দুর্ঘটনাগ্রস্ত: তুবড়ে যাওয়াট্রাক। নিজস্ব চিত্র
ভোরের তিস্তা সেতুতে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল এক ব্যক্তির। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ একটা বালি বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে আম বোঝাই একটা ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় টিঙ্কু রায় (৩৭) নামে ট্রাকের এক খালাসির। ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে চলে আসে দু’টি ক্রেন, মিনিট পনেরোর মধ্যে ট্রাকদু’টি সরিয়ে দেওয়া হয় সেতু থেকে। কিন্তু এমন দৃশ্য রোজ দেখা যায় না বলেই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
তাঁদের দাবি, পঞ্চাশ কিমি দূর থেকে রওনা দিলেও খোঁজ নিতে হয় তিস্তা ব্রিজে যানজট রয়েছে কিনা। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া কিলোমিটার খানেক লম্বা তিস্তা সেতু নিয়ে এতটাই আতঙ্ক নিত্যযাত্রীদের মধ্যে। তাঁদের অভিজ্ঞতা, রোজই সেখানে যানজট থাকে। কখনও দুর্ঘটনা হলে অথবা সেতুতে কোনও গাড়ি বিকল হলে যানজটের মাত্রা আরও বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অচল থাকে তিস্তা সেতু। যদিও মঙ্গলবার অন্যরকম ছবি দেখলেন শহরের বাসিন্দারা। দু’টি ক্রেন এনে মিনিট পনেরোর মধ্যে একটি ট্রাককে জলপাইগুড়ি, অন্যটিকে ময়নাগুড়ি টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রাস্তা দিয়েই ঘণ্টাকয়েক পরে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। পুলিশের এই সক্রিয়তা অন্য সময়েও যাতে দেখা যায় সেই দাবি করেছেন নিত্যযাত্রীরা।
সেতুর দু’দিকেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। বালি-পাথরের স্তূপ জমে রয়েছে রাস্তার পাশে। তার মধ্যে দু’টি ট্রাক তির বেগে ছুটছিল বলে প্রতক্ষদর্শীদের দাবি। ভোরের দিকে সেতুতে যানবাহনের তেমন ভিড়ও ছিল না। গতিবেগ বেশি ছিল বলেই উল্টো দিক থেকে আসা ট্রাক আসছে দেখেও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারেননি কোনও চালকই। ট্রাক চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, দুর্ঘটনার সময় একটি ট্রাকের স্টিয়ারিং খালাসির হাতে ছিল বলে জানা গিয়েছে। ভোরবেলায় গাড়ি চালানোর সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
গত সোমবার উত্তরকন্যায় জলপাইগুড়ি জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর জোর দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাতের বেলায় ট্রাক-গাড়িগুলো হুস করে চলে যায়। ওগুলোই দুমদাম মেরে দেয়। এ সব বন্ধ করতে হবে।” তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীরই যাত্রাপথে দু’টি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় অস্বস্তিতে পুলিশ প্রশাসন।
জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তিস্তা সেতুতে কড়াকড়়ি করা হয়েছে। রাতের বেলায় জাতীয় সড়কেও নজরদারি থাকছে। চলন্ত গাড়ি থামিয়ে চালকদের সর্তক করা হবে। জেলার সব ট্রাক-গাড়ির চালকদের নিয়ে কাউন্সেলিংও করা হবে বলে পুলিশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy