Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘যুদ্ধ’ থামিয়ে ফের স্বদেশের ধোনিতে মত্ত ওপার বাংলা

সাকিব ঝড়। সাকিবের ঝোড়ো ব্যাটিং, শেষ চারে কলকাতা। আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন সাকিব। শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে সাকিব আল হাসান ইন্টারনেটে দেশের কাগজের শিরোনামগুলো দেখলেন কি না কে জানে। একটা ব্যাপারে শুধু নিশ্চিত হওয়া গেল। বাংলাদেশ মিডিয়া থেকে তাঁর কাছে কোনও ফোন আসেনি।

স্ত্রী শিশিরের সঙ্গে শুক্রবার টিম হোটেলে সাকিব। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

স্ত্রী শিশিরের সঙ্গে শুক্রবার টিম হোটেলে সাকিব। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০৩:১৯
Share: Save:

সাকিব ঝড়।

সাকিবের ঝোড়ো ব্যাটিং, শেষ চারে কলকাতা।

আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন সাকিব।

শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে সাকিব আল হাসান ইন্টারনেটে দেশের কাগজের শিরোনামগুলো দেখলেন কি না কে জানে। একটা ব্যাপারে শুধু নিশ্চিত হওয়া গেল। বাংলাদেশ মিডিয়া থেকে তাঁর কাছে কোনও ফোন আসেনি।

কারণ, কলকাতার নম্বরই সাকিব কাউকে দেননি!

দেশজ মিডিয়ার সঙ্গে তাঁর ‘সুসম্পর্কে’-র কথা পদ্মা পেরিয়ে এ পার বাংলার মিডিয়াকুলেও এখন বিদিত। শোনা যায়, সাকিব আল হাসানের এক নম্বর ‘শত্রু’ বলে যদি কেউ থেকে থাকে, তা হলে সেটা বাংলাদেশ মিডিয়া! যারা এমনও বলবে, এমএসডি-র সঙ্গে সাকিবের কয়েকটা জায়গায় মিল আছে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি প্রবল বিত্তবান। সাকিবও বাংলাদেশ ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী। ধোনি ভারতের ম্যাচউইনার, সাকিব বাংলাদেশের। এবং দেশজ মিডিয়ার বড় অংশের সঙ্গে এমএসডি-র ‘শীতল’ সম্পর্ক রাখার যে প্রবণতা, সাকিবের মধ্যেও তা সমান বিদ্যমান।

বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে দেশে ঘটে যাওয়া বিবিধ ঘটনার সন্ধান পেয়ে থাকেন যদি কেকেআর অলরাউন্ডার, নিঃসন্দেহে খুশি হবেন। বাংলাদেশে ফোন করে যা জানা গেল।

বিশ্বকাপ ফুটবল থেকে মনন সাময়িক সরেছে বাংলাদেশ জনতার। সিএসকে ও আরসিবি ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং বিস্ফোরণের পর ব্রাজিলমুখী বাংলাদেশ জনতা আবার সাকিব-মুখী।

মিডিয়া আপাতত ‘যুদ্ধবিরতি’-র পথে। বলা হচ্ছে, সাকিব ডিপ্লোম্যাসির ধার ধারেন না, তাই মিডিয়ার সঙ্গে মাঝেমধ্যে লেগে যায়। কিন্তু পারফর্মার সাকিবকে বরাবর সম্মান করে বাংলাদেশ মিডিয়া। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা পারফর্মার ছিলেন, আছেন, থাকবেন।

ওপারের আমজনতা, ক্রিকেটমহলের মতো কূটনৈতিক জগতও সাকিবে বিভোর। শোনা গেল, শুক্রবার ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে প্রদর্শনী ম্যাচ ছিল বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের। শেষোক্তরা জিতে যাওয়ায় প্রতিপক্ষের সরস মন্তব্য এসেছে, “বাহ্, ও দিকে সাকিব জেতাতে শুরু করল, আর আপনারাও জিততে শুরু করলেন। কোনও বারই তো জেতেন না!”

শুনলে আশ্চর্যই লাগবে। যে বাংলাদেশ জনতা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিমের বিশ্রী পারফরম্যান্সের পর সাকিবকে দুরছাই করেছে, সেই জনতাই নাকি বর্তমানে আক্ষেপ করছে। আক্ষেপের কারণ রবিন উথাপ্পা! বলা হচ্ছে, সাকিব যে দিন রান করছেন, অলরাউন্ড পারফর্ম করছেন, সে দিন উথাপ্পাও কিছু না কিছু করে দিচ্ছেন। কৃতিত্ব সাকিবের কখনও একক থাকছে না।

কেকেআর যা মানে না। টিমের সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ বলছেন, উথাপ্পা ওপেনে এসে অবিশ্বাস্য ফর্ম দেখাচ্ছেন, টিমকে জেতাচ্ছেন, ঠিক। কিন্তু সাকিবের গুরুত্ব অন্য রকম। বল হাতে মাঝে মাঝে তিনি সুনীল নারিনের চেয়েও কৃপণ। আগে প্রতিপক্ষকে নারিনের চারটে ওভার দেখে খেলতে হত, এখন সাকিবেরও হচ্ছে। প্লাস, মিডল অর্ডারকে নির্ভরতা দেওয়া। সিএসকে এবং আরসিবি দু’টো ম্যাচে সাকিব শুধু মিডল অর্ডারকে নির্ভরতা দেননি, খুনে ব্যাট করে ম্যাচ অনেক আগে শেষ করে দিয়েছেন।

যে প্রসঙ্গ উত্থাপনে মগুরার ছেলে হাসেন। বলে দেন, “আমার কাজটাই তাই। ব্যাট ও বল দু’টোই ভাল করে করতে হবে। রবিনের সঙ্গে গতকাল একটা ভাল পার্টনারশিপ দরকার ছিল। জানতাম, সেটা হলে রানটাও উঠবে।” সঙ্গে আরও যোগ করেন, “রবিনের অবিশ্বাস্য ফর্ম টিমের মজ্জায় বিশ্বাস ঢুকিয়ে দিয়েছে যে, আমরা নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী খেললে যে কাউকে হারিয়ে দেব।” কিন্তু প্রথম সাত ম্যাচের পাঁচটায় হারে যে টিম, তারাই আবার পরের ছ’টার ছ’টায় জেতে কী ভাবে? এ বার সাকিবের উত্তর, “দেখুন, আমরা জানতাম কাজটা কঠিন। কিন্তু ম্যাথমেটিক্যালি পসিবল। সবচেয়ে বড় কথা, ২০১২-এ আমরা এ রকমই করেছিলাম। টানা সাতটা ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। বিশ্বাস ছিল, দু’বছর আগে পারলে দু’বছর পরেও পারব। আশা করি কাপটাও জিততে পারব।”

সাকিব আল হাসান আবার কলকাতাকে জিতিয়ে দেশে ফিরবেন কি না, সময় বলবে। কিন্তু তাঁর বর্তমান প্রাপ্তিও খুব খারাপ নয়।

সোনালি-বেগুনি জার্সিতে তিনি নামলেই ঢাকায় টিভি শো-রুমের সামনে আবার গিজগিজে ভিড়, এফএম চ্যানেলের ম্যাচের কমেন্ট্রি জোরে বাজিয়ে দেওয়া, তিনি বাউন্ডারি মারলে তুমুল উল্লাস, চায়ের দোকানে-আড্ডায় আবার তিনি তর্কের বিষয়বস্তু। বৃহস্পতিবারের ঢাকায় যা ঘটল।

দেড় মাস আগে ওপার বাংলার ক্রিকেট-বন্দির কাছে এ-ও বা কম কী?

জিতে ভেসে থাকল মুম্বই

নিজস্ব প্রতিবেদন

দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে ১৫ রানে হারিয়ে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ১৩ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে মুম্বই এখন লিগ টেবলে পাঁচে। অন্য ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে এক নম্বরেই থাকল কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। এ দিন ওয়াংখেড়েতে আগে ব্যাট করে মাইক হাসি (৫৬) এবং লেন্ডল সিমন্সের (৩৫) সৌজন্যে ১৭৩ তোলে মুম্বই। জবাবে কেভিন পিটারসেন (৪৪) এবং জাঁ পল দুমিনি (৪৫ নট আউট) লড়লেও ১৫৮-৪ স্কোরে শেষ হয় দিল্লির ইনিংস। সন্ধেয় মোহালিতে আগে ব্যাট করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলহীন পঞ্জাব তোলে ১৭৯-৪। রাজস্থান কুড়ি ওভারে ১৬৩-৮-এই আটকে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rajarshi gangopadhyay ipltag
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE