Advertisement
১১ মে ২০২৪

নারিন বনাম ম্যাক্সওয়েলই ঠিক করবে ম্যাচের ভাগ্য

আইপিএলের শেষ চারে কলকাতা আর মুম্বই যে ভাবে ঢুকে পড়ল, সেটাকে চূড়ান্ত নাটকীয় ছাড়া আর অন্য কি-ই বা বলা যায়!

শহরে এসে গেলেন ‘ম্যাড ম্যাক্স’। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।

শহরে এসে গেলেন ‘ম্যাড ম্যাক্স’। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

আইপিএলের শেষ চারে কলকাতা আর মুম্বই যে ভাবে ঢুকে পড়ল, সেটাকে চূড়ান্ত নাটকীয় ছাড়া আর অন্য কি-ই বা বলা যায়!

শেষ চারে যাওয়া চারটে টিমের মধ্যে গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে পঞ্জাব আর চেন্নাই ঠিক যতটা ধারাবাহিক, ততটাই চমকপ্রদ কলকাতা এবং আরও বেশি করে মুম্বইয়ের এই অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো। দু’টো টিমই শেষ সাতটা ম্যাচে অসাধারণ খেলেছে।

এ বছর অবশ্য নিলামের পরে টিমগুলো যা দাঁড়ায়, তাতেই বোঝা গিয়েছিল টুর্নামেন্টটা দারুণ জমবে। লিগ পর্যায়ের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত যে রকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলল, সেটাই প্রমাণ চলতি মরসুমে টিমগুলোর মধ্যে ফারাক প্রায় নেই বললেই চলে। রবিবার রাতে মুম্বই জেতার পর রোহিত শর্মা বলছিল, কোনও কিছুই অসাধ্য নয়। একদম ঠিক কথা, ওরা সেটাই করে দেখাল। জন রাইটের মুখে এ বার একটু হাসি দেখতে চাই। জনকে এতদিন ধরে চিনি যে, জোর দিয়ে বলতে পারি, মুম্বইকে শেষ চারে তুলতে না পারা অবধি ও নিশ্চয়ই মুখটা একদম গোমড়া করে বসেছিল।

কলকাতা নাইট রাইডার্স আবার টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় অর্ধে দুরন্ত খেলেছে। দলের যখনই দরকার পড়েছে টিমের কেউ না কেউ এগিয়ে এসে দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছে। রবিন উথাপ্পা, সুনীল নারিন, গৌতম গম্ভীরদের এই তালিকায় সর্বশেষ নামটা ইউসুফ পাঠানের।

হায়দরাবাদ ম্যাচটার আগে পর্যন্ত নাইটদের হয়ে ইফসুফের অভিযান কাটছিল একেবারে দুঃস্বপ্নের মতো। কিন্তু শনিবারের ওই ইনিংসটার পর টুর্নামেন্টের শেষ দশটা দিন ও নিজের সম্পর্কে অনেক ভাল বোধ করবে।

টুর্নামেন্টের উপর ইউসুফের ফর্মে ফেরার প্রভাব কিন্তু ওর রানগুলোর থেকে অনেক বেশি। আইপিএলের দুনিয়া হাড়ে হাড়ে জানে যে, ও ভাল খেললে হেসেখেলে ২০০ স্ট্রাইক রেট রাখতে পারে। যে কোনও প্রতিপক্ষের জন্য যা অসম্ভব বিপজ্জনক! উল্টো দিকে ডেল স্টেইনের মতো সর্বকালের সেরা একজন বোলার থাকা সত্ত্বেও মাত্র চোদ্দো ওভারে খেলা শেষ করে দিতে পারাটা একজন ব্যাটসম্যানের আত্মবিশ্বাসকে অন্য পর্যায়ে তুলে নিয়ে যায়। এটা ঠিক যে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স বলে বলে করা যায় না। মাঝেমধ্যে এক-আধটাই হয়। আবার এটাও ঠিক, দলকে কাপ দেওয়ার জন্য ইউসুফের ব্যাট থেকে এমন আর মাত্র দু’টো পারফরম্যান্সই যথেষ্ট।

আজ অবশ্য কলকাতার টক্কর এই টুর্নামেন্টের সেরা দলের সঙ্গে। আর পঞ্জাব এমনই একটা টিম, যাদের পক্ষে নিজেদের দিনে কোনও কিছুই করে দেখানো অসম্ভব নয়।

কলকাতার এক নম্বর বিপদের নাম অবশ্যই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আমার ধারণা, ম্যাক্সওয়েল-কাঁটা তোলার দায়িত্ব গম্ভীর নিজের সেরা অস্ত্র সুনীল নারিনকেই দেবে। যদি ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটে-বলে হওয়া শুরু হয়, ইডেনকেও পাড়ার পার্ক মনে হতে পারে। আমার ধারণা, ক্রিকেট-প্রেমীরা এটা দেখার অপেক্ষায় যে, ম্যাক্সওয়েল বড় ম্যাচের চাপ কী ভাবে সামলায়। একই রকম ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে যাবে, নাকি চাপের মুখে নিজের খেলার ধরন পাল্টাতে বাধ্য হবে।

দু’টো টিমের শক্তি বিচার করলে পঞ্জাবের ব্যাটিং কলকাতার থেকে অনেক ভাল। কিন্তু সেই সেরা ব্যাটিং লাইনআপ আজ খুব ভাল একটা বোলিং আক্রমণের সামনে পড়বে। ঘরের মাঠে দুরন্ত ফর্মে থাকা কলকাতার বোলিং-আগ্রাসনের সামনে বীরেন্দ্র সহবাগ, জর্জ বেইলি, ডেভিড মিলাররা কতদূর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে, তার উপরেই নির্ভর করবে ম্যাচের ভাগ্য।

এটুকু বলতে পারি, শহরের আবহাওয়া যেমনই থাক, ইডেনের আবহাওয়ায় আজ বিদুৎ খেলবেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sourav Ganguly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE