Advertisement
E-Paper

পাওয়ার হিটারদের বসানোর সাহস কেউ এর পর দেখাবে না

শনিবারে ইউসুফ পাঠান। রবিবারে কোরি অ্যান্ডারসন। অতিমানবীয় পাওয়ার হিটিংয়ের কাটাছেঁড়ায় দীপ দাশগুপ্তরাত বারোটায় ম্যাচ রিপোর্টটা লিখতে বসে বুঝে পাচ্ছি না, কী ভাবে শুরু করা উচিত। আইপিএলে সেফ স্কোরের সংজ্ঞাটা বদলে এ বার থেকে কী হবে, সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে করব? নাকি কোরি অ্যান্ডারসনের রবিবারের ইনিংসটা কেন আইপিএলের সর্বকালের সেরা সরাসরি তার ব্যাখ্যায় আসব?

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০৩:৫২
কোরি অ্যান্ডারসন ও ইউসুফ। ছবি: বিসিসিআই ও শঙ্কর নাগ দাস।

কোরি অ্যান্ডারসন ও ইউসুফ। ছবি: বিসিসিআই ও শঙ্কর নাগ দাস।

রাত বারোটায় ম্যাচ রিপোর্টটা লিখতে বসে বুঝে পাচ্ছি না, কী ভাবে শুরু করা উচিত। আইপিএলে সেফ স্কোরের সংজ্ঞাটা বদলে এ বার থেকে কী হবে, সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে করব? নাকি কোরি অ্যান্ডারসনের রবিবারের ইনিংসটা কেন আইপিএলের সর্বকালের সেরা সরাসরি তার ব্যাখ্যায় আসব?

অ্যান্ডারসনেরটা দিয়েই করছি। আইপিএল অনেক অবিশ্বাস্য ইনিংস উপহার দিয়েছে। ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ১৫৮। ক্রিস গেইলের ১৭৫। এ বার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের পরের পর ৯০। মঙ্গলবারের ইডেনে ইউসুফ পাঠানের ২২ বলে ৭২। কিন্তু এত কিছুর পরেও মনে হচ্ছে, অ্যান্ডারসনের ইনিংসকেই আইপিএলের সর্বকালের সেরা ধরতে হবে। অন্তত শনিবার পর্যন্ত।

গেইল বা পাঠানের চেয়েও কেন কোরির ইনিংস এগিয়ে রাখছি? গেইল গত আইপিএলে পুণের বিরুদ্ধে যে ১৭৫ করেছিল, সেখানে মাঠ ছোট ছিল, বোলাররা বাজে বল করেছে। অ্যান্ডারসন শনিবার যে মাঠে ৪৪ বলে ৯৫ নটআউট করে গেল, তারও মাঠ ছোট, রাজস্থান বাজে বল করেছে। কিন্তু গেইলকে সে দিন অ্যান্ডারসনের মতো চাপ নিতে হয়নি। গেইলের ঘাড়ের উপর আস্কিং রেট ১৫ দাঁড়ায়নি। সে দিন গেইলকে এমন আশঙ্কা নিয়ে খেলতে হয়নি যে ১৪.৩ ওভারে টার্গেটটা তুলতে না পারলে প্লে অফ থেকে ছিটকে যেতে হবে। অ্যান্ডারসনকে সেটা করতে হয়েছে। আর পাঠানও শনিবার জানত, ও পনেরো ওভারের মধ্যে ১৬০ তুলে না দিলে ওর টিমকে আইপিএল থেকে ছিটকে যেতে হচ্ছে না। না পারলেও প্লে অফ খেলবে। প্লাস, পাঠানকে ওভারপিছু দশ করে তুলতে হত। কোরিকে তাড়া করতে হল ওভার পিছু প্রায় পনেরো!

টি-টোয়েন্টি তার সর্বকালের সেরা ম্যাচটাও এ দিন দেখে ফেলল। ভাবা যায়, ১৪.৩ ওভারে একটা টিমকে ১৯০ করতে হত, আর সেটা করে তারা প্লে অফে উঠে পড়ল! আর শেষ ছ’বলে যে নাটকটা হল, তা তো সিনেমাকেও হার মানাবে। ছ’বলে ১৫ লাগত মুম্বইকে প্লে অফে যেতে হলে। অ্যান্ডারসন একটা চার মারায় সেটা এক সময় হল ৪ বলে ১০। পরের বলে ১, ২ বলে ৮ চাই। ফকনারের পরের বলটাই উড়ে গেল বাউন্ডারির ওপারে। এ বার ১ বলে যখন দুই চাই রায়ডু রান আউট! হতাশ হয়ে রায়ডু মাটিতে শুয়ে পড়েছে। ঠিক তখন দেখলাম ইকোয়েশন বলছে, মুম্বই তার পরের বলেই ছয় বা চার মারলে ওরাই প্লে অফে, রাজস্থান নয়। আর সেই বলেই কি না ফকনারকে ছক্কা মেরে দিল আদিত্য তারে! এর চেয়ে রোমাঞ্চকর কিছু হওয়া সম্ভব?

তবে অ্যান্ডারসন আর পাঠানের অবিশ্বাস্য ইনিংসের পর টি-টোয়েন্টির সেফ টার্গেটের সংজ্ঞা পাল্টে গেল কি না, তা নিয়ে ভাবার মানে নেই। দু’টো ইনিংসই এসেছে এমন অবস্থায় যখন ওদের হারানোর কিছু ছিল না। তাই এর পরেও আইপিএলে কোনও টিম ২০ ওভারে ১৮০-৯০ তুললে সেটাকে উইনিং স্কোর বলা যাবে। আরও একটা জিনিস এ দিনের পর পরিষ্কার হয়ে গেল। পাওয়ার-হিটাররা পরপর ব্যর্থ হলেও তাদের চট করে বসাতে নেই। সেই সাহসও কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজির আর হবে বলে মনে হয় না। তিন-চারটে ম্যাচে খারাপ খেলেও পাওয়ার হিটাররা একদিন যা করে দেবে, সেটা আর কারও পক্ষে করা সম্ভব হবে না।

যেমন ইউসুফ। যেমন অ্যান্ডারসন। যেমন ম্যাক্সওয়েল। ইউসুফকে নিয়ে কথা হচ্ছিল। কোরিকে মাঝে খেলানোই হচ্ছিল না। সবাই তো দেখল, ওরা কী করতে পারে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজস্থান রয়্যালস ২০ ওভারে ১৮৯-৪ (স্যামসন ৭৪), মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ২০ ওভারে ১৪.৪ ওভারে ১৯৫-৫ (কোরি ৯৫ ন:আ, রায়ডু ৩০)।

দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ১৮.২ ওভারে ১১৫। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ১৩.৫ ওভারে ১১৯-৩ (মিলার ৪৭)।

ipl yousuf pathan corey anderson
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy