অলঙ্করণ: বিমল দাস।
স্যাটারডে নাইটে কলকাতা তুমি কার? মাস্টার, না দাদার? সচিন, না সৌরভের?
আইপিএলের পর একই বছরে আইএসএল ট্রফির ‘ডাবল’ তাজ কি আজ পাবে খেলার শহর কলকাতা?
ডান-বাম, পেলে-মারাদোনা, ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল, বার্সা-রিয়াল নিয়ে বাঙালির কচকচি আজ তোরঙ্গে তালা-চাবি মারা। আরবসাগরের তীরে সচিন-সৌরভের ফুটবল ফাইনালের দিন সন্দেশখালি থেকে সান্দাকফুর ‘রিং টোন’আটলেটিকো দে কলকাতা, লিখবে নতুন রূপকথা!
২০ ডিসেম্বর, ২০১৪— এই একটা দিনের জন্য কলকাতা তার হৃদয় থেকে সরিয়ে রাখছে হয়তো কোনও সচিন রমেশ তেন্ডুলকরকেও! এই একটা দিন কলকাতা গলা ফাটাতে তৈরি স্রেফ কলকাতার জন্য।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় যেমন বলেই দিলেন, “টিভিতে ম্যাচ দেখব। যতই সচিন ফাইনালটায় জড়িয়ে থাকুক না কেন, সৌরভের দলের নামটাই তো আমার শহরের নামে। সূক্ষ্ম সমর্থন তো থাকবেই আটলেটিকোর জন্য।” এক বছর আগে কলকাতায় সচিনের শেষ টেস্টে যিনি আক্ষেপ করেছিলেন, “একটা যুগ থেমে গেল”, সিএবির সেই কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলছিলেন “ম্যাচ তো দেখবই। সচিন-সৌরভ বাদ দিন। আমার শহর ফাইনাল খেলছে। আর অন্য কিছু নিয়ে ভাবছিই না।”
যিনি দিন কয়েক আগেই সম্ভবত প্রথম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, “ফাইনালটা আমার দাদা আর ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারের মধ্যে হবে,” সেই প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় শনিবার সকালটা ব্যস্ত থাকবেন নিজের নতুন ছবির প্রচারকার্যে, দুর্গাপুরে। তবে বিকেলের মধ্যেই শহরে ঢুকে ছেলেকে নিয়ে বসে পড়বেন সোজা টিভির সামনে। গার্সিয়াদের প্রতিটা হোম ম্যাচেই মাঠে ছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। তিনি মুম্বই থেকেই বললেন, “আমার ছবির কাজ আছে। মাঠে যেতে পারব না। তবে সন্ধে সাতটা থেকে কেউ আমাকে পাবে না। তখন আমি কলকাতার। আটলেটিকোর। সৌরভের...!”
তারকা মহল তো আছেই। শহরের ফুটবল-পাগল সাধারণ নাগরিক এখন থেকেই প্রহর গুণছেন, কখন প্রথম আইএসএল ট্রফিটা ঘরে আসবে। বীরেন রায় রোডের বিখ্যাত বাসিন্দার খেলোয়াড়জীবন থেকেই নানা স্টান্ট দেখিয়ে আসছেন চৌরাস্তার দুই ভাই রতন ও বাবলু হালদার। তাঁরা শুনিয়ে দিলেন সেলিব্রেশনের প্রস্তুতি পর্ব: গোটা পাড়া লাল-সাদা পতাকায় সাজানো, জায়েন্ট স্ক্রিনের সামনে কৃত্রিম মাঠ, গোলপোস্ট, পাড়ার সবার একসঙ্গে বসে ম্যাচ দেখা আর জিতলে খিচুড়ি-আলুর দম দিয়ে পিকনিক। শহরে আটলেটিকোর আস্তানা ছিল নিউ টাউনের যে হোটেল, তার এক কর্মী জানাচ্ছেন, হোটেলের পানশালায় জায়েন্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা থাকছে। টিম হোটেলের চার দেওয়ালের মধ্যেই যেন আটলেটিকোর গ্যালারি!
তবে এ সবের মধ্যে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, শহর জুড়ে আইএসএল-জ্বরে কি ব্যাকফুটে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল মহমেডান নিয়ে বাঙালির আবেগ? মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র মানতে নারাজ, “কলকাতার তিন বড় ক্লাবের নাম বুকে লিখে বাঙালি জন্মায়। ও সব ভাবছিই না। আইএসএল দশটা বছর চলুক, তার পর দেখব।” মহমেডান সচিব মইন বিন মকসুদের কথায় “তিন প্রধান ছিল, আছে, থাকবে। আইএসএলের দাপটে ফিকে হবে না।” ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারের মন্তব্য, “২৫ জানুয়ারি মাঠে আই লিগের ডার্বিতে আসুন। জবাবটা গ্যালারিই দিয়ে দেবে!”
নিয়ম পাল্টাচ্ছে আইএসএলের
রতন চক্রবর্তী • মুম্বই
আইএসএলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত কর্তারা পরের পার ফুটবলারদের নিলামই তুলে দিচ্ছেন।
মেহতাব হোসেনকে চাইলে পরের বার দলে নিতে পারে সৌরভের আটলেটিকো দে কলকাতা! আবার ইচ্ছে করলে পরের বার লুই গার্সিয়াকে নিতে পারে সচিনের কেরল ব্লাস্টার্স।
পরের মরসুমে আইএসএলের দল গড়ার যে নিয়ম চালু করতে চলেছেন আইএমজিআর কর্তারা, তাতে এটা হতেই পারে। কিন্তু শর্ত থাকছে ফুটবলারটির সঙ্গে দু’বছর বা তার বেশি চুক্তি আছে কী না? চুক্তি থাকলে সেই টিম তাঁকে ছাড়তে রাজি থাকলে তবেই দল বদলানো যাবে। পরের বার দল গড়ার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পাশাপাশি টিম গড়ার ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট টাকা বেঁধে দেওয়া হবে প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজির জন্য। সংগঠকরা আর ফুটবলার প্যানেল তৈরি করে নিলামের ঝামেলায় যেতে চাইছেন না। কারণ প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইছে নিজের মতো করে টিম গড়তে। রিলায়্যান্স সূত্রের খবর, অনেক নামী বিদেশি তারকাই পরের বার এদেশে খেলতে আসতে চাইছেন। তাতে না কি জিনেদিন জিদানও থাকতে পারেন বলে খবর। তবে পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করছে ফেডারেশন কবে টুর্নামেন্ট করার জন্য সময় দেয় তার উপর।
এরই মধ্যে ফেডারেশনের কার্যকর কমিটির সভা বসতে চলেছে মুম্বইতে। যা খবর, বর্ষসেরা ফুটবলারের দৌড়ে এগিয়ে সুনীল ছেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy