্টে গেল?

নব নালন্দা স্কুলের ইমন চৌধুরী নিশ্চিত নয়। মুম্বইয়ের প্রণবের হাজার রানের বিশ্বরেকর্ড সে শুনেছে, কিন্তু তার প্রভাব অদৃশ্য ভাবে নিজেদের খেলাতেও পড়েছে কি না বলতে পারছে না। কে সি গাঁধী স্কুলের প্রণব ধনওয়াড়ের মতো মোটেও সে হাজার রানের ইনিংস খেলেনি। কিন্তু সোমবার সিএবি মেয়র্স কাপে নব নালন্দা যে ৪৫ ওভারে অভাবনীয় ৮৪৪ তুলেছে, তাতে তার একটা ঝোড়ো সেঞ্চুরি ছিল। ‘‘আমরা আটশো করব ভেবে নামিনি। ওপেনাররা ভাল খেলল দেখলাম। তার পর ঠিক করলাম, আরও মেরে স্কোরটাকে ভাল জায়গায় নিয়ে যাব,’’ স্কুল চত্বরে এ দিন দাঁড়িয়ে বলছিল ইমন। সোমবার ৭৭ বলে ১৭৯ নট আউট করা ইমন।

বন্ধুর কথা শুনে এ বার এগিয়ে এল দীপাংশু সরকার। মানে, আগের দিনের ম্যাচে সবচেয়ে নারকীয় ইনিংস যার। ৫৮ বলে ১৭৬ নট আউট! ‘‘ধনওয়াড়ে এফেক্ট কি না জানি না। কিন্তু অবশ্যই টি-টোয়েন্টির এফেক্ট। পঁয়তাল্লিশ ওভারের ম্যাচ হতে পারে। কিন্তু আমরা টি-টোয়েন্টি ভেবে খেলেছি,’’ বলে দীপাংশু সঙ্গে জুড়ে দিল, ‘‘আর ওদের যা বোলিং! পুরো নার্ভ হারিয়ে ফেলল। মারব না তো কী করব?’’

ইতিহাসের পরের দিন। মঙ্গলবারের নব নালন্দা স্কুল। যেখানে হাজির হয়ে দেখা গেল, স্কুলের আটশো রানের তিন নেপথ্য নায়ক এখনও বুঝে উঠতে পারছে না তারা কী ঘটিয়ে ফেলেছে। শ্রেয়স বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ব্র্যাড পিট বলতে পাগল। ইমন চৌধুরী— সচিন তেন্ডুলকরকে যে ঈশ্বর মানে। এবং দীপাংশু সরকার। সহজে, লিওনেল মেসির অন্ধ ভক্ত। গত কাল নর্দার্ন পার্কের মাঠে জ্ঞানমন্দির বিদ্যাপীঠের বিরুদ্ধে যে তিনের ব্যাটিং ৪৫ ওভারের ম্যাচে নব নালন্দাকে পৌঁছে দিয়েছে রেকর্ড ৮৪৪-২ স্কোরে। ম্যাচ জিতিয়েছে ৮১২ রানে! কারণ প্রতিপক্ষ স্কুল তো ১১.৩ ওভারে ৩২ তুলতে না তুলতেই শেষ!

এক-এক জন আবার ম্যাচে এক এক রকম লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিল। ১৫টা ছয় মারা দীপাংশু যেমন ঠিক করে রেখেছিল, রোহিত শর্মার আদলে ইনিংসটা খেলবে। বল যেখানেই পড়ুক, দেখতে হবে সেটা যেন যায় বাউন্ডারিতে। ‘‘রোহিত শর্মার মতো আমিও হার্ড হিটিং‌য়ে বিশ্বাসী,’’ বলছিল দীপাংশু। পাশ থেকে ৭৮ বলে ১৯৩ করা স্কুল অধিনায়ক শ্রেয়সের সংযোজন, ‘‘আর আমার ওপেনার হিসেবে দায়িত্ব ছিল টিমকে ভাল একটা শুরু দেওয়া। দু’টো ওভার যেতেই বুঝলাম এদের বোলিং আহামরি নয়। চালাতে শুরু করলাম।’’

আসলে নব নালন্দার আরও সুবিধে হয়ে যায়, এরা তিন জনই বাংলার জুনিয়র পর্যায়ের ক্রিকেটার হওয়ায়। দু’জন অনূর্ধ্ব-১৪, এক জন অনূর্ধ্ব-১৫। ইমন অর্ধেক দিন তো স্কুলেও যেতে পারে না ক্রিকেটের চাপে। বলছিল, ‘‘স্কুল পাশে না থাকলে এত সহজে খেলতে পারতাম না।’’ শ্রেয়স আবার সময় পেলেই দৌড়োয় ঋদ্ধিমান সাহার কাছে। ঋদ্ধিমানের মতো সে-ও উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ‘‘ঋদ্ধিদা আমাকে বলেছে কী করে আরও উন্নতি করতে হবে। কিপিংয়ের নানা টেকনিকও দেখিয়ে দিয়েছে।’’ স্কুলের কোচ প্রবাল দত্ত আবার আক্ষেপ করছেন তাঁর দু’জন ব্যাটসম্যানের ডাবল সেঞ্চুরি মিস হওয়ার জন্য। ৩৮ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে পেরেছিল নব নালন্দা। তুলেছিল ৬১৭। বাকি সাত ওভারের রান পেনাল্টি হিসেবে যোগ করা হয়। ‘‘পুরো ওভার খেললে দু’জন ডাবল সেঞ্চুরি করত। তবে ব্যাটিং নিয়ে আমি খুশি।’’

টিম আটশো তুললে কে আর কবে অখুশি হয়!

naba nalanda school cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy