ম্যাচের সেরাকে জুহির অভিনন্দন। বৃহস্পতিবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
জয় এল। কিন্তু শাহেনশাহ কোথায়?
শাহেনশাহ-র লোকেশন নিয়ে যখন পুরো ইডেনে জল্পনা চলছে, তখন তাঁর আসল ঠিকানা জানালেন গত বছর যিনি দেশকে ‘জাম্পিং ঝপাং’ শিখিয়েছেন, সেই ফারহা খান।
ইডেন থেকেই ফারহা খানকে ফোন করে জানা গেল আজকেও গোরেগাঁওয়ের ফিল্ম সিটিতে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবির ক্লাইম্যাক্সের শ্যুটিং করেছেন তিনি।
কিন্তু কলকাতার মানুষ তো এ বার রেগে যাবে আপনার ওপর, কিছুতেই নাকি আপনি শাহরুখকে ছাড়ছেন না?
“না, না, সে রকম কিছুই নয়। যে দিন ওর ইচ্ছে হবে, ও চলে যাবে। তবে এই সময়টায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্লাইম্যাক্সের শ্যুটিং চলছে। তাই ও একটু বেশি মাত্রায় ব্যস্ত। আর আমি জানতাম আইপিএল-এর সময় শাহরুখ ব্যস্ত থাকবে। তাই তার আগেই শ্যুটিং শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওর কাঁধের ব্যথাটা বেড়ে যাওয়ার পর আমাদের সব শিডিউল উল্টোপাল্টা হয়ে গেল। তবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স-এর এক-একটা উইকেট পড়ার পর যে ভাবে শাহরুখ আমার ইউনিটের সঙ্গে চেঁচাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে আমরা সবাই ইডেনেই রয়েছি,” বলছিলেন ফারহা।
ইডেনও কিন্তু এ দিন প্রবল গরমকে অগ্রাহ্য করে গৌতম গম্ভীরের টিমের জন্য কম চেঁচায়নি।বিরাট কোহলি সবে আউট হয়ে তখন ইডেন ছাড়ছেন।
এমন সময়েই ক্লাব হাউসের আপার টায়ারে দর্শকের কোরাস শুরু হল, “অব কি বার... কেকেআর”।
তার কিছুক্ষণের মধ্যেই যুবরাজ সিংহ আউট। ইডেনের বি-ব্লকে তখন দর্শকদের গগনভেদী চিৎকার, “অচ্ছে দিন... আ গয়ে”।
নরেন্দ্র মোদির ভারতে টানা ছ’টা ম্যাচে জয় পাওয়ার পর গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে শহর কলকাতাও কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিল।
খেলার পরে হাঁটতে হাঁটতে মেট্রো ধরতে যাওয়ার পথেও আলোচনা শুধুই ফাইনাল নিয়ে। এবং আর এক জনকে নিয়েও তিনি রবীন উথাপ্পা। ‘রবীন’ লেখা মুখোশ থেকে ব্যানার কলকাতার মন খুব তাড়াতাড়ি জিতে নিয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য।
শুধু তাঁর খেলা দেখতেই তাড়াতাড়ি শ্যুটিং সেরে এ দিন বাড়ি ফিরে এসেছিলেন অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায় থেকে যিশু সেনগুপ্ত। “কী ফর্মে রয়েছে উথাপ্পা! এমন চললে দ্বিতীয় আইপিএল ট্রফি কিন্তু মন্নতের ড্রইং রুমে পৌঁছে যাবে,” বলছিলেন আবির।
মন্নতের ড্রইং রুমে ট্রফি পৌঁছবে কি না তা হয়তো সময় বলবে। কিন্তু এ দিন ইডেনে বহু মানুষ শাহরুখের গত পরশুর ট্যুইট: ‘আই উইল বি দেয়ার ফর দ্য নেক্সট ওয়ান’ পড়ে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন কিং খান-কে দেখতে।
কিন্তু এ দিনও শাহরুখকে দেখা গেল না। কেন? কোথায় তিনি!
তাঁর কাছ থেকেই জানা গেল সেমিফাইনাল, এমনকী টিম ফাইনাল গেলেও শ্যুটিং কামাই করেই শাহরুখকে মাঠে আসতে হবে কারণ ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’য়ের শ্যুটিং ১৫ জুন অবধি চলবে।
শাহরুখের না আসাটা তো তাও বোঝা গেল। কিন্তু শাহরুখের বাকি বন্ধুরাই বা কোথায়! যে অর্জুন রামপাল, প্রিয়ঙ্কা চোপড়ারা নিয়মিত কিং খান-এর সঙ্গে ইডেনে আসতেন, তাঁরাই বা কোথায় গেলেন!
শাহরুখের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গেল অর্জুনের সঙ্গে শাহরুখের সম্পর্ক এই মুহূর্তে খুবই খারাপ। তার কারণ, সুজান রোশনের সঙ্গে অর্জুনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে নাকি বেশ অসন্তুষ্ট শাহরুখ। তাই অর্জুনকে এ বার কেকেআর-এর কোনও খেলাতেই দেখা যাচ্ছে না। আর প্রিয়ঙ্কা, যিনি দু’বছর আগে নিয়মিত ইডেনে আসতেন, তিনি এ বার গেলেন কোথায়?
জানা গেল প্রিয়ঙ্কা এই মুহূর্তে দেশেই নেই। এই মুহূর্তে জোয়া আখতারের পরবর্তী ছবির জন্য তিনি স্পেনের এক ক্রুজলাইনারে শ্যুটিং করছেন। অর্জুন, প্রিয়ঙ্কারা মাঠে না এলেও প্রত্যেক বছরের মতো অন্ধ কেকেআর সাপোর্টার ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এ দিনও মাঠে ছিলেন।
শুধু মাঠে ছিলেনই না, জুহি চাওলার সঙ্গে প্রচুর আড্ডাও মারলেন।
দিন আমাদের...
নাইটদের জয়ে উচ্ছ্বসিত জুহি চাওলা। সঙ্গে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
বৃহস্পতিবার, ইডেনে। ছবি: উৎপল সরকার।
কী কথা হল আপনাদের এত?
“আরে আমি মাঠে পৌঁছনোর পরপরই দু’টো উইকেট পড়ল। তাই জুহি আমাকে বলছিল আমি যেন পজিশন না ছাড়ি। আমার হাত ধরেই অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিল,” এক নিশ্বাসে বলেন ঋতুপর্ণা।
আর কী মনে হচ্ছে? কেকেআর জিততে পারবে ট্রফি?
“আরে এই বছর যে রকম ফর্মে রয়েছে উথাপ্পা, সুনীল নারিনরা, এই টিমটা ট্রফি জিতে গেলে অবাক হব না। আর আমার কেকেআর টিমটাকে এত ভাল লাগে কারণ, এই টিমটা বানিয়ে আমার শহর কলকাতার সঙ্গে একটা অদ্ভুত সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করে ফেলেছে শাহরুখ। এটা দারুণ একটা বন্ডিং। আর এ ছাড়াও আমি কেকেআর ফ্যান হওয়ার আর একটা কারণ হল ওয়াসিম আক্রম। সেই স্কুল থেকেই ওঁকে ভাল লাগে। আজও বদলায়নি কিছুই,” বলতে বলতে হেসে ফেলেন ঋতুপর্ণা। ওয়াসিম প্রীতির কথা বলতে গিয়ে ঋতুপর্ণা ব্লাশ করলেও এ দিন সবচেয়ে সরস মন্তব্যটা বোধহয় করলেন সল্টলেক থেকে খেলা দেখতে আসা বছর চল্লিশের অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। “কিংফিশার এয়ারলাইন্স আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নিজের টিমের ব্যাটসম্যানের নামও ছিল টাকাওয়ালা। তা সত্ত্বেও টিম ছিটকে গেল। বিজয় মাল্যর সময়টা সত্যিই খারাপ যাচ্ছে,” বলেই চট করে মিনিবাসে উঠে পড়লেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy