ম্যাচের সেরা লুসিয়ানো
মহমেডান-২ (তারো, লুসিয়ানো-পেনাল্টি)
রাংদাজিদ-১ (র্যান্টি)
রাংদাজিদকে হারানোর পরেও স্বস্তি পাচ্ছিলেন না সঞ্জয় সেন। মন পড়ে ছিল সুদূর পুণেতে। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল মুম্বই এফসি-চার্চিল ব্রাদার্স।
সুভাষ ভৌমিকের চার্চিলের হারের খবর আসার পর অবশ্য কিছুটা হলেও স্বস্তি সঞ্জয়ের গলায়। তবু সতর্ক মহমেডান কোচ বলছেন, “আমাদের টিমটার ধারাবাহিকতার বড় অভাব। ইয়াকুবুদের কাছে চার্চিল হেরে যাওয়ায় কিছুটা সুবিধে মহমেডান পেল ঠিকই। তবে আমাদের তো পরের দু’ম্যাচ জিততেই হবে। এটা ভুললেও তো চলবে না।”
আই লিগের সাপ-লুডোর লড়াইয়ে একটা সময় মনে হয়েছিল, রাংদাজিদের অবনমন নিশ্চিত। কিন্তু শিলংয়ের দলটি টানা চার ম্যাচে ডেম্পো, বেঙ্গালুরু, ইউনাইটেড, মোহনবাগানকে হারিয়ে লিগ তালিকার উপরের সারিতে উঠে এসেছিল। রবিবার পাহাড়ের সেই দলকে আটকে দিয়েই মহমেডান সাময়িক অক্সিজেন পেল ঠিকই, তবু অবনমনের আশঙ্কা তীব্র আকারেই থেকে গেল সাদা-কালো ড্রেসিংরুমে।
ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে দলের খারাপ হালের জন্য মহমেডান কর্তাদের কাঠগড়ায় তুলেছিলেন পেন-লুসিয়ানোরা। সেই কর্তাদের চালেই কিন্তু কার্যত র্যান্টিদের বোতল-বন্দি করতে সক্ষম হন রাকেশ মাসি-মেহরাজরা। যুবভারতীতে পাহাড়ি দলের বিরুদ্ধে দুপুর তিনটেয় খেলা ফেলে মহমেডানের কিছুটা হলেও সুবিধে করে দিয়েছিলেন কর্তারাই। আর রাংদাজিদও এ দিন গরমে শুধু হাঁসফাঁস করে গেল। নিজেদের আসল খেলাটাই যেন ভুলে গিয়েছিলেন র্যান্টিরা। রাংদাজিদের কোচ হেরিং ম্যাচের পর বলেও দিলেন, “এখানকার অসহ্য গরমই আমাদের শেষ করে দিল।” রাংদাজিদের বিরুদ্ধে ৭-১ জিততে পারত মহমেডান। যদি না পেন আর জোসিমার মিলে গোল নষ্টের ধারা অব্যাহত রাখত।
ম্যাচের একেবারে শুরুতে অবশ্য মহমেডান ডিফেন্সের ভুলেই এগিয়ে যায় রাংদাজিদ। লালনুনপুইয়ার ফিরতি শট ধরে মেহরাজদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দলকে ১-০ এগিয়ে দেন গোল-সন্ধানী র্যান্টি। এর পর অবশ্য নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার গোল করতে না পেরে গোটা ম্যাচে মারামারি করে গেলেন। কখনও মহমেডানের স্টপার লুসিয়ানোর সঙ্গে, কখনও কিপার লুইস ব্যারেটোর সঙ্গে। রেশ থেকে গেল ম্যাচের পরেও। লুইস ব্যারেটো আর র্যান্টির প্রায় হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কোনও মতে দু’দলের ফুটবলার ও কোচ মারমুখী দুই ফুটবলারকে সামাল দেন।
যে জাপানি মিডিওকে এ দিন প্রথম একাদশেই রাখেননি সঞ্জয়, বসন্ত সিংহের পরিবর্তে মাঠে নেমে সেই তারোই ম্যাচের রং বদলে দেন। বক্সের বাঁ দিকের কর্নার থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে বিশ্বমানের গোল করে বিরতির আগে শুধু দলের সমতাই ফেরাননি, গোটা মাঝমাঠকে দায়িত্ব নিয়ে সচল রাখলেন। আক্রমণে ঝড় তুললেন। সঞ্জয় বলছিলেন, “তারোকে পরে নামানোটা আসলে আমার স্ট্র্যাটেজি ছিল।”
২২ ম্যাচে মহমেডানের পয়েন্ট ২১। মুম্বই এফসি-র কাছে হেরে যাওয়ায় চার্চিলের পয়েন্ট দাঁড়াল ২১ ম্যাচে ১৯। মোহনবাগানের সঙ্গে ড্র করেও ইউনাইটেড (২২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট) রয়েছে অবনমনের আওতায়। রাংদাজিদও চাপে। একটি ম্যাচ বাকি। লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে। র্যান্টিদের পয়েন্ট ২৪। যুবভারতী ছাড়ার আগে ক্ষুব্ধ র্যান্টি বলে গেলেন, “রেফারি আমাদের হারিয়ে দিল। মহমেডানের পেনাল্টিটা ছিলই না।’’ মহমেডানও রেফারির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছে।
মহমেডান: ব্যারেটো, ফুলচাঁদ, মেহরাজ, লুসিয়ানো, ধনরাজন, বসন্ত (তারো), রাকেশ, মণীশ, পেন (স্যামসন), অসীম (ইসফাক), জোসিমার।
ইয়াকুবুর হ্যাটট্রিক, আই লিগে টিকে গেল মুম্বই এফসি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে ৪-২ জিতে অবনমনের আওতা থেকে বেরিয়ে আসল মুম্বই এফসি। তাদের পয়েন্ট ২৩ ম্যাচে ২৮। এ দিন খালিদ জামিলের দলের জয়ের পেছনে যে ফুটবলারের হাত সবচেয়ে বেশি, তিনি ৩৭ বছরের ইউসুফ ইয়াকুবু। প্রায় প্রতি ম্যাচেই গোল করে চলেছেন ইয়াকুবু। সুভাষ ভৌমিকের দলের বিরুদ্ধে এ দিন হ্যাটট্রিক করেন তিনি। মুম্বইয়ের হয়ে ৪-২ করেন শেহনাজ সিংহ। চার্চিলের হয়ে দু’টি গোল অ্যাশলে ফার্নান্ডেজ এবং জয়সন ভেলসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy