গত দেড় মাস ধরে তুঙ্গে উঠেছিল প্রস্তুতি। মাঝে পরীক্ষামূলক ভাবে দু’দিন বিমান ঘুরেও গিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
ঠিক ছিল, সোমবার ১ জুন থেকে সপ্তাহে চার দিন পিনাকল সংস্থার বিমান যাতায়াত করবে কোচবিহার। বহু বছর পরে আবার শুরু হবে নিয়মিত উড়ান পরিষেবা।
মাঝে এক দিন কলকাতা থেকে পুলিশ কর্তা আসেন সেই বিমানে। কোচবিহার থেকে কলকাতায় যান বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন। যাওয়ার আগে সংস্থার কর্তাদের পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন সার্থক হতে চলেছে।
কিন্তু, কার্যত তা হল না। ঠিক ছিল, কলকাতা-অন্ডাল-বাগডোগরা-কোচবিহার রুটে উড়বে ৯ আসনের বিমান। ফেরার রুট কোচবিহার-বাগডোগরা-অন্ডাল-কলকাতা।
বিমানসংস্থা জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত কলকাতা, বাগডোগরা ও কোচবিহার বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় জায়গা তাঁরা পাননি। এটা দেওয়ার কথা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। এই সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়েছে।
একটি বিমানবন্দর থেকে কোনও সংস্থা যদি উড়ান চালায়, তা হলে তাদের ন্যুনতম কিছু জায়গার প্রয়োজন হয়। একটি চেক-ইন কাউন্টার করতে হয়। তাদের কর্মী, অফিসারদের বসার জন্য ঘরের প্রয়োজন। জিনিষপত্র, বিমানের যন্ত্রাংশ রাখার আলাদা ঘর দরকার। এর কোনওটাই এই তিনটি বিমানবন্দরে পাওয়া যায়নি।
অন্ডাল নিয়ে সমস্যা নেই। কারণ, বেসরকারি এই বিমানবন্দর থেকে এখন শুধুমাত্র এয়ার ইন্ডিয়ার একটি উড়ান চলছে। তাদের অঢেল জায়গা খালি পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে পিনাকলকে কিছুটা তারা ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু, পিনাকল এর আগে কখনই যাত্রী নিয়ে নিয়মিত বিমান চালায়নি। ফলে, কলকাতা-বাগডোগরা-কোচবিহারে তারা নতুন। সেখানে নতুন করে তাদের সমস্ত কিছু লাগছে।
সংস্থার তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, তিনটি বিমানবন্দরে অচিরেই তাঁরা জায়গা পেয়ে যাবেন এবং প্রতি সোম, বুধ, শনি ও রবিবার বিমান চালাতে শুরু করবেন।
কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন অবশ্য এ দিন বলেন, “এ দিন থেকে বিমান চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে জানতে পেরেছি। কবে চালু হবে, তা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।” ঘোষণা মতো এ দিন উড়ান চালু না হওয়ায় তির্যক মন্তব্য করেছেন ফব বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম কোনও আশার আলো দেখছি না। কোনও পরিকল্পনা ছাড়া হুটহাট কিছু করে দিলেই তা সাফল্য পায় না।”
কেন চালু হল না? জানতে চাইলে বনমন্ত্রী বলেন, “কলকাতায় আছি। বিষয়টি ভাল জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
কোচবিহার চেম্বার অ্যান্ড কমার্স-এর কর্তা, তৃণমূল কাউন্সিলর ভূষণ সিংহ অবশ্য এখনও কলকাতা-কোচবিহার সরাসরি বিমান চলাচলের দাবিতে অনড়। বাগডোগরা বা অন্ডালের সঙ্গে কোচবিহারের যোগাযোগের কোনও প্রয়োজন রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন না। তিনি বলেন, “যে ভাবে বাগডোগরা, অন্ডাল ঘুরে বিমান চলাচলের পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে যাত্রী না হওয়ারই কথা। এত টাকা ভাড়া দিয়ে কেন কেউ এ ভাবে যাবে?”
ঠিক হয়েছে, এই বিমানে কলকাতা-কোচবিহার রুটে ভাড়া হবে ৬০০০ টাকা। কলকাতা থেকে অন্ডাল ১৫০০ টাকা, অন্ডাল থেকে বাগডোগরা ২৫০০ টাকা এবং বাগডোগরা থেকে কোচবিহার ১৫০০ টাকা ভাড়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy