সপ্তাহ দু’য়েক আগেও অবস্থাটা খুব একটা সুবিধের ছিল না। টানা ম্যাচ জেতার জন্য আমাদের উপর প্রচুর চাপ ছিল। তখন সাতটা ম্যাচ বাকি, আমরা জানতাম তার মধ্যে ছ’টা জিততে হবে। হয়তো সেটা এখন করেও ফেলব।
কিন্তু একটা কথা মানতেই হবে, টানা চারটে ম্যাচ জেতাটা চাপ অনেক কমিয়ে দিয়েছে। টিমে আবার আত্মবিশ্বাসের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সদ্য পাওয়া জয়গুলো মোক্ষম তো বটেই, তার সঙ্গে টিমের সবাইকে সতেজও করে তুলেছে। এ মরসুমে আমরা যখন হেরেছি শেষ ওভারে চাপের চোটে অনেককেই হয়তো হাতের নখ খেতে হয়েছে। কিন্তু যখন জিতেছি বিপক্ষকে কোনও সুযোগ দিইনি।
তার অন্যতম কারণ, চাপের মধ্যেও ব্যাট বা বল হাতে আমাদের প্লেয়াররা ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দু’সপ্তাহ আগের থেকে যেটা এখন অনেক ধারালো। ক্রিকেটীয় দক্ষতা থাকলে শুধু হয় না, কী ভাবে কাজে লাগাতে হবে সেটা জানাটাও যথেষ্ট নয়, জানতে হয় কখন সেটা প্রয়োগ করতে হবে।
রবিনের কথাই ধরা যাক। টপ অর্ডারে ও এখন ফর্মের দুরন্ত একটা দৌড় উপভোগ করছে। গত সপ্তাহে যেমন বলেছিলাম আবার বলছি, এই ফর্মটা রবিন গোটা টুর্নামেন্টে ধরে রাখতে পারলে, আমরা অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকব।
তবে এ মরসুমে কেকেআরের প্রধান শক্তি ব্যাটিং নয়, বোলিং আক্রমণ। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই সেটা আমরা জানতাম। ঘূর্ণি উইকেটে ম্যাচ হলে তার অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার জন্য আমাদের টিমে তিন সেরা স্পিনার রয়েছে। যার নেতৃত্বে সানি। বছর দু’য়েক আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বে পা রাখার দিন থেকে এখনও পর্যন্ত নিজের বোলিংয়ে একই রকম রহস্য ধরে রেখেছে সানি।
অবশ্য শুধু আমরাই নয়, ঘূর্ণি উইকেটে চেন্নাইয়ের হাতেও অসাধারণ তিনজন স্পিনার রয়েছে। তাই ইডেনে সাধারণত যে রকম বল ঘোরে সেটা বজায় থাকলে শুধু আমরাই এগিয়ে থাকব না। তাই ভাবছি দলে সুযোগ পেতে নেটে অফ স্পিন বোলিং নিয়ে খাটাখাটনি শুরু করব! এই ম্যাচটা আমাদের জন্য যে বিরাট গুরুত্বপূর্ণ সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। জিতলে হয়তো শেষ দুটো ম্যাচে নামার আগে কিছুটা স্বস্তির শ্বাস নিতে পারব। অবশ্য শুধু আমরা জিতলেই হবে না, অন্য টিমের ফলের উপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে।
যে দলটা প্লে অফে চার নম্বরে শেষ করবে ট্রফি জেতা তাদের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন। মরসুমের সেরা তিন দলকে টানা তিনটে ম্যাচে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। তবে এটাও ঠিক যে অন্তত জেতার একটা সুযোগ থাকবে। কোনও সুযোগ না থাকার থেকে অর্ধেক সুযোগ পাওয়াটা অনেক ভাল।
এ তো গেল মাঠের কথা। মাঠের বাইরে যথারীতি টুর্নামেন্টটা ঝড়ের বেগে দৌড়চ্ছে। প্যাকিং আর যাতায়াতে প্রচুর সময় লাগার পরও এটা বলতে হচ্ছে। টুর্নামেন্টের গোড়ায় সূচির দিকে চোখ রাখলে মনে হবে কত দীর্ঘ, তার পর কখন যে সেটা মাত্র ১২ দিনে এসে ঠেকে, ভাবলেও অবাক হতে হয়। আসলে আইপিএল একটা চলন্ত ট্রেন। কোনও থামাথামি নেই, এমন কী ধীরে চলারও ব্যাপারও নেই। তাই চালকের আসনে বসাটাই সবচেয়ে ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy