Advertisement
০২ মে ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

সুস্থতার হার ৯০ শতাংশ, আক্রান্তের চেয়ে সুস্থের সংখ্যা ফের বাড়ল

আক্রান্ত ও মৃত্যুসংখ্যা বেডে় চললেও, সুস্থতার হার আশা জোগাচ্ছে প্রশাসনকে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ২১:১৫
Share: Save:

রাজ্যে প্রতি দিন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন যত মানুষ, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত কয়েক দিন ধরেই এমন চলে আসছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর বুলেটিন প্রকাশ করার পর দেখা গেল, এ দিনও সেই ধারাই অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজারের কাছাকাছি মানুষ কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও, সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ। এই নিয়ে টানা পঞ্চম দিন রাজ্যে এই ছবি ধরা পড়ল।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৮২ জন। তাতে সবমিলিয়ে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭৫৪। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৩৪৯। বৃহস্পতিবারের চেয়ে ৩৬০ কম।

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৫৬ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন, গতকালের চেয়ে যা ৩ বেশি। তবে গত কয়েক দিন ধরেই মৃতের সংখ্যা ষাটের কাছাকাছে ঘোরাফেরা করছে। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩ হাজার ৭৩ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)

আরও পড়ুন: দম্ভের কারণে পরীক্ষা পিছোতে রাজি নয় কেন্দ্র: গাঁধীমূর্তি থেকে তোপ অভিষেকের

তবে আক্রান্ত ও মৃত্যুসংখ্যা বেডে় চললেও, সুস্থতার হার আশা জোগাচ্ছে প্রশাসনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ২৮৬ জন। সবমিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৩২ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৮০.৮৬ শতাংশ।

প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ১২১ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে এ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার নামছিল। বৃহস্পতিবার তা এসে ঠেকে ৭.০৬ শতাংশে। এ দিন তা সামান্য বেড়ে ৭.০৮ শতাংশ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭২৮ জনের।

দৈনিক আক্রান্ত, মৃত্যু এবং সুস্থতার নিরিখে এ দিন কলকাতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৫৫৪ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। আবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৩০ জন করোনা রোগী।

কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৭ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন রোগী। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৯৩ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৯১ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন রোগী। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৪১ জন। হাওড়ায় সংখ্যাটা

হওড়ায় এ দিন ১০০-র কম মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন করোনা রোগী। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ১৮৪ জন। হুগলিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১০ জন। মৃত্যু হয়েছে ২ জন করোনা রোগীর। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩১১ জন।

এ ছাড়াও, গত ২৪ ঘণ্টায়, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং দার্জিলিংয়ে ৩ জন করে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২ জন করে করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং জলপাইগুড়িতে। পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ১ জন করে রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

আরও পড়ুন: রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক, চলছে ফুসফুস ও কিডনির চিকিৎসা, প্রণব এখনও ভেন্টিলেটরেই​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE