Advertisement
১০ জুন ২০২৪

রাফা ও উকুন ভরসা মেক্সিকোর

উকুনের কামড়েই কি ব্রাজিলে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হবে ডাচদের? নাকি আগামী রবিবার সেই উকুন বধের স্প্রে নিয়েই ফোর্তালেজার এস্তাদিও কাস্তেলাও স্টেডিয়ামে জিওভানি-পেরাল্টাদের বিরুদ্ধে নামবেন লুই ফান গল! তবে এই উকুনের ক্যারিশমাও কম নয়। এ বারের বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগ দাপিয়ে বেড়ানোর পর নক-আউটের আগে এই উকুনকে নিয়েই আলোচনা সর্বত্র। বলা হচ্ছে রবেনদের বিশ্বকাপ অভিযান একাই থামিয়ে দিতে পারে ‘ দ্য লাউস’।

গোলকিপার ওচোয়াকে জড়িয়ে সেলিব্রেশন ‘পিয়োখো’র। ছবি: এএফপি

গোলকিপার ওচোয়াকে জড়িয়ে সেলিব্রেশন ‘পিয়োখো’র। ছবি: এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০৩:২১
Share: Save:

উকুনের কামড়েই কি ব্রাজিলে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হবে ডাচদের? নাকি আগামী রবিবার সেই উকুন বধের স্প্রে নিয়েই ফোর্তালেজার এস্তাদিও কাস্তেলাও স্টেডিয়ামে জিওভানি-পেরাল্টাদের বিরুদ্ধে নামবেন লুই ফান গল!

তবে এই উকুনের ক্যারিশমাও কম নয়। এ বারের বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগ দাপিয়ে বেড়ানোর পর নক-আউটের আগে এই উকুনকে নিয়েই আলোচনা সর্বত্র। বলা হচ্ছে রবেনদের বিশ্বকাপ অভিযান একাই থামিয়ে দিতে পারে ‘ দ্য লাউস’।

কে এই বিশ্বকাপের উকুন? ইনি আর কেউ নন, মেক্সিকোর কোচ মিগুয়েল আর্নেস্তো হেরেরাজয়োচ্ছ্বাসের জন্য স্প্যানিশে তাঁর দেশের লোক তাকে ডেকে থাকে ‘পিয়োখো’। ইংরেজিতে যার অর্থ দ্য লাউস। আর গোদা বাংলায় উকুন।

সোমবার রাতে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-১ হারানোর পর গোলকিপার ওচোয়া এবং দলের বাকিদের নিয়ে মিগুয়েলের ‘সেলিব্রেশন’ ইতিমধ্যেই ইউটিউবে অন্যতম বিনোদন-ক্লিপিং। গ্রুপে ব্রাজিল থেকে ক্যামেরুন সকলেই সয়েছে এই উকুনের জ্বালা। এ বার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে সামনে রবেন-ফান পার্সির নেদারল্যান্ডস। সেই বাঁধা পেরোনো যাবে? সাংবাদিকদের কাছে এই প্রশ্ন শুনেই ‘এল ত্রি’ (এই নামেই জাতীয় দলকে আদর করে ডাকে মেক্সিকোর সমর্থকরা) কোচ পিয়োখোর পাল্টা কামড়, “নেদারল্যান্ডস ভাল খেলছে। কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে মাঠে নামলে আমাদের পা কিন্তু কেঁপে যাবে না। বিশ্বকাপে আমাদের ভাল দিন আসছে।”

গত অক্টোবরে মেক্সিকোর জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু তিনি আসার পরেই রাফায়েল মার্কেজ থেকে জিওভানি দস সান্তোস, আন্দ্রেস গুয়ার্দাদো থেকে জেভিয়ার হার্নান্দেজসকলেই এক বাক্যে স্বীকার বলছেন, কোচের আবেগই বিশ্বকাপে প্রতি ম্যাচে তাতিয়ে তুলছে তাঁদের।

কিন্তু এ বার শক্তিশালী ডাচদের বিরুদ্ধে কী হবে? কোচের মতোই আত্মবিশ্বাসী জেভিয়ার ‘চিচারিতো’ হার্নান্দেজ। বলছেন, “পিয়োখোর মগজটাই আমাদের পাওয়ার হাউজ।” তার পরেই বলছেন, “আমাদের দলের থিমক্ষমতা থাকলে দয়া করে মাঠে আমাদের মেরে দেখাও। আমরা কিন্তু তৈরি। প্রি-কোয়ার্টারের লড়াই সহজ হবে না। আমরা বিশ্বের সেরকা দল হয়তো নয়। কিন্তু আমাদের তুড়ি মেরে হারানো যাবে না।”

ফুটবল বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ব্রাজিলের আবহাওয়া এবং পরিবেশে ডাচদের চেয়ে সুযোগ পাবে মেক্সিকানরাই। তাই গ্রুপ লিগের মতোই মাঠ জুড়ে পেরাল্টাদের আক্রমণাত্মক ফুটবল বজায় থাকবে শেষ ষোলোর লড়াইতেও। সঙ্গে পাঁচ জনের জমাট ডিফেন্স - তিন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ফ্রান্সিসকো রদরিগেজ, হেক্টর মোরেনো, রাফায়েল মার্কেজ। দুই উইং ব্যাক মিগুয়েল লেউন আর প আগুলইলার পালা করে বল জুগিয়ে যান আক্রমণ ভাগে। আর গোলে ওচোয়ার বিশ্বস্ত হাত।

তবে মেক্সিকো কোচ মিগুয়েল হেরেরা বলছেন, “ডাচদের হারাতে গেলে নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে দস সান্তোস, জেভিয়ার হার্নান্দেজ, রাফায়েল মার্কেজ ত্রিভুজকে। সোমবার রাতে ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে দীর্ঘ এক বছর পর গোল করে ফের ছন্দে জেভিয়ার হার্নান্দেজ। সান্তোসও মুখিয়ে রয়েছেন ডাচদের জবাব দিতে। আর লিবেরো রাফায়েল মার্কেজ? গোলকিপার ওচোয়া এই বিশ্বকাপে মেক্সিকোর রক্ষণকে ২২ বার বিপন্মুক্ত করার ( ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ৯, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ৮, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ৫ বার) এই কারিগরের সম্পর্কে বলেই দিয়েছেন, “ওই আমাদের পাওয়ার হাউজ।” জেভিয়ার হার্নান্দেজ আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, “গোল করতেও ভরসা মার্কেজ। আবার গোল বাঁচাতেও। রবেন, ফান পার্সিদের বিরুদ্ধে রাফাই আমাদের ঢাল।”

রাফা নিজে কি বলছেন? তিনি যদিও সেই উকুন দেখাচ্ছেন। বলছেন, “পিয়োখো গোটা দলকে বুঝিয়েছে, আমরা ইতিহাস গড়তে পারি। সেটা করার জন্যই লড়াই শুরু নক-আউটে।”

বিশ্বকাপে মেক্সিকোর এখনও পর্যন্ত সেরা কৃতিত্ব ১৯৭০ আর ১৯৮৬ তে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। এ বার কি নতুন ইতিহাস গড়ার পালা?

ব্রাজিলের গ্রুপ থেকে অপরাজিত অবস্থায় নক আউটে যাওয়া ‘এল ত্রি’ সমর্থকদের ভরসা রাফা আর তার উকুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fifaworldcup mexico rafa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE