Advertisement
E-Paper

রাহানের দাপটে লর্ডস উইকেটের রং বদলের ইঙ্গিত

কয়েক দিন ধরে টেস্ট উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডে যে রকম সমালোচনার ঝড় চলছিল, বৃহস্পতিবার লর্ডসে প্রথম দিনের খেলার পর এ বার বোধহয় সেটা থামবে। ইংল্যান্ডের সেই চিরপরিচিত সবুজ স্যাঁতসেঁতে উইকেট যখন ফিরে এসেছে, তখন ইংরেজ পেসার ও সমর্থকদের মুখেও হাসি ফিরে আসার কথা। লর্ডসে প্রথম দিন দ্বিতীয় সেশনে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ধস নামা দেখে সাহেবরা নিশ্চয়ই বেশ স্বস্তি পেয়েছিল। তবে শেষ বেলায় দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করে তাঁদের অস্বস্তির সূচক বাড়িয়ে তুলল রাহানে।

দীপ দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০৩:০৬
ধোনিদের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে একমাত্র উজ্জ্বল মুখ। লডর্সে সেঞ্চুরির পরে অজিঙ্ক রাহানে। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

ধোনিদের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে একমাত্র উজ্জ্বল মুখ। লডর্সে সেঞ্চুরির পরে অজিঙ্ক রাহানে। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

ভারত ২৯০-৯

কয়েক দিন ধরে টেস্ট উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডে যে রকম সমালোচনার ঝড় চলছিল, বৃহস্পতিবার লর্ডসে প্রথম দিনের খেলার পর এ বার বোধহয় সেটা থামবে। ইংল্যান্ডের সেই চিরপরিচিত সবুজ স্যাঁতসেঁতে উইকেট যখন ফিরে এসেছে, তখন ইংরেজ পেসার ও সমর্থকদের মুখেও হাসি ফিরে আসার কথা। লর্ডসে প্রথম দিন দ্বিতীয় সেশনে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ধস নামা দেখে সাহেবরা নিশ্চয়ই বেশ স্বস্তি পেয়েছিল। তবে শেষ বেলায় দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করে তাঁদের অস্বস্তির সূচক বাড়িয়ে তুলল রাহানে।

প্রথম টেস্ট চলাকালীন ইংল্যান্ডেই ছিলাম। তাই উইকেট নিয়ে নিন্দেমন্দর ঝড়টা রীতিমতো টের পেয়েছি। ওখানেই শুনলাম, কেন উইকেটের এই হাল। আসলে গত দু-তিন বছর অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে ইংল্যান্ডে। যার ফলে মাটি অতিরিক্ত আর্দ্র থেকে যাচ্ছে। ফলে ভেজা উইকেটের জন্য এই সময় বেশির ভাগ ম্যাচই হচ্ছিল না। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ওখানকার বেশিরভাগ উইকেটের নীচেই নাকি বালির স্তর পেতে দেওয়া হয়েছে। ফলে বহু পিচের চরিত্র শুকনো আর পাটা হয়ে গিয়েছে। প্রথম টেস্টে বোধহয় এমনই কোনও এক উইকেট দেওয়া হয়েছিল।

লর্ডসের উইকেটটা অবশ্য অন্য রকমের। এখানে প্রথম দিন পেসারদের খুশি হওয়ার মতো অনেক কিছুই ছিল। এমনটা থাকলে আমাদের ভুবনেশ্বর, শামিরাও হয়তো হাসবে। কিন্তু ভারত যেখানে গোড়ায় গলদ করে বসে রয়েছে, সেখানে উইকেটটা আর বড় ফ্যাক্টর নয়।

গোড়ায় গলদটা কী? যখন এক জনই স্পিনার রাখা হচ্ছে দলে, তখন আমার প্রশ্ন, অশ্বিনকে বসিয়ে রাখার মানে কী? অশ্বিন নিঃসন্দেহে জাডেজার চেয়ে বেশি উপযোগী স্পিনার। ব্যাটসম্যান হিসেবেও অশ্বিন নিজেকে যথেষ্ট প্রমাণ করেছে। তাই অশ্বিনকেই প্রথম এগারোয় রাখা উচিত ছিল। দ্বিতীয় ভুলটা হল, স্টুয়ার্ট বিনিকে আট নম্বরে নামানো। যে ছেলেটা মূলত ব্যাটসম্যান, তাকে কেন ছ’নম্বরে নামানো হচ্ছে না, তার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না আমি। সবচেয়ে বড় কথা, যে ছেলেটা আগের টেস্টেই একটা ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলেছে, তাকে তো দু’ধাপ উপরে খেলানোই যেত। ধোনির আসা উচিত সাতে ও জাডেজার আটে। এই দুই সিদ্ধান্তের পিছনে ধোনির পরিকল্পনা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে।

লর্ডসে ভারতের ব্যাটিং-ধস। বৃহস্পতিবার। কোহলি, পূজারা, ধোনি ও জাডেজা।

ছবি: এএফপি, রয়টার্স ও গেটি ইমেজেস। সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

লর্ডসের এই উইকেটে মুভমেন্ট বেশি। এবং এই ব্যাপারটাকে কাজে লাগিয়েই অ্যান্ডারসনরা ভারতীয় ইনিংসে ধস নামাল। লাঞ্চে ৭৩-২ থেকে চায়ের বিরতিতে ১৪০-৬। সকালে যখন অ্যান্ডারসন (৪-৫৫) পরপর পাঁচটা মেডেন ওভার করেছে, যখন প্রথম দশ ওভারে ভারত ১৬ রান তুলল, তাও ধবনের উইকেট খুইয়ে, তখনই বোঝা গিয়েছিল ভারতের কাছে ইনিংসটা কঠিন হতে চলেছে। শেষ দিকে রাহানে ও ভুবি ৯০-এর পার্টনারশিপটা খেলল বলে ভারতের রান ২৯০ পর্যন্ত পৌঁছতে পারল। কিন্তু দিনের শেষ দিকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের এই লড়াই, বিশেষ করে রাহানে-রাজ (১০৩) দেখার পর মনে হচ্ছে উইকেটটা ক্রমশ ব্যাটসম্যানদের পছন্দসই হওয়ার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে। গত চার-পাঁচ বছর ধরেই আমি রাহানের ভক্ত। ওর নিখুঁত টেকনিক দেখে মনে হয়, রাহুল দ্রাবিড়ের ধারে কাছে যদি কেউ যেতে পারে, তা সে এই ছেলেটাই। এ দিনও সেটাই দেখলাম। বিধ্বংসী অ্যান্ডারসন, ব্রডদেরও এত সাবলীল ভাবে সামলে নিল, এক বারের জন্যও মনে হল না ওর কোথাও অসুবিধা হচ্ছে। ওর এই ব্যাপারটাই অন্যদের চেয়ে ওকে আলাদা করে দেয়।

রাহানেই দেখাল দ্বিতীয় দিন লাঞ্চের পর থেকে হয়তো এই উইকেটে ব্যাট করা আরও সোজা হবে। তাই ভারতের শেষ দুই ব্যাটসম্যান শামি ও ইশান্তকে শুক্রবার সকালে রানটা টেনেটুনে তিনশোর উপর নিয়ে যেতে হবে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলার জন্য।

rahane india-england test lords test century deep dasgupta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy