Advertisement
E-Paper

‘অপহৃত’ ম্যানেজারকে গুলি চালিয়ে উদ্ধার ধোনি-বিরাটদের

পুরোদস্তুর আর্মির পোশাকে আবৃত হয়ে এগোচ্ছেন যে ‘কম্যান্ডার ইন চিফ,’ তাঁকে হুবহু বিরাট কোহলির মতো দেখতে! হাতের এসএলআরের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অস্ত্রের এতটুকু তফাত নেই, হেলমেট থেকে গ্লাভস সব কিছুর সঙ্গেই তো অদ্ভুত সাদৃশ্য। দশ জনের টিম নিয়ে এগোচ্ছেন কম্যান্ডার। চলছে গুলি।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৩
অলঙ্করণ বিমল দাস।

অলঙ্করণ বিমল দাস।

পুরোদস্তুর আর্মির পোশাকে আবৃত হয়ে এগোচ্ছেন যে ‘কম্যান্ডার ইন চিফ,’ তাঁকে হুবহু বিরাট কোহলির মতো দেখতে! হাতের এসএলআরের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অস্ত্রের এতটুকু তফাত নেই, হেলমেট থেকে গ্লাভস সব কিছুর সঙ্গেই তো অদ্ভুত সাদৃশ্য। দশ জনের টিম নিয়ে এগোচ্ছেন কম্যান্ডার। চলছে গুলি।

একটু দূরে আরও একটা টিম, ওরাও দারুণ সতর্ক। ওরাও আর্মির পোশাকে এবং হাতে এসএলআর। ওদেরও এক জন ‘কম্যান্ডার ইন চিফ’ আছে। ওদের টার্গেট করেও কোথা থেকে যেন গুলি ছুটে আসছে। জবাবও যাচ্ছে পাল্টা।

আর হ্যাঁ, দ্বিতীয় টিমটার কম্যান্ডারকে আবার একদম মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো দেখতে!

কী মনে হচ্ছে? অস্ট্রেলিয়ায় ধোনি-কোহলির যমজ আমদানি? তাও আবার সেনাবাহিনীতে?

নাহ্, ওঁরা সত্যিই ধোনি-কোহলি!

দুই ‘কম্যান্ডার ইন চিফে’র টিমের বাকিরাও খুবই চেনা মুখ। কারও নাম উমেশ যাদব, কারও মহম্মদ শামি। কাউকে আবার ক্রিকেটবিশ্ব জানে রোহিত শর্মা নামে। কিন্তু শনিবার ডনের দেশে ক্রিকেট-পোশাক ছেড়ে সবাইকে নামতে হল আর্মির পোশাকে, যাবতীয় অস্ত্রসস্ত্র সমেত!

কী-ই বা করবেন? ভারতীয় টিমের ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে-কে তো জঙ্গিরা তুলে নিয়ে গেল!

এমন রোমহর্ষক বিবরণ সত্যি হলে সেটা গত মাসেই ঘটে যাওয়া সিডনি কাফেতে জঙ্গি-হানার চেয়েও মারাত্মক দাঁড়াত নিঃসন্দেহে। এখানেও বিবরণ কার্যত সত্যি, শুধু প্রেক্ষাপট বাদে। সত্যিকারের গুলির বদলে এখানে ব্যবহৃত হল রাবার বুলেট। আর যুদ্ধক্ষেত্রর মতো সম্পূর্ণ দেখতে হলেও সেটা আদতে নয়। ‘অকুস্থল’ সিডনি থেকে সত্তর কিলোমিটার দূরে ক্যামডেনের এক অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস সেন্টার। যেখানে পুরোদস্তুর সেনাবাহিনীর কায়দায় ভারতীয় টিমের ম্যানেজারকে উদ্ধার করে আনলেন কোহলি-ধোনি। ঝাড়া তিন ঘণ্টা গুলিবর্ষণের পর!

ভারতীয় টিমের শনিবার প্র্যাকটিস ছিল না। বরং ধোনি-কোহলিরা এ দিন সকালেই চলে যান ক্যামডেনে। সাধারণত এমন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস সেন্টারে পেইন্টবল ব্যবহৃত হয় আসল গুলির জায়গায়। কিন্তু এখানে ব্যবহার করা হল রাবার বুলেট। যা গায়ে প্রচণ্ড গতিতে এসে লাগলে, ভালই ব্যথা লাগে। সিডনিতে ফোন করে শোনা গেল, যুদ্ধ শেষে ভারতীয় টিমের বেশ কয়েক জন ‘যোদ্ধা’ আহত হয়েছেন। কোহলি-বাঙ্গারের যেমন গায়ে জায়গায়-জায়গায় কালশিটে পড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই সেন্টারে ঢোকার সময়ই ভারতীয় টিমের সবার হাতেই নিয়মাবলী ধরিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে লেখা: কেউ যদি যথাযথ গার্ড, অস্ত্র না নিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত আহত বা নিহত হয়, তার দায়িত্ব ওই স্পোর্টস সেন্টারের না!

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

যুদ্ধের চিত্রনাট্যেও বাস্তবের মশলা ঠিক ততটাই রাখা ছিল। গল্পটা হল, ভারতীয় টিমের ম্যানেজারকে কিডন্যাপ করেছে একদল ‘জঙ্গি’। আদতে যাঁরা ওই স্পোর্টস সেন্টারের লোক। যাঁদের হাতেও এসএলআর থাকবে, যাঁরাও গুলি চালাবেন। আর ভারতীয় টিমকে ভাগ করা হবে দু’টো গ্রুপে। একটার নাম ইন্ডিয়ান আর্মি গ্রিন। যার কম্যান্ডার ইন চিফ কোহলি। যে টিমে থাকবেন রোহিত-রাহানের মতো ব্যাটসম্যানরা। আর অন্য গ্রুপটার কম্যান্ডার এমএসডি। যে টিমের নাম ইন্ডিয়ান আর্মি ইয়েলো। ধোনির দশ জনের টিমে থাকবেন শুধু বোলাররা। সতেরো জনের স্কোয়াডকে দশ-দশে ভাঙতে বাঙ্গার সহ সাপোর্ট স্টাফ থেকে আর দু’জনকে নেওয়া হয়। পিৎজা, বার্গারের মতো শুকনো খাবার দিয়ে দেওয়া হয় কোহলিদের। ওটাই লাঞ্চ। ও ভাবেই যুদ্ধ করে উদ্ধার করতে হবে ম্যানেজারকে। কৃত্রিম টিলা, জঙ্গল, নদী পেরিয়ে ঢুকতে হবে ‘জঙ্গি’দের ডেরায়। চালাতে হবে এলোপাথাড়ি গুলি!

আর চললও।

পরে বিশ্বরূপ সিডনি থেকে ফোনে বললেন, “এতটাই মারাত্মক ব্যাপার, একটা সময় তো মনে হচ্ছিল এটা শেষ হলে বাঁচি।” শোনা গেল, পুরোটাই করা হয়েছে ধোনি-কোহলিদের আগ্রাসনকে বাড়ানোর জন্য। টিমটাকে মানসিক ভাবে আরও পোক্ত করার জন্য। চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে এখনও বেঁচে আছে ভারত। পরের দু’টো ম্যাচ জিতে গেলে ফাইনাল নিশ্চিত। যে যুদ্ধের একটা আগামী সোমবার।

এসএলআরের গর্জন এখন এমএসডির দলের বাইশ গজে বেশি প্রয়োজন!

Virat Kohli MS Dhoni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy