প্রতীকী চিত্র।
দেশব্যাপী লকডাউন। প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ঘরবন্দি মানুষ। এক দিকে করোনার আতঙ্ক। অন্য দিকে, অনেকে কর্মহীন। এই পরিস্থিতিতে অনেককে গ্রাস করছে আর্থিক মন্দার আতঙ্ক। সব মিলিয়ে বিপুল মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন অনেকেই। সেই মানসিক চাপ থেকে তৈরি হতে পারে মনের রোগ বা সমস্যা। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে তাঁদের কাছে মনোবিদের সহায়তা পৌঁছনোর ব্যবস্থা করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনা খরচে রাজ্যের মানুষকে মনোবিদদের সহায়তা দেবে রাজ্য। টেলিফোনে এই কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দেবেন মনোবিদরা। তার জন্য ফোন করতে হবে ১৮০০-৩১৩-৪৪৪-২২২ অথবা ০৩৩-২৩৪১-২৬০০ নম্বরে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে একটি সময় নির্দিষ্ট করা হবে মনোবিদের সঙ্গে কথোপকথনের জন্য। মনোবিদরাও রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, “লকডাউনের সময় একঘেয়েমি আসা খুব স্বাভাবিক। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রোগের ভয়। আর এমন একটা অসুখ যা পুরোটাই অজানা-অচেনা। টিকা পাওয়া না যাওয়ার চিন্তাও রয়েছে। সব মিলিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার শঙ্কা আছেই। আইসিএমআর যে টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে মনোবিদদের সঙ্গে কথা বলে এই সংক্রান্ত অবসাদ ও বিষণ্ণতা দূর করার কথা জানিয়েছে, তাকে স্বাগত। এই ভাবে কথা বলে অনেক সময়ই রোগীর মনের অন্ধকার দূর করতে পারেন মনোবিদরা। রোগীকে বুঝতে গেলে মুখোমুখি বসাই শ্রেয়, তবে এখন উপায়ান্তর না থাকায় এই পদ্ধতিও কাজে আসবে। এই সময় সকলকেই বলব একটু ব্যায়াম করুন, মন ভাল রাখতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। প্রয়োজনে যেচে কিছু কাজ করুন। ব্যস্ততাই অবসাদ কাটানোর অন্যতম হাতিয়ার।”
মনোবিদ সুতনু লাহিড়ীর মতে, “লকডাউনের সময় টেলিকমিউনিকেশন পদ্ধতিতে আমাদের সঙ্গে কথা বলে মনের অবসাদ কাটানো সম্ভব। আত্মহত্যাপ্রবণ মন বা অন্য কোনও জটিল ব্যাধি থেকে অন্যকে মেরে ফেলার প্রবণতা, এই সব অসুখের চিকিৎসার বেলায় অনেকটা অংশ জুড়ে থাকে চিকিৎসক ও রোগীর কথাবার্তা। এ ক্ষেত্রেও সেই যোগাযোগ ক্লিনিকে না এসে টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে করা যাবে। এই ধরনের লকডাউন প্রায় কেউই এর আগে দেখেনি। যত দিন যাচ্ছে ততই অসুখের চিন্তা, চাকরির চিন্তা, ভাতের চিন্তা সবই যোগ হচ্ছে এর সঙ্গে। তাই ধৈর্য হারানো খুবই স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিতে টেলিকমিউনিকেশন পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষের মনের ভার লাঘব করা দুরূহ বা অসম্ভব নয় মোটেও।”
আরও পড়ুন: বোর্ডের মেয়াদ শেষ, প্রশাসক ববির হাতে কলকাতা, চ্যালেঞ্জের পথে বিজেপি
আরও পড়ুন: করোনায় আরও চার জনের মৃত্যু রাজ্যে, নতুন করে আক্রান্ত ১১২, জানালেন স্বরাষ্ট্র সচিব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy