Advertisement
২১ মে ২০২৪
আদালতে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী বিন্দ্রা

বোর্ড নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ায় শ্রীনি ফের ফ্রন্টফুটে

গত কয়েক মাস ধরে একটার পর একটা বাউন্সার সামলানোর পর বুধবার অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আবার তিনি ফ্রন্টফুটে। নিষ্পত্তি তো দূরে থাক, স্পট ফিক্সিং মামলার শুনানি আরও চলবে ধরে নিয়েই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নির্বাচন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার অনুমতি দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৭
Share: Save:

গত কয়েক মাস ধরে একটার পর একটা বাউন্সার সামলানোর পর বুধবার অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আবার তিনি ফ্রন্টফুটে।

নিষ্পত্তি তো দূরে থাক, স্পট ফিক্সিং মামলার শুনানি আরও চলবে ধরে নিয়েই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নির্বাচন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার অনুমতি দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। যে রায় শোনার পর থেকে শ্রীনি শিবির একটা কথাই বলছে, অ্যাডভান্টেজ শ্রীনিবাসন।

এ দিন আদালতের এই নির্দেশের পর ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এই রাউন্ডের লড়াইয়ে শ্রীনিই এগিয়ে গেলেন। আদালত না তাঁকে বোর্ড থেকে সরে যেতে বলল, না তাঁকে নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে বলল। ফলে শ্রীনি শিবির তাদের সুপ্রিমোকে হিসাবের মধ্যে রেখেই আবার নির্বাচনের অঙ্ক কষতে শুরু করেছে। তাদের আশা, শ্রীনির নির্বাচনে লড়ার উপর হয়তো নিষেধাজ্ঞা আর জারি হবে না। আর তত দিন যে ভাবে বোর্ডের কাজ চলে আসছে, সে ভাবেই চলবে। শ্রীনির আইনজীবী নাকি এ দিন ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, ম্যাচ তিনি বার করে নেবেন।

১৭ ডিসেম্বর থেকে বোর্ডের বার্ষিক সভা এবং নির্বাচন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে যাওয়ায় আপাতত প্রায় দেড় মাস মতো সময় হাতে পেয়ে যাচ্ছেন শ্রীনি। যে সময়টা ঘর আরও ভাল ভাবে গুছিয়ে নেওয়া যাবে বলে মনে করছেন তাঁর সমর্থকেরা। জল্পনা চলছে, এই সময়ের মধ্যে শ্রীনিবাসন হয়তো ইন্ডিয়া সিমেন্টসকে চেন্নাই সুপার কিংসের থেকে আলাদা করে সিএসকে-কে একটা পৃথক কোম্পানি বানানোর চেষ্টা করবেন।

বুধবার এই মামলার রায়ের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় বোর্ডের আইনজীবীরা পরিস্থিতি আগাম আন্দাজ করে আগে থেকেই আদালতের কাছে নির্বাচন ও বার্ষিক সভা পিছনোর আবেদন জানিয়ে রেখেছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে দুই বিচারপতি জানান, পরিস্থিতি যে রকম, তাতে জানুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত এজিএম এবং নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে বোর্ডের বর্তমান প্রশাসনিক পরিকাঠামো যেমন অস্থায়ী ভাবে চলছে, তেমনই চলবে। এমনকী ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপে যাওয়া ও চূড়ান্ত দল অনুমোদন করার কাজও করবে অস্থায়ী প্রশাসন।

তবে শ্রীনিবাসনের সামনে কিন্তু নতুন কাঁটা হয়ে দেখা দিতে পারেন প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট আইএস বিন্দ্রা। এত দিন টুইট বা ব্লগ মারফত শ্রীনিকে আক্রমণ করে এসেছিলেন। এ দিন কিন্তু বিন্দ্রা আদালতের রাস্তায় যাওয়াই ঠিক করলেন। বুধবার তাঁর আইনজীবী রাজীব ধবন বিন্দ্রার আবেদন আদালতে পেশ করেন। যেখানে বিন্দ্রা এই মামলায় আদালতে নিজের বক্তব্য বলতে চেয়েছেন। বিচারপতিরা তাঁকে আগামী সোমবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। শ্রীনি শিবির মনে করছে, এখন আর শুধু আদিত্য বর্মাতে হচ্ছে না। তাই প্রতিপক্ষ বিন্দ্রাকেও আসরে নামাতে চাইছে।

শ্রীনির স্বার্থসংঘাত নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল, তার জবাবে এ দিন তাঁর আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে বলেন, “শ্রীনিবাসনকে প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। উনি কথা দিচ্ছেন, ফের বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে বসলে উনি আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কোনও সভায় যোগ দেবেন না। এই মর্মে লিখিত নিশ্চয়তাও দিতে রাজি উনি।” তবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বিচারপতি টি এস ঠাকুর ও ইব্রাহিম খলিফুল্লাহ। সিএসকে থেকে শ্রীনি সরে দাঁড়াবেন কি না, তা নিয়েও আইনজীবীরা কিছু বলেননি।

এই ডামাডোলে অবশ্য বোর্ডের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। যেমন, ডিসেম্বরে জোনাল অ্যাকাডেমি গঠনের কথা ছিল। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির পরিকাঠামোগত রদ বদলেরও কথা ছিল। কিন্তু ফিনান্স কমিটির মিটিং না হওয়ায় অর্থ মঞ্জুর হয়নি।

বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল বাছাইয়ের সময়ও বোর্ডের এই জট কাটার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে বিশ্বকাপের ১৫ জনের দল বেছে নিতে হবে অ্যাড হক কমিটিকেই। আবার বর্তমান নির্বাচক কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হবে, না নতুন কয়েক জন নির্বাচককে আনা হবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে বিশ্বকাপের দল গঠন নিয়ে না কোনও সমস্যা হয়, এই আশঙ্কাও করছেন বোর্ডের কেউ কেউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

srinivasan bcci brinda election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE