আই লিগের প্রথম পর্ব প্রায় শেষ হওয়ার মুখে। বৃহস্পতিবার যখন এই কলম লিখছি, তখন লিগ টেবলের প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বেঙ্গালুরু, ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। কিন্তু কোন দল সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে, বলা মুশকিল। আসলে এত আগে থেকে আই লিগ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়।
তবে মোহনবাগান আর বেঙ্গালুরুর চ্যালেঞ্জটা বেশ কঠিন। কারণ আই লিগের পাশাপাশি তাদের এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। এবং তার জন্য বাইরে বিভিন্ন দেশেও যেতে হচ্ছে। ফলে তুলনামূলক ভাবে একটু বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ছে ফুটবলাররা। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, ইস্টবেঙ্গল হয়তো কিছুটা হলেও সুবিধে পাচ্ছে। কারণ এ বছর ওদের এএফসি কাপ খেলতে হচ্ছে না।
দু’টি টুর্নামেন্ট এক সঙ্গে চললে, সাধারণত ফুটবলারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো উচিত। ফুটবলাররা যাতে ক্লান্ত হয়ে না পড়ে এবং উজ্জীবিত থাকে, তার খেয়াল রাখা কোচেরই কাজ। এ রকম পরিস্থিতিতে একই টিম ধরে রাখাটা কখনওই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বরং ম্যাচের গুরুত্ব অনুযায়ী রিজার্ভ বেঞ্চের প্লেয়ারদেরও খেলানো উচিত। এ ক্ষেত্রে কোচের অভিজ্ঞতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই ক্রীড়াসূচিও বড় ভূমিকা নেয়। মোহনবাগানের কথাই ধরা যাক, টাম্পাইন রোভার্সের বিরুদ্ধে জেতার পর এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচ খেলতে সনি-কাতসুমিদের যেতে হয়েছিল চিন। মাঝে আই লিগেরও ম্যাচ খেলতে হয়েছে। তবে এটা নিয়ে ওদের কোচের অনর্থক রাগ দেখানোটা কোনও সমাধান ছিল না। কারণ আই লিগ এবং এএফসি কাপের সূচি অনেক আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে দুম করে সূচি পরিবর্তন করাটাও সমস্যার ছিল। দোষারোপ করার বদলে নিজেদের সূচিটা মাথায় রাখা উচিত ছিল সবার আগে।
ক্লাব-কর্তাদেরও কিন্ত এ ক্ষেত্রে বড় দায়িত্ব থেকে যায়। মনে রাখা উচিত ছিল যে মোহনবাগানকে এএফসি টুর্নামেন্ট খেলতে হবে এ বার। অনেক দিন বাদে এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা। সুতরাং মোহনবাগানের উপর নির্ভর করবে, তারা কী ভাবে রোটেশন করে ফুটবলারদের খেলাবে। পাশাপাশি এএফসি-র জন্য বাইরে খেলতে যাওয়ার সূচিটাও মাথায় রাখতে হবে।
একই ব্যাপার প্রযোজ্য বেঙ্গালুরুর ক্ষেত্রেও। কিন্তু ওরা যেহেতু শেষ বার এএফসি কাপে খেলেছে, তাই একসঙ্গে দু’টি টুর্নামেন্ট সামলাতে সমস্যা হচ্ছে না। বেঙ্গালুরু টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে ফুটবলার, প্রত্যেকেই সুন্দর ভাবে আই লিগ আর এএফসি কাপের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখছে।
আমি বিশ্বাস করি না, দু’টি টুর্নামেন্ট একসঙ্গে চললে ফুটবলার বা কোচ যে-কোনও একটিকে বেশি গুরুত্ব দেন। হয়তো কোনও একটিকে সামান্য এগিয়ে রাখতে পারেন। তবে অনেক সময় বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে কিছু জিনিস মানিয়ে নিতে হয় বা কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
শনিবার নিজেদের ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরু এফসি মুখোমুখি হবে মোহনবাগানের। যে দু’টি টিম এ বছর আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রধান দাবিদার। মোহনবাগানের আক্রমণভাগ যতটা কার্য়করী ভূমিকা নিচ্ছে, সে তুলনায় রক্ষণ কিন্তু বেশ পিছিয়ে। রীতিমতো নড়বড় করছে। এই পরিস্থিতিতে বেঙ্গালুরুর মতো টিম, যাদের ফরোয়ার্ড লাইন বেশ শক্তিশালী, তাদের থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়াটা সহজ ব্যাপার হবে না।
তবে গত বার আই লিগে মোহনবাগান-বেঙ্গালুরু শেষ ম্যাচটি রীতিমতো ধামাকাদার ছিল। শনিবার কিন্তু আরও একটি বড় ধামাকা দেখার অপেক্ষায় থাকব আমি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy