Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মোহনবাগান নির্বাচনে নতুন মোড় এনে দিলেন সৃঞ্জয়

রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ হিসাবে সৃঞ্জয় বসুর পদত্যাগের পর মোহনবাগানের নির্বাচন কি নতুন দিকে মোড় নিতে চলেছে? নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে হঠাৎ-ই এই প্রশ্নে সরগরম ময়দান। প্রেসিডেন্ট টুটু বসুর পুত্র বাগান সহ-সচিব সৃঞ্জয় জামিন পাওয়ার পর ক্লাব তাঁবুতে বুধবার ছিল খুশির হাওয়া। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সব সম্পর্ক চুকে যাওয়ার পর হঠাৎ-ই নতুন অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে ক্লাবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:১১
Share: Save:

রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ হিসাবে সৃঞ্জয় বসুর পদত্যাগের পর মোহনবাগানের নির্বাচন কি নতুন দিকে মোড় নিতে চলেছে? নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে হঠাৎ-ই এই প্রশ্নে সরগরম ময়দান।

প্রেসিডেন্ট টুটু বসুর পুত্র বাগান সহ-সচিব সৃঞ্জয় জামিন পাওয়ার পর ক্লাব তাঁবুতে বুধবার ছিল খুশির হাওয়া। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সব সম্পর্ক চুকে যাওয়ার পর হঠাৎ-ই নতুন অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে ক্লাবে।

ময়দানের যা খবর, তাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে থাকা তৃণমূলের মন্ত্রী, মেয়র পারিষদরা উল্টো দিকে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের ধারণা, সৃঞ্জয় সাংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার পর আর কোনও পিছু টান নেই তাঁর বিরোধিতা করার। আসন্ন ক্লাব নির্বাচনে সরাসরি লড়াইতে নামলে কোনও ‘নির্দেশ’-ও আসবে না ওপরতলা থেকে।

ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সভায় বুধবার সরব হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী, বাগান ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত মুখোপাধ্যায়। প্রেসিডেন্ট, অর্থসচিব ছাড়া কী ভাবে সাধারণ সভা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। আজ সুব্রতবাবুর আলোচনায় বসার কথা বাগানের দুই ঘরের ছেলে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত ভট্টাচার্যের সঙ্গে। হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন ইদানীং নিয়মিত শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। আর বাবলু তো ঘোষিত বিরোধী। দু’জনে একসঙ্গে মাঝেমধ্যেই প্রাক্তন ফুটবলারদের নিয়ে আসছেন বাগান তাঁবুতে। সেই দু’জনের সঙ্গে এই বৈঠক কি ক্লাব নির্বাচনের নতুন কোনও বদলের ইঙ্গিত?

প্রশ্ন শুনে পোড়খাওয়া রাজনীতিক সুব্রত খোলসা করে কিছু বলেননি। বললেন, “আরে সব কিছুর তো একটা নিয়ম কানুন থাকে। হিসাবটা সাধারণ সভায় দেবে কে? কিছুই হচ্ছে না। সে জন্যই সরব হয়েছি। প্রসূন-সুব্রত আলোচনায় বসতে চাইছে। আলোচনায় বসব।” টুটু-পুত্র সৃঞ্জয় আপনার দল ছেড়ে দেওয়ায় লড়াইটা কি সুবিধাজনক হল? সুব্রতবাবু হাসতে হাসতে বললেন, “তা তো একটু হলই। ও তো সাংসদ ছিল।”

বাগান তাঁবুর খবর, সুব্রতর মতোই ক্লাবের কর্মসমিতির সদস্য, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ, হাওড়ার মেয়র তথা ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট রথীন চক্রবর্তীও আলোচনায় বসতে পারেন প্রসূন-সুব্রতদের সঙ্গে। দু’জনেই তৃণমূলের পদাধিকারী। প্রসূন এ দিন ছিলেন আরও সরব। বললেন, “ওরা ক্লাবটার যা অবস্থা করেছে তাতে ওদের এখনই সব পদ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। নির্বাচনে দাঁড়ানোই উচিত নয়। শ্যামল সেন, সুব্রতদা, রথীনদা’র মতো স্বচ্ছ মানুষ এবং প্রাক্তন ফুটবলারদের হাতে ক্লাবটা ছেড়ে দেওয়া উচিত। ক্লাবের টাকার কোনও অভাব হবে না।”

সুব্রত ভট্টাচার্যের আবার মন্তব্য, “সব ভুতুড়ে ভোটার করে রেখেছে ওরা। নতুন কার্ড করার টাকা কোথায় গেল? সাধারণ সভায় এমন সব প্রশ্ন তুলব যে পালানোর পথ পাবে না। দেখুন না কী হয়?” সৃঞ্জয় শাসক দল ছেড়ে যাওয়ায় কি আপনাদের সুবিধা হল? বাগানকে দু’বার আই লিগ দেওয়া সুব্রত বললেন, “হল তো বটেই। রাজনৈতিক যে সুযোগ-সুবিধা ওরা কাজে লাগাত সেটা আর এ বার হবে না।”

এমনিতে ময়দানের ক্লাবগুলির ভোট হয় শাসকগোষ্ঠীর তৈরি ভোটার তালিকা মেনে। নিজেদের লোকেদের কার্ড করিয়ে নিয়ে জেতে শাসকরা। বাগানও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। টুটু-অঞ্জন-দেবাশিস-মদনদের হাতে যা ভোটার আছে তাতে বাগানের বছরের পর বছর জিতে আসা শাসক গোষ্ঠীকে হারানো কঠিন। বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র এ দিনও বলেও দিয়েছেন, “আমাদের ক্লাবে সব কমিটেড ভোটার। সবাই জানে কারা ক্লাব চালাতে পারবে। তাদেরই ভোট দেবে।”

সদ্য জামিন পাওয়া সহ- সচিব সৃঞ্জয়কে প্যানেলে রেখেই নির্বাচনে যাচ্ছে শাসক গোষ্ঠী, দাবি করেছেন অঞ্জন। কিন্তু অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, ভোটে না-ও দাঁড়াতে পারেন সৃঞ্জয়। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে মার্চের গোড়ায় ভোট হবে বাগানে। কিন্তু সৃঞ্জয় তৃণমূল ছাড়ায় কি আপনাদের সমস্যা হবে জিততে? অঞ্জন বললেন, “আমাদের ক্লাবে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, অতীশ সিংহরা নির্বাচনে নেমেছেন। কখনও রাজনৈতিক বিষয় আসেনি। এ বারও আসবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

srinjoy bose mohun bagan election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE