Advertisement
E-Paper

দেশি-বিদেশি ককটেলে সুগন্ধি সুভাষের বাগান

চিমা ওকোরির ঘুম ভাঙল! ভাঙতে গোটা একটা ম্যাচও লাগল না। মাত্র এগারো মিনিটেই নিজের টিমের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে নিলেন ময়দানের কালো চিতা। মোহনবাগান ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে চিমার সেই আক্রমণাত্মক ঘোষণাটা আরও একবার বলে নেওয়া যাক-- ‘আমরাও ঘুমিয়ে নেই’। কিন্তু রবিবার ম্যাচ শেষে চিমার অভিব্যক্তি যেন ‘কেনই বা জাগলাম! ঘুমিয়ে থাকলেই ভাল ছিল’।

প্রীতম সাহা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৩
দুই কোচ। দুই মেজাজ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দুই কোচ। দুই মেজাজ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

চিমা ওকোরির ঘুম ভাঙল!

ভাঙতে গোটা একটা ম্যাচও লাগল না। মাত্র এগারো মিনিটেই নিজের টিমের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে নিলেন ময়দানের কালো চিতা।

মোহনবাগান ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে চিমার সেই আক্রমণাত্মক ঘোষণাটা আরও একবার বলে নেওয়া যাক-- ‘আমরাও ঘুমিয়ে নেই’। কিন্তু রবিবার ম্যাচ শেষে চিমার অভিব্যক্তি যেন ‘কেনই বা জাগলাম! ঘুমিয়ে থাকলেই ভাল ছিল’।

সাইডলাইনে দাঁড়িয়েই অনবরত মাথা চাপড়াচ্ছিলেন। ম্যাচের পরে বাগান টিডি সুভাষ ভৌমিক নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে চিমার সঙ্গে হাত মেলাতেই আর মাঠের মধ্যে খুঁজে পাওয়া গেল না পুলিশ কোচকে। মুখ ঢেকে সটান যুবভারতীর করিডর দিয়ে দলের ড্রেসিংরুমে। তার আগে অবশ্য বলে গেলেন, “আমরা খুব ভাগ্যবান যে তিন গোলই হয়েছে। না হলে, ওরা আজ যা খেলেছে! আমরা আরও গোল খেতে পারতাম।”

প্রতিদ্বন্দ্বী কোচের সরল স্বীকারোক্তিতেই স্পষ্ট সুভাষের সবুজ-মেরুন ব্রিগেড এ দিন যুবভারতীতে কী মাপের দাপুটে ফুটবল খেলেছে। আদর্শ পাসিং ফুটবলের নিদর্শন। যার নেতৃত্ব দিলেন কাতসুমি। যেমন গতি, তেমন ফুটবল-বুদ্ধি। দ্রুত জায়গা বদল করার দক্ষতা এবং বিরাট এলাকা জুড়ে খেলার ক্ষমতা দেখে পেন ওরজির কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল! ট্রেভর মর্গ্যানের সোনালি যুগে যাঁর কাঁধে ভর করে তিন বছরে আটটা ট্রফি জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। বাগানের জাপানি মিডিও যদি এই ফর্ম গোটা মরসুমে ধরে রাখতে পারেন, তা হলে সবুজ-মেরুন জনতার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ট্রফির মুখ দেখার স্বপ্ন শীঘ্রই বাস্তবের আলো দেখে ফেলবে! কলকাতায় বেড়াতে আসা কাতসুমির ছোটবেলার কোচ তাকাহারি-ও নিশ্চয়ই এ দিন যুবভারতী ছেড়েছেন একরাশ আনন্দ নিয়ে।

এ দিন এগারো মিনিটের মধ্যেই জেজে এবং সাবিথের গোলে ২-০ এগিয়ে যায় বাগান। তবে দুই ভারতীয় স্ট্রাইকারের গোলের পিছনে কাতসুমির অবদানই বেশি। বল তৈরি করা থেকে নিখুঁত পাস বাড়ানো কিছুই বাদ দিলেন না। গোলও করতে পারতেন। কিন্তু অতিরিক্ত ‘পাসিং পাসিং’ করার নেশায়, স্কোরলাইনে নিজের নাম লেখাতে পারেননি। না হলে বিরতির আগে বক্সের মধ্যে যেখানে নিজে শট মারলেই গোল হয়ে যায়, ম্যাচের সেরা কাতসুমি শেষ মুহূর্তে পাস করে দিলেন শেহনাজ সিংহকে। পরে সুভাষও বলছিলেন, “গোলের সামনে গিয়ে কাতসুমির কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না দেখতে হবে। রাতে আরও একবার ম্যাচের ভিডিও দেখব। যদি মনে হয়, ওর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলব।”

কাতসুমি-ঝড় তো ছিলই, তার উপর প্রথম দিনেই নজর কাড়লেন বাগানের আইকন ফুটবলার বোয়া। পুরো ফিট নন। তবু যে ভাবে বল কন্ট্রোল করলেন, পাস বাড়ালেন, সূক্ষ্ম টাচ দেখালেন তাতে নিজের জাতের পরিচয় দিয়ে দিলেন প্রথম ম্যাচেই। চিমাকেও বলতে শোনা গেল, “অসাধারণ। ও পুরো ফিট হলে বাকিদের রাতের ঘুম কেড়ে নেবে।”

মোহনবাগানের জন্য সুখবর, এ দিনের তিন গোলদাতাই ভারতীয়। সত্তর মিনিটে বলবন্ত পেনাল্টি থেকে ৩-০ করেন। ৪-০ হতে পারত। জেজে-র আরও একটা গোল রেফারির ভুল অফসাইড সিদ্ধান্তে বাতিল হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মোহনবাগানের টিম কম্বিনেশন। বিদেশি এবং স্বদেশিদের নিয়ে এ বার যে ককটেল তৈরি করেছেন সুভাষ, তাতে ক্লাব তাঁবুতে ট্রফি না ঢুকলেই বোধহয় সবচেয়ে অস্বাভাবিক হবে!

মোহনবাগান: শিল্টন, কিংশুক, ধনচন্দ্র, শৌভিক, সতীশ, শেহনাজ, কাতসুমি, সাবিথ (রাম), শৌভিক (লালকমল), জেজে, বোয়া (বলবন্ত)।

police ac mohonbagan calcutta league pritam saha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy