Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হামলার ভয়ে নিজভূম থেকে পরবাসী বিধায়ক

মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পুলিশি ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেও জগদীশ পরিস্থিতি দেখে তবেই ঘরে ফিরবেন বলে ঠিক করেছেন। 

বিধানসভায় জগদীশ বর্মণ বসুনিয়া। —নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভায় জগদীশ বর্মণ বসুনিয়া। —নিজস্ব চিত্র।

রবিশঙ্কর দত্ত ও নমিতেশ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০১:৩৬
Share: Save:

ভোটে কিন্তু তৃণমূলকে এগিয়েই রেখেছিল কোচবিহারের প্রান্তিক বিধানসভা কেন্দ্র সিতাই। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের দিন থেকে সেখানে সংঘর্ষ চলছে। তখন থেকেই এলাকা ছাড়া সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মণ বসুনিয়া। এর মধ্যে সেখানে তাঁর বাড়ি আক্রান্ত হয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময়ে সপরিবার ঘরছাড়া থাকার পরে বুধবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পুলিশি ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেও জগদীশ পরিস্থিতি দেখে তবেই ঘরে ফিরবেন বলে ঠিক করেছেন।

রাজ্যে পরিবর্তনের আগে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে এসে সিতাইয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন জগদীশ। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে তাঁকে টিকিট দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে জেতেন তিনি। সিতাই তখন থেকে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। এ বারের লোকসভা ভোটে দেখা গিয়েছে, ছবি বিশেষ বদলায়নি। তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারী এখান থেকে ‘লিড’ নিয়েছেন ৩৫ হাজার ভোটে। তবু জগদীশকে ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হচ্ছে কেন? সিতাইয়ের স্থানীয় মানুষের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চূড়ান্ত দাপট দেখিয়েছিলেন জগদীশ। তাতে তৃণমূলের লোকেরাও চটেছে তাঁর উপরে। ভোটের পরে এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিল তৃণমূলের যে প্রতিনিধিদলটি, তাদের সিতাইয়ে নাঢুকেই ফিরতে হয়েছে। সেই দলে জগদীশ ছিলেন না। তবু সেই রাতেই তাঁর বাড়ি আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, সদ্য বিজেপিতে যাওয়া লোকজনই এই হামলা চালিয়েছে।

এই অবস্থায় কবে নিজের শহরে ফিরতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন জগদীশ। প্রায় এক মাস পরেও পরিস্থিতির বদল না হওয়ায় ঘরে ফেরানোর আর্জি নিয়ে এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। জগদীশবাবু বলেন, ‘‘ফল ঘোষণার পরদিন এসডিপিও ও স্থানীয় থানার ওসি আমার বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁরাই বলেন, হামলা হলে তাঁদের কিছু করার থাকবে না।’’ পুলিশের পরামর্শে তার পরেই স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কোচবিহারে চলে আসেন বিধায়ক। তারপর আর পুলিশ-প্রশাসন তাঁকে বাড়ি ফেরানোর ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা করেনি বলে তাঁর অভিযোগ। এ দিন বিধানসভায় তিনি বলেন, ‘‘অনেকবার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু করছি-করব বললেও শেষ অবধি কিছুই করা হয়নি।’’ দলের শীর্ষ স্তর থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে, পুলিশের সঙ্গে পরামর্শ করেই ফিরতে।

বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর শাসকদলের নেতারা নানা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। জগদীশবাবুও স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি করেছেন। তাই জনরোষে তিনি এলাকায় ঢুকতে পারছেন না। জগদীশবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘এ সব রটানো হচ্ছে। আমি দুর্নীতি করলে এত লোকসভা ভোটে আমার কেন্দ্রে এত এগিয়ে থাকলাম কী করে?’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Violence TMC Jagadish Barman Basunia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE