Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Coronavirus

কী হবে বাগানে, প্রশ্ন রয়েই গেল  

জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার দুই জেলা প্রশাসনের তরফেই চা বাগান নিয়ে নির্দেশিকা চাওয়া হয়েছে শ্রম দফতরের থেকে।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০৬:১৮
Share: Save:

এবার সারা রাজ্যে লকডাউনের ঘোষণা হতেই উত্তরের চা বাগান নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হল। চা বাগান নিয়ে আলাদা করে কোনও নির্দেশিকা মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত কোনও জারি হয়নি। তবে প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “আলাদা নির্দেশিকার প্রয়োজন নেই। অন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন বন্ধ থাকবে, তেমনিই চা বাগানও লকডাউনের আওতায় বন্ধ থাকবে।”

জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার দুই জেলা প্রশাসনের তরফেই চা বাগান নিয়ে নির্দেশিকা চাওয়া হয়েছে শ্রম দফতরের থেকে। এ দিন বিকেল পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা আসেনি। শ্রমিক সংগঠনগুলির বড় অংশের দাবি, আজ, বুধবার থেকে কোনও বাগানে শ্রমিকেরা কাজে যাবেন না। অন্যদিকে, দুপুর পর্যন্ত মালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য ছিল, নির্দিষ্ট সরকারি নির্দেশ ছাড়া তাদের পক্ষে বাগান পুরোপুরি বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। এ দিনই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা টুইট করে অভিযোগ করেছেন, চা শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে করোনা সংক্রকমণের মধ্যেই কাজ করানো হচ্ছে। এ দিন বিকেলে রাজ্য জুড়ে লকডাউনের নির্দেশের পরে চা মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরাই শাখা লকডাউনের নোটিস দিয়েছে।

এরই মধ্যে এ দিন আলিপুরদুয়ার জেলার কোহিনূর চা বাগানের শ্রমিকেরা নিজেরাই কাজ বন্ধ করে দিলেন। তাঁরা মালিক পক্ষকে জানিয়ে দিলেন, লকডাউন চলাকালীন কাজে যাবেন না তাঁরা। এই সময়ে মজুরি, রেশন এবং অন্য পরিষেবা চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

অন্যদিকে, রায়ডাক চা বাগান ২৭ মার্চ পর্যন্ত বাগান বন্ধ করে দিল মালিক পক্ষ। শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগান এলাকায় লকডাউনের ঘোষণা মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “জেলা জুড়েই লকডাউন হবে। চা বাগান নিয়ে কী পদক্ষেপ হবে, তা আমরা শ্রম দফতরের কাছে জানতে চেয়েছি।” অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা বলেন, “চা বাগানগুলিতে শ্রমিকেরা যাতে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করেন সে ব্যাপারে আমরা নজর রাখছি।’’

চা বাগান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপাতত দুটো প্রশ্ন উঠে এসেছে। প্রথমত, বন্ধ হওয়ার পরে চা শ্রমিকদের মজুরির ভার কে নেবেন? মালিকপক্ষ, নাকি সরকার? দ্বিতীয়ত, সাতদিন অথবা তার বেশি লকডাউন থাকলে চা গাছের পরিচর্যার কী হবে? সময়ে পরিচর্যা না হলে চা গাছ বড় হয়ে যাবে। লকডাউন প্রত্যাহারের পরেও সেক্ষেত্রে পাতা তোলা সম্ভব হবে না। মালিকপক্ষের একাংশের দাবি, লকডাউন হলেও চা গাছের পরিচর্যার সুযোগ যেন দেওয়া হয়। তবে এ দিনই বাগান শ্রমিকদের মজুরি চালু রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে উত্তরের তিন জেলার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রশাসনের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই দিন এনে দিন গুজরান করা লোকেদের হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়ার কথা বলেছেন। চা শ্রমিকরাও তার আওতায় পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে খাদ্যশস্য বিনামূল্যে বিলি হবে। যাঁরা ২ টাকা কেজি দরে চাল-গম পান তাঁরাই এই সুযোগ পাবেন। চা শ্রমিকরাও এই সুবিধে পাবেন।

বিজেপি সাংসদের টুইট প্রসঙ্গে বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়ানের নেতা অসীম মজুমদার বলেন, “ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে আমরাও চাই। চা শ্রমিকদের বেতনের ব্যবস্থা করে লকডাউন হোক। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE