সিবিআই দফতরে এসএমএইচ মির্জা। —নিজস্ব চিত্র।
তলবি নোটিস পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে সময়মতোই নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হন প্রাক্তন পুলিশকর্তা এসএমএইচ মির্জা। এবং নারদ-কাণ্ডে টাকা লেনদেন নিয়ে টানা আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, মির্জা তাঁদের তদন্তে সহযোগিতা করছেন। তাঁকে আবার তলব করা হবে।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বর্ধমানের পুলিশ সুপার থাকাকালীন মির্জা রাজ্যের শাসক দলের কোন কোন নেতা ও সাংসদের হয়ে টাকা নিতেন, এ দিন সেই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, নারদ-কাণ্ডে মির্জার জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসার পরেও রাজ্য সরকারের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু শাসক দলের তদানীন্তন এক সাংসদ (মির্জা-ঘনিষ্ঠ) বিরোধী দলে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। নারদ স্টিং অপারেশনে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের ঘটনা সামনে আসার পরে রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছিল, আদৌ নিয়েছিল কি না, সেই বিষয়ে এ দিন মির্জাকে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা।
রাজ্য পুলিশের আর কোন কোন পদাধিকারী শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের হয়ে টাকা নিতেন, মির্জার কাছ থেকে তা-ও জানার চেষ্টা হয়েছে বলে জানান তদন্তকারীদের কেউ কেউ। সিবিআইয়ের এক কর্তা জানান, প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের যোগসাজশে বহু আর্থিক দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের মাধ্যমেই বিরাট অঙ্কের টাকা নিয়মিত পৌঁছে যেত শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীদের কাছে। সেই সব কর্তা কারা, মির্জার কাছ থেকে তা জানার চেষ্টা হয়েছে। সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, নারদ-কাণ্ডে ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনের সত্যতা রয়েছে কি না, তা যাচাইয়ের পাশাপাশি অভিযুক্তেরা ঘুষ চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না— তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
সিবিআইয়ের অন্য এক কর্তা জানান, শাসক দলের তৎকালীন যে-সাংসদ পরে বিরোধী শিবিরে যোগ দেন, তিনি ম্যাথুকে ভবানীপুরের ফ্ল্যাটে বলেছিলেন, ‘বর্ধমানে পুলিশ সুপার টাকা নেন। আপনি ওখানে টাকা দিয়ে আসুন।’ কিন্তু পুলিশ সুপার কার হয়ে টাকা নেন, সেই প্রাক্তন সাংসদ তা উল্লেখ করেননি। সেই জন্য মির্জাকে ফের তলব করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy