প্রতীকী ছবি।
বর্ষায় পর্যাপ্ত বর্ষণ হলে এবং পুবালি হাওয়া বইলেই যেন টের পায় ওরা। সাগর থেকে ঝাঁক বেঁধে ঢুকতে থাকে নদীতে। এ বার অবশ্য বর্ষার আগেই প্রচুর বৃষ্টি পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তাই বর্ষাও কার্যত বাংলার দোরগোড়ায় এসে গিয়েছে। বর্ষার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে রুপোলি শস্যের দেখা মিলবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে অবধারিত ভাবেই।
মৎস্যবিজ্ঞানীরা জানান, সাধারণত বর্ষা জাঁকিয়ে বসার পরেই সাগর থেকে ইলিশের ঝাঁক গঙ্গায় ঢুকতে শুরু করে। কারণ, বর্ষায় মোহনার কাছে জলে নোনা ও মিষ্টতার আনুপাতিক হার বদলে যায়। সেই জন্যই জুলাইয়ে নদীর ভিতরে ইলিশের ঝাঁক ঢুকতে শুরু করে, যাকে ইলিশের পরিযানও বলা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা বসন্তকুমার দাস জানাচ্ছেন, এ বার বর্ষার সমাগমের আগেই ভাল বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। তাই যদি জুলাইয়ের আগে ইলিশের ঝাঁক ঢোকে, তা হলে সেটাকে ইলিশের পরিযানে নতুন বৈশিষ্ট্য বলা যাবে।
মৌসম ভবন মঙ্গলবার জানায়, বর্ষা বঙ্গোপসাগরের উপরে আরও গতি পেয়েছে। তৈরি হয়েছে একটি নিম্নচাপও। সেটি শক্তি বাড়াচ্ছে। সেই শক্তিশালী নিম্নচাপের হাত ধরেই চলতি সপ্তাহে রাজ্যে ঢুকতে পারে বর্ষা। রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রাক্-বর্ষা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ দিনও বৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। লাগাতার বৃষ্টিই সময়ের আগে ইলিশের আগমন নিয়ে জল্পনা তৈরি করেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক সুমিত হোমচৌধুরীও বলছেন, বৃষ্টির পরিমাণ কম হলে অনেক সময় ইলিশের পরিযান পিছিয়ে যায়। তবে এ বার গ্রীষ্মে টানা বৃষ্টি হয়েছে এবং হচ্ছে বলে তা এগিয়ে আসতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ বলছেন, লকডাউনের দরুন গঙ্গার দূষণ কমেছে। তার জেরে বাঙালির ইলিশ-ভাগ্য প্রসন্ন হতে পারে। পরিবেশবিদেরা অবশ্য তা মানতে রাজি নন। তাঁদের মতে, এ রাজ্যে গঙ্গাদূষণের প্রধান কারণ নদীতে অপরিশোধিত নিকাশি এবং বর্জ্য এসে পড়া। তা তো বন্ধ হয়নি। তা ছাড়া লকডাউন শিথিল হওয়ার ফলে ভুটভুটি, লঞ্চ চলাচলও শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই লকডাউনের সঙ্গে ইলিশের সরাসরি সম্পর্ক নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy