Advertisement
E-Paper

গেইলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাতে পছন্দ করি, বলে দিলেন অশ্বিন

ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি টিমের প্র্যাকটিসের দিন মিডিয়ার ধারকাছ মাড়ান না। ম্যাচোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন করেন ঠিকই। কিন্তু প্রাক-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সও মাঝেমধ্যে এড়িয়ে যান। প্রচারমাধ্যমের কাছে পাঠান দলের অন্য কোনও ক্রিকেটারকে। বৃহস্পতিবারের ওয়াকায় তেমনই একটা দিন ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৫ ০২:২৯
অশ্বিনের সাংবাদিক সম্মেলন। বৃহস্পতিবার পারথে। ছবি: এএফপি।

অশ্বিনের সাংবাদিক সম্মেলন। বৃহস্পতিবার পারথে। ছবি: এএফপি।

ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি টিমের প্র্যাকটিসের দিন মিডিয়ার ধারকাছ মাড়ান না। ম্যাচোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন করেন ঠিকই। কিন্তু প্রাক-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সও মাঝেমধ্যে এড়িয়ে যান। প্রচারমাধ্যমের কাছে পাঠান দলের অন্য কোনও ক্রিকেটারকে। বৃহস্পতিবারের ওয়াকায় তেমনই একটা দিন ছিল।

শুক্রবার পারথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ম্যাচের আগের দিনের বাধ্যতামূলক সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় দলের পক্ষে অধিনায়ক ধোনি তো দূরের কথা, সহ-অধিনায়ক বিরাট কোহলিরও দেখা পাওয়া যায়নি। পরিবর্তে এসেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতের এক নম্বর স্পিনারের একটা মন্তব্য হঠাত্‌-ই এই ম্যাচের পরিপ্রেক্ষিতে দারুণ তাত্‌পর্যের হয়ে উঠল। মিডিয়া থেকে বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন উঠে গেল, তা হলে কি কাল নতুন বল হাতে ভারতীয় অফ স্পিনার অশ্বিনকে আক্রমণ হানতে দেখা যাবে?

কারণ, অশ্বিন ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে একঝাঁক সাংবাদিককে বলে দিয়েছেন, “গেইলের মতো অ্যাটাকিং ব্যাটসম্যানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আমি পছন্দ করি।” কথাটার মধ্যে তাত্‌পর্যের এটাই যে, তা হলে তো অশ্বিনকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের গোড়াতেই বল করতে হয়। যে-হেতু ক্রিস গেইল নামক ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারটি আদতে ওপেনিং ব্যাটসম্যান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুক্রবার আগে ভারতকে রানের টার্গেট ঠিক করে দিতে নামুক কিংবা পরে ভারতের রান তাড়া করুক, দুটো কাজেই তাদের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে ওপেনার গেইল।

গেইল নিয়ে ঠিক কী বলেছেন অশ্বিন? বলেছেন, “শুধু ক্রিস গেইল বলেই নয়। আমার কথাটা বিশ্বের যে কোনও অ্যাটাকিং ব্যাটসম্যানের জন্যই বলা। তবে যে-হেতু এই ম্যাচটা আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে, সে কারণে আপনারা আমার কথাটাকে স্বাভাবিক ভাবেই গেইল প্রসঙ্গে ভাববেন, সেটাও বুঝছি। কিন্তু আসলে বিশ্বের যে ব্যাটসম্যানই আমাকে মাঠের বাইরে পাঠাতে চেয়ে আক্রমণাত্মক খেলতে ভালবাসে তাকে আমি আবার পাল্টা পছন্দ করি বেশি বল করতে। তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে। আমি সব সময় উইকেট পাওয়ার জন্য বল করি। কেবল রান আটকে রাখার জন্য নয়। কিন্তু যে ব্যাটসম্যানকে আমি মনে করি মারাত্মক তাকে আউট করতে আমি সব সময় বাড়তি মেহনত করি। কারণ সেটাই করতে আমি ভালবাসি।”

তা হলে পারথে কি বাঁ-হাতি গেইলের বিরুদ্ধে অশ্বিনের অফস্পিনকে শুরুতে নতুন বলে হাতিয়ার করবেন ধোনি? বিশেষ করে যে উইকেটের বাড়তি বাউন্স অশ্বিনকে আরও বিপজ্জনক বোলার করে তুলতে পারে বলে ক্রিকেটপণ্ডিতদের ধারণা। অশ্বিন প্রশ্নটার সোজাসুজি জবাব দেননি। বরং বলছেন, “আমি নিজেকে বাইশ গজে ফেলে দিয়ে দেখতে পছন্দ করি। বোঝার চেষ্টা করি ওই বিশেষ ম্যাচে আমি এক জন অফ স্পিনার হিসেবে বিপক্ষের ব্যাটসম্যানের উপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারছি! তা সেই ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল হোক কিংবা এবি ডে’ভিলিয়ার্স হোক। আমার চেষ্টা থাকে তাকে ক্রিজ থেকে উত্‌খাত করার। আর একবার ও রকম কোনও ব্যাটসম্যানকে যদি আউট করে দেওয়া যা, তা হলে ম্যাচটা নিজেদের দলের দিকে চলে আসার পথ অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের জন্যও আমার প্রস্তুতি তার বাইরে অন্য রকম কিছু নয়। এখন সেই কাজে আমার যখন ডাক আসবে তখনই নিজের গেমপ্ল্যান প্রয়োগের প্রাণপণ চেষ্টা করব।”

কিন্তু সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, গেইলের চেয়েও এই মুহূর্তে ভারতের কাছে বেশি বিপজ্জনক ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানের নাম মার্লন স্যামুয়েলস। ভারতের বিরুদ্ধে গেইলের শেষ ওয়ান ডে সেঞ্চুরি এসেছে প্রায় নয় বছর আগে। ২০০৬-এর ১৮ মে। তার পরে ১৯ ইনিংসে গেইলের মোট রান ৪৫০। গড় মাত্র ২৩.৬৮। সাত বার দশের কমে আউট হয়েছেন। যার মধ্যে চার বার শূন্যতে। বরং স্যামুয়েলস ভারতের বিরুদ্ধে শেষ পাঁচ ওয়ান ডে ইনিংসে ৩৩৩ রান করেছেন। শেষ তিন ইনিংসে দু’টো সেঞ্চুরি আছে। সে জন্য অশ্বিনকে হয়তো ক্যারিবিয়ানদের মিডল ওভার্সেও দরকার পড়তে পারে। কারণ, স্যামুয়েলস যে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

তবে দু’দলের আসল পার্থক্য বোধহয় ঘটিয়ে দিতে পারে বোলিং। ভারতীয় বোলারদের এ বারের বিশ্বকাপে ইকনমি রেট সবচেয়ে ভাল। ৪.২৩। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬.৪৯। ওভারপিছু দু’রানেরও বেশি। ভারতীয় বোলাররা এখনও পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে ২৮ উইকেট তুলেছেন, ১৭.৭৫ গড়ে। এর চেয়ে একমাত্র ভাল বোলিং গড় নিউজিল্যান্ডের ১৫.৯০। আগের ম্যাচে হাঁটুর চোটে না খেলা মহম্মদ শামি এ দিন ভারতীয় নেটে বোলিং করেছেন। আবার শামির বদলে আগের ম্যাচে খেলা ভুবনেশ্বর কুমারের বেশ কয়েক বার গেইলকে আউট করার কৃতিত্ব আছে। মোহিত শর্মা ট্রেনিং সেশনে ডান হাতে চোট পেলেও এক্স-রে রিপোর্ট বলছে গুরুতর কিছু নয়। ভারতীয় বোলিংয়ের এ রকম আশাব্যঞ্জক চিত্রের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে বলার তথ্য, টুর্নামেন্টে যে তিনটে ম্যাচেই তারা প্রথমে ব্যাট করেছে তিনশোর বেশি তুলেছে। আবার আয়ারল্যান্ডের মতো দলের বিরুদ্ধেও তিনশো রান রক্ষা করতে পারেনি। এবং আগে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্যারিবিয়ান বোলিং পিটিয়ে ৪০৮ তুলেছে। শিখর-রোহিত-রাহানে-কোহলির বিরাট ব্যাটিং লাইন আপ কোথায় থামতে পারে তা হলে? এই প্রশ্নই যেন ম্যাচের আগে মুখ্য।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম তরুণ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার হয়তো সে জন্যই ম্যাচের আগে বলেছেন, “ধোনির থেকে ক্যাপ্টেন্সির অনেক কিছু আমি নিজের নোটবুকে তুলেছি। দেখি সেগুলো ওর টিমের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে পারি কি না।”

তা হলে কি গুরু মারা বিদ্যেতে ভারতকে বশ করতে চাইছে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ?

world cup 2015 shami mohit injured ashwin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy