বায়ার্ন মিউনিখ আর জার্মানির কোচ হিসেবে বিশেষ মিল নেই পেপ গুয়ার্দিওলা আর জোয়াকিম লোর মধ্যে। একটা ব্যাপার ছাড়া— তাঁরা দু’জনেই ফিলিপ লামের প্রতি অন্ধবিশ্বাস রেখে চলেন। তিরিশ বছরের মিডফিল্ডার লামের নেতৃত্বেই গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ফিফা বিশ্ব একাদশের অন্যতম সদস্য জার্মান অধিনায়ক ক্লাব স্তরে সব ট্রফি জিতে ফেললেও এখন পর্যন্ত দেশকে একটা বিশ্বকাপ এনে দিতে পারেননি। ফিফা-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ থেকে বায়ার্ন, সব কিছু নিয়ে কথা বললেন ফিলিপ লাম...।
প্রশ্ন: গত বছর বায়ার্ন প্রায় সব ট্রফি জিতেছে। এই টিমের শক্তির রহস্যটা কী?
লাম: পুরো স্কোয়াডই আমাদের শক্তি। টিম হিসেবে আমরা দারুণ খেলি। দারুণ ফুটবলার বা ভাল কোচিং স্টাফের চেয়েও জরুরি হল পিচে টিম হিসেবে খেলা। গত বছর আমরা সেটা প্রমাণ করে দিয়েছি।
প্র: আপনি জার্মানি আর বায়ার্ন দু’দলেরই অধিনায়ক। বায়ার্নের জয়ের মানসিকতাটা বিশ্বকাপে জার্মানি টিমে আমদানি করা সম্ভব?
লাম: নিশ্চয়ই সম্ভব। জার্মানি দলে বায়ার্নের কয়েক জন আছে। যদিও তার মানে এই নয় যে, এই কারণেই আমরা ট্রফি জিতব! অনেকটা রাস্তা হেঁটে বায়ার্ন এই জায়গায় পৌঁছেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চার বছর তিনটে ফাইনাল খেলে সবে গত বছর ট্রফি জিতলাম। ট্রফি জয়ের রাস্তাটা খুব লম্বা আর কঠিন।
প্র: ব্রাজিলে আপনাদের সামনে ঘানার কেভিন-প্রিন্স বোয়াতেং আর পর্তুগালের রোনাল্ডো। যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচে পুরনো কোচ য়ুর্গেন ক্লিন্সম্যানের সঙ্গে দেখা হবে। এর মধ্যে কোন ম্যাচটার দিকে বেশি করে তাকিয়ে আছেন?
লাম: তিনটে ম্যাচের দিকেই। প্রথম ম্যাচটাই পর্তুগালের বিরুদ্ধে। ওরা দারুণ দল। প্লেয়ারদের ব্যক্তিগত প্রতিভাও দারুণ। টিম হিসেবে এখন অনেক উন্নত। প্রথম থেকেই সতর্ক না থাকলে খুব তাড়াতাড়ি ওরা আমাদের খুব চাপে ফেলে দিতে পারে। ঘানা আর যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্লেয়ার আবার বুন্দেশলিগায় খেলে। গ্রুপটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু জার্মানিকে পরের রাউন্ডে উঠতেই হবে!
প্র: ২০০২-এ বিশ্বকাপ রানার্স, ২০০৬ আর ২০১০-এ তৃতীয়। এ বার কি জার্মানির সময়?
লাম: আমার তো সব সময় সেটা মনে হয়! কিন্তু বাকি দেশগুলোও তো খেতাবজয়ের স্বপ্ন নিয়ে ব্রাজিল যাবে। খেতাব জিততে আমাদের টিম তৈরি, কিন্তু কাজটা কঠিন। আমাদের তরুণ টিমে প্রচুর প্রতিভা আছে। যদি টিম হিসেবে খেলতে পারি, তা হলে সেটা আমাদের জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। তবে সেটাই যে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য যথেষ্ট, সেই গ্যারান্টি তো নেই।
প্র: হালফিলে কয়েকটা টুর্নামেন্টে জার্মানি জিততে পারেনি কেন? টিমে কীসের অভাব রয়েছে?
লাম: হয়তো আমরা জেতার জন্য তৈরি ছিলাম না। দেশের মাঠে ২০০৬ বিশ্বকাপের কথা ভাবলে মনে হয়, জয়ের কাছাকাছি চলে এলেও কেউ ভাবতে পারেনি আমরা খুব দূর যেতে পারব। ২০১০ বিশ্বকাপের আগে কিছু প্লেয়ার সরে দাঁড়িয়েছিল। সে বার খুব তরুণ একটা দল তাদের প্রথম বড় টুর্নামেন্ট খেলতে নেমেছিল। তা-ও শেষ চারে উঠে স্পেনের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। এই হারগুলোর পরে আমাদের টিম অনেক বেশি পরিণত।
প্র: অনেক বিশেষজ্ঞ বিশ্বকাপে জার্মানিকেই ফেভারিট ধরছেন। কোন টিমগুলোকে আপনি বড় চ্যালেঞ্জার হিসেবে দেখছেন?
লাম: আমাদের বিশ্বকাপ ইতিহাস দেখুন। ফেভারিট হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি? তবে অন্য ফেভারিট বাছতে বললে স্পেন আছে। আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রাজিলও ফেভারিট। আর আর্জেন্তিনা। ইউরোপীয় দেশের মধ্যে পর্তুগাল, ইতালি আর নেদারল্যান্ডস ফাইনালে যেতে পারে।
প্র: ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্পেশ্যাল কেন?
লাম: আমার কাছে স্পেশ্যাল কারণ অন্য একটা মহাদেশে খেলতে যাব। দেশের মাটিতে একটা বিশ্বকাপ খেলেছি। তার পর দক্ষিণ আফ্রিকা। এ বার দক্ষিণ আমেরিকায় খেলতে পেরে দারুণ লাগছে। ওদের সমর্থকরা ফুটবল-পাগল। পুরো দেশটাই ফুটবল ভালবাসে। সত্যি, বিশ্বকাপ শুরুর জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না!
প্র: ১৩ জুলাই আপনি কী করবেন?
লাম: (হাসি) আশা করছি ফুটবল খেলব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy