Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বঙ্গে ঐক্যবার্তা, বিক্ষুব্ধদেরও দায়িত্ব অমিতের

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে রাহুল সিংহকে সরাবেন না বলে জানিয়ে দিলেও, আজ কোর গ্রুপের বৈঠকের মাধ্যমে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ নেতাদের বহু দায়িত্ব দিয়ে একটি যৌথ নেতৃত্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করলেন। পুরভোটের টিকিট বণ্টন নিয়ে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লিতে রাজ্য নেতাদের ডেকে এনে আজ একটি ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪২
Share: Save:

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে রাহুল সিংহকে সরাবেন না বলে জানিয়ে দিলেও, আজ কোর গ্রুপের বৈঠকের মাধ্যমে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ নেতাদের বহু দায়িত্ব দিয়ে একটি যৌথ নেতৃত্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করলেন।

পুরভোটের টিকিট বণ্টন নিয়ে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লিতে রাজ্য নেতাদের ডেকে এনে আজ একটি ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।

আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের বাড়িতে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে অমিত শাহের তৈরি করা কোর গ্রুপের প্রথম বৈঠক হয়। সেখানে রাহুল সিংহের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গের নেতারা-সহ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুরভোটের ইস্তাহারের খসড়া চূড়ান্ত যেমন করা হয়, তেমনই স্থানীয় বিষয়গুলিকে চিহ্নিত করে কী করে এখন থেকেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করা যায়, তার কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়।

বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, দিল্লিতে বিপর্যয়ের পর বাকি ভোটমুখী রাজ্যে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিহার, কেরল, অসমের মতো রাজ্যের বিধানসভার জন্যও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনি। যাবতীয় কৌশল শুধু রাজ্যের নেতাদের উপরে ছেড়ে না-দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা

ও সঙ্ঘকেও এর মধ্যে সামিল করেছেন। যাতে কেন্দ্রীয় স্তর থেকে গোটা কৌশলের নজরদারি করা সম্ভব হয়। প্রতি মাসেই এই কোর গ্রুপের বৈঠক হবে।

কোর গ্রুপ গঠন করা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি রাহুল সিংহের ডানা ছাঁটা হল? সরাসরি জবাব এড়িয়ে বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “অমিত শাহ যে নেতাদের নিয়ে কোর গ্রুপ গঠন করেছেন, তাঁদের নেতৃত্বেই নির্বাচন লড়া হবে। বিজেপি সভাপতি সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আর পশ্চিমবঙ্গে এক সময় টিকিট দিতে চেয়েও প্রার্থী পাওয়া যেত না। সেই পরিস্থিতিতে এখন টিকিট নিয়ে মারামারি হলে বুঝতে হবে, দলের শ্রীবৃদ্ধি হচ্ছে সেখানে। তবে সংগঠনকে আরও মজবুত করতে হবে। বিরোধী দলগুলির অবক্ষয়ের সুযোগ নিতে হবে বিজেপি-কেই।”

সেই কৌশলের অঙ্গ হিসাবে আজ পুরসভার ইস্তাহারের যে খসড়া তৈরি হয়েছে, তা প্রথমে প্রকাশ করা হবে ওয়েবসাইটে। তার ভিত্তিতে আরও প্রস্তাব, পরামর্শ চাওয়া হবে ভোটারদের থেকে। তার মধ্যে কিছু সামিল করেই ইস্তাহার চূড়ান্ত করা হবে। বিধানসভা ভোটের জন্য এখন থেকেই স্থানীয় সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। বাংলার ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ১০ মে-র পর যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গে। প্রথমে শিলিগুড়ি গিয়ে তিনি বন্ধ চা-বাগানগুলি নিয়ে বৈঠক করবেন। চা-ব্যবসায়ী, শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। পর দিন কলকাতায় দলীয় সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। আলু চাষিদের সমস্যাগুলি দেখতে সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া, রাহুল সিংহরা হুগলিতে যাচ্ছেন ২৯ মার্চ। তার এক দিন পর কেন্দ্রীয় সরকারের একটি টিমও সেখানে সফর করে রিপোর্ট পেশ করবে।

বিধানসভা ভোটের জন্য গোটা রাজ্যকে সাত ভাগে ভাগ করে আজ সাত জন রাজ্য বিজেপি নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আন্দোলন ও প্রচার কমিটিও গঠন করা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকে বলা হয়েছে, আন্দোলন ও প্রচারের রূপরেখা কী হবে, তা তৈরি করার পর প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি সভাপতি বা অন্য কোন নেতাকে প্রচারের জন্য

তাঁরা চান, তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাতে। এখন থেকেই বিধানসভার প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিতেও বলা হয়েছে। যদি কোনও কেন্দ্রে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না-যায়, তা হলে অন্য দল থেকে তা খুঁজতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE