‘মাথা’রা রেহাই পেয়েছিলেন আগেই। এ বার সঙ্গীরাও সকলে বেকসুর খালাস হলেন।
সবংয়ের তৃণমূল কর্মী জয়দেব জানা খুনে নাম জড়ানোর পরই দলবল নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন মানস ভুঁইয়া। তারপর মানস, তাঁর ভাই বিকাশ ভুঁইয়া এবং সবংয়ের প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অমল পণ্ডার নাম চার্জশিটে ছিল না। তবে মানস অনুগামী যে ২২ জনের নামে চার্জশিট জমা পড়েছিল, সোমবার মেদিনীপুর আদালত তাদের সকলকেই রেহাই দিয়েছে।
মামলা চলছিল মেদিনীপুরের ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পল্লব রায়চৌধুরীর এজলাসে। সাক্ষ্য দেন ১৮ জন। মামলার সরকারি আইনজীবী গৌতম মল্লিক মানছেন, ‘‘অভিযুক্ত সকলেই বেকসুর খালাস পেয়েছেন। কারও বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ ছিল না। সাক্ষীরা আদালতে এসে জানিয়েছেন, ঘটনায় কারা জড়িত তাঁরা জানেন না।’’ গৌতমবাবু তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের জেলা সভাপতি। এ দিন যাঁরা বেকসুর খালাস পেয়েছেন, তাঁদের অন্যতম সবংয়ের যুব তৃণমূল সভাপতি আবু কালাম বক্স। ইনিও ঘটনার সময় কংগ্রেসে ছিলেন। আবু কালাম বলেন, ‘‘পুলিশ ও আদালতে আস্থা রেখেছিলাম। আমরা খুশি।’’
সবংয়ের দুবরাজপুরে তৃণমূলকর্মী জয়দেব খুন হন গত বিধানসভা ভোটের দু’দিন আগে, ২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল। তখন বাম-কংগ্রেস জোট হয়েছিল। মানসদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে সরব হয়েছিল জোট। এ দিন অবশ্য মানস বলেন, ‘‘এই ঘটনায় মন্তব্যের অবকাশ নেই।’’ আর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘মিথ্যা মামলা এই সরকারের অঙ্গের ভূষণ। কিন্তু তার পরে কেউ যদি শাসকদলে নাম লেখান ও বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর গুণগ্রাহী হয়ে ওঠেন, তা হলে সাত খুন মাফের রাস্তাও খোলা।’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খোঁচা, ‘‘মামলা থেকে বাঁচতেই তো ওঁরা তৃণমূলে গিয়েছিলেন।’’
দলীয় বৈঠক সেরে ফেরার পথে জয়দেবকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। মানস-সহ বাম ও কংগ্রেসের ২৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিহতের প্রতিবেশী জয়দেব মেট্যা। মানসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল, তবে গ্রেফতার হননি। যে ১১ জন গ্রেফতার হয়েছিলেন, পরে সকলেই জামিন পান।
তার পরে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। চার্জশিট থেকে নাম বাদ পড়েছে মানস-সহ তিন জনের। পরে মানসরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সাংসদ হয়েছেন মানস। ঘটনার পরে মানসের ফাঁসির দাবিতে সরব হওয়া জয়দেবের স্ত্রী মানসীও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি এখন ডেবরা হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী। জেলা পরিষদের টাকায় পাকা বাড়ি করেছেন।
খুনের মামলায় সকলেই তো বেকসুর খালাস পেয়ে গেলেন? ফোনে প্রশ্ন শুনে থমকালেন মানসী। তারপর জবাব এল, ‘‘আমি এই ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy