আই লিগে হঠাৎ-ই কালো ঘোড়া হয়ে ওঠা র্যান্টি মার্টিন্সের রাংদাজিদ ফুটবল ক্লাবকে কালো তালিকায় ফেলতে চলেছে ফেডারেশন। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে তাদের পরের মরসুমে খেলা কঠিন।
এএফসি-র ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের কাগজপত্র জমা না দেওয়ায় বাতিল হতে চলেছে মেঘালয়ের ক্লাবটি। ফলে পরের মরসুমে আই লিগে খেলার সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে তাদের। যেমন হয়েছিল গত বছর এয়ার ইন্ডিয়া এবং ওএনজিসি-র ক্ষেত্রে।
ফেডারেশনের লাইসেন্সিং কমিটি আই লিগে খেলা বারোটি ক্লাবের কাগজপত্র নিয়ে পরীক্ষার জন্য গোয়া, মুম্বই, কলকাতা, পুণে গিয়েছিল। গিয়েছিল শিলংয়েও। কিন্তু শুধু লাজংয়ের পরিকাঠামো দেখেই চলে এসেছেন সদস্যরা। দলের এক সদস্য পুষ্পার্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “আমাদের রাংদাজিদে যেতে বলা হয়নি। কোনও নিদের্শও আসেনি।” আর আই লিগের সি ই ও সুনন্দ ধর বললেন, “১২ মার্চ ছিল লাইসেন্সিং কাগজপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। যাতে পিছনের দরজা দিয়ে কোনও কাগজ কেউ জমা না দিতে পারে সে জন্য এ বার অন লাইনে সব পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাংদাজিদ কিছুই জমা দেয়নি।”
ফেডারেশন সূত্রের খবর, রাংদাজিদ কর্তারা জানিয়েছেন কিছু সমস্যা ছিল। সুনন্দ বললেন, “নিয়মমতো ওদের পরের বার আই লিগ থেকে বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে লাইসেন্সিং কমিটি।” কমিটির সভা বসতে পারে এপ্রিলের শেষে বা মে-র প্রথম সপ্তাহে। জানা গিয়েছে, রাংদাজিদকে যদি লাইসেন্সিং কমিটি কাগজ জমা দেওয়ার সুযোগ দেয়, তা হলে অবনমনে চলে যাওয়া ক্লাব আদালতে চলে যেতে পারে। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
এ বারের আই লিগের লাস্ট বয় অবস্থায় বেঙ্গালুরু, মোহনবাগান, ইউনাইটেড, সালগাওকরের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে শিলংয়ের দলটি এখন উঠে এসেছে আটে। মোহনবাগানেরও আগে রয়েছেন র্যান্টিরা। তাঁদের বিদেশি স্পনসরও আছে। নিজস্ব স্টেডিয়াম। ভাল পরিকাঠামো। তাতেও কেন শিলংয়ের ক্লাবটি লাইসেন্সিংয়ের কাগজ জমা দেয়নি তা নিয়ে ধন্ধে সবাই। রাংদাজিদের সচিব কার্সিং কুর্বাকে ফোনে ধরা হলে যা বললেন তা নিয়েও ধোঁয়াশা। “লাইসেন্সিং ব্যাপারটা আমি দেখি না। যারা দেখে তাদের সঙ্গে কথা বলুন।” যারা দায়িত্বে রয়েছে তারা আপনাকে কিছু জানায়নি? আপনি তো ক্লাবের সচিব? “জানি না। ওদের সঙ্গে কথা বলুন। আমি ব্যস্ত,” বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
রাংদাজিদ নেমে গেলেও সুভাষ ভৌমিক, সুব্রত ভট্টাচার্য বা সঞ্জয় সেনদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। অবনমনে থাকা তিন দলের কোচকেই বাঁচার জন্য লড়তে হবে। কারণ অবনমনের নিয়ম বদলাচ্ছে না। রাংদাজিদ বাতিল হলেও একটা দল নামছেই। সুনন্দবাবু বললেন, “রাংদাজিদের বাতিল হওয়ার সঙ্গে অবনমনের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই নিয়ম বদলাচ্ছে না।”
রাংদাজিদ বাতিল হচ্ছে ধরে নিয়েই অবশ্য এপ্রিলের শেষে নতুন ফ্রাঞ্চাইজি নেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দিতে চলেছে ফেডারেশন। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কোচির জন্য ফ্রাঞ্চাইজি চাওয়া হবে। কোচি থেকে আই লিগে পরের মরসুমে খেলতে পারে ঈগল এফ সি। গত বছরই তারা কাগজপত্র জমা দিয়েছিল। কিন্তু আর্থিক সমস্যা থাকায় পরে পিছিয়ে যায়। এ বছরের আই লিগে একমাত্র ফ্রাঞ্চাইজি টিম ছিল বেঙ্গালুরু এফ সি। যারা এই মহূর্তে লিগ শীর্ষে রয়েছে। খেতাবের লড়াইয়ে রয়েছে এক নম্বরে। তাদের পরিকাঠামো এবং বিপণন এই মূহূর্তে দেশের সেরা। বেঙ্গালুরুর এলিট সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা স্টেডিয়াম ভর্তি করে ফেলছে টিমের সমর্থনে। ফেডারেশন কর্তারা মনে করছেন, ক্লাব বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে কর্পোরেট কোম্পানির টিম খেললে তাতে লাভবান হবে ফুটবল। সে জন্যই ফুটবল আই পি এলের ঢঙে শুরু হতে যাওয়া সুপার লিগে যে কোম্পানিরা টিম পাবে না তাদের আই লিগে ফ্রাঞ্চাইজি টিম নেওয়ার জন্য বলা হবে। এরই মধ্যে স্পোর্টিং ক্লুব, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডানকে জরিমানা করল ফেডারেশন। গোয়ায় স্পোর্টিং-মোহনবাগান ম্যাচে মাঠে বোতল পড়েছিল। আর ইস্ট-মহমেডান ম্যাচে দু’দলই দেরিতে মাঠে এসেছিল। কিন্তু এ সব জরিমানার মধ্যেও ফুটবল মহল তোলপাড় রাংদাজিদের বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy