Advertisement
E-Paper

আক্রমণে ঝড় তুলেই ফের বাজিমাত করতে চান লো

১৪ বছর আগে জার্মানির জাতীয় দলে লো ছিলেন কিংবদন্তি য়ুর্গেন ক্লিন্সমানের সহকারী। ঘরের মাঠে ২০০৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হারের পরেই দায়িত্ব ছাড়েন ক্লিন্সমান।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০৪:৫০
 লক্ষ্য: টানা দু’বার বিশ্বকাপ জিততে মরিয়া লো। ছবি:এএফপি

 লক্ষ্য: টানা দু’বার বিশ্বকাপ জিততে মরিয়া লো। ছবি:এএফপি

জার্মানির সিনিয়র দলে তিনি কখনও খেলার সুযোগ পাননি। অথচ সেই ওয়াকিম লো-র কোচিংয়েই বিশ্বফুটবলে শাসক জার্মানি। তাঁর হাত ধরেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে জার্মানির ফুটবলের সংস্কৃতিতে।

১৪ বছর আগে জার্মানির জাতীয় দলে লো ছিলেন কিংবদন্তি য়ুর্গেন ক্লিন্সমানের সহকারী। ঘরের মাঠে ২০০৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হারের পরেই দায়িত্ব ছাড়েন ক্লিন্সমান। সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে কোনও ম্যাচ না খেলা লো-ই তার পর থেকে প্রধান কোচ।

জার্মান ফুটবল সংস্থার কর্তাদের এই সিদ্ধান্ত অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু ১৯৯৮ থেকে ২০০৬— টানা আট বছরের ব্যর্থতায় নড়েচড়ে বসেছিলেন জার্মানির ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা। তাঁরা চেয়েছিলেন এমন কাউকে দায়িত্ব দিতে, যাঁর কোচিংয়ে স্বর্ণযুগ ফিরবে। তাঁদের কাছে লো-ই ছিলেন সব দিক থেকে আদর্শ। দায়িত্ব নেওয়ার পরেই লো জানিয়েছিলেন, ক্লিন্সমানের দর্শন তিনি বদলাবেন না। আক্রমণাত্মক ফুটবলই হবে তাঁর অস্ত্র।

জার্মানি মানেই ছিল যান্ত্রিক ফুটবল। কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মতো সব কিছুই যেন পূর্ব পরিকল্পিত। বিপক্ষের গোলে শট নেওয়ার আগে কতগুলো পাস খেলতে হবে। কখন গতি বাড়াতে হবে, মাঠে নামার আগেই ঠিক করা থাকত। শুধুই আড়াআড়ি পাসের খেলা। সামনে পাস দিয়ে গতি বাড়িয়ে আক্রমণে ওঠার ফর্মুলাটা যেন জানতেনই না জার্মানির ফুটবলাররা। লো-র কোচিংয়েই টোনি খোস, থোমাস মুলার-রা দেখিয়েছেন, তিকিতাকা তাঁরাও খেলতে পারেন। ডিফেন্ডার ফিলিপ লামকে মাঝমাঠে খেলিয়ে চমকে দিয়েছিলেন লো। বিশ্বকাপের পরে লাম অবসর নেওয়ার পরে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। ব্যতিক্রম লো। লামের শূন্যস্থান তিনি পূরণ করেছেন টোনি খোসকে দিয়ে।

জার্মানির কোচ হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই সুইডেনের বিরুদ্ধে ৩-০ জিতেছিলেন লো। সেই ফিফা ফ্রেন্ডলিতেই বদলে যাওয়া জার্মানিকে প্রথম দেখে ফুটবল বিশ্ব। যদিও ২০০৮ ইউরো কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে। সেই ম্যাচেই ফুটবলপ্রেমীরা ভবিষ্যতের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দেখেছিলেন। ছয় বছরের মধ্যেই ব্রাজিলে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি।

গত এক দশকে একের পর এক প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার যেমন তুলে এনেছেন লো, তেমনই দলের স্বার্থে কড়া সিদ্ধান্ত নিতেও দেরি করেননি। ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির জয়ের নায়ক মারিয়ো গোৎজে-কে এ বার দলের রাখেননি। একই ভাবে গোলরক্ষক ম্যান্যুয়েল নয়‌্যারকে দলে রাখা নিয়ে সমালোচনাতেও কান দেননি। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে যাওয়ায় প্রায় দশ মাস মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন জার্মানির অধিনায়ক। লো কিন্তু তার উপর থেকে আস্থা হারাননি। নয়্যার শুধু গোলরক্ষক নন, জার্মানির আক্রমণের প্রধান ভরসাও যে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে ৪-২-৩-১ ছকে দলকে খেলান লো। যে পরিকল্পনায় গোলরক্ষক হয়েও নয়্যার ছিলেন সুইপারের ভূমিকায়! পেনাল্টি বক্সের বাইরে এসে বিপক্ষের পা থেকে তাঁর বল কেড়ে নেওয়া চমকে দিয়েছিল ফুটবলপ্রেমীদের। জার্মানির খেলার সঙ্গে অনেকেই লো-র জীবনের মিল খুঁজে পেয়েছেন।

শনিবার রাতে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচেও এই পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন লো। কিন্তু ১-২ হারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। যদিও ম্যাচের ফল নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন লো। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে হারের পরে লো বলেছেন, ‘‘জিততে পারিনি বলে আমি একেবারেই হতাশ নই। আমি হতাশ যে ভাবে আমরা হেরেছি, তা নিয়ে।’’ কেন ব্যর্থ হয়েছে দল, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন লো। জার্মানির কোচের কথায়, ‘‘অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচটা আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু বিরতির আগে ১৫-২০ মিনিট ও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আমরা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমরাই অস্ট্রিয়াকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছিলাম।’’

FIFA World Cup 2018 Germany Game plan Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy