প্রতীকী চিত্র।
কর্মস্থল বেঙ্গালুরু থেকে তিনসুকিয়া এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন বাবা-ছেলে। দীর্ঘ ট্রেনযাত্রায় সহযাত্রীদের চরম হেনস্থার শিকার হলেন তাঁরা। অভিযোগ, ট্রেনের মধ্যেই তাঁদের ১৬ হাজার টাকা ছিনতাই হয়ে যায়। সে ব্যাপারে খোঁজ করতে গেলে বাবা-ছেলেকেই মোবাইল চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করা হয়। আপাতত তাঁরা জখম অবস্থায় মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত তিন সহযাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, তপন থানার মালাহার গ্রামের বাসিন্দা নেপাল লোহার মাস দুয়েক আগে ১৮ বছরের ছেলে জীবনকে নিয়ে কাজে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে। সেখানে একটি সংস্থার হয়ে বহুতল তৈরির শাটারিংয়ের কাজ করেন। পরিবারের এক সদস্যের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁরা বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
সোমবার তাঁরা বেঙ্গালুরু থেকে তিনসুকিয়া এক্সপ্রেসে রওনা হন। সাধারণ কামরাতেই ছিলেন তাঁরা। নেপাল জানিয়েছেন, ওই কামরায় অসম্ভব ভিড় ছিল। তাঁর ছেলে একটি বাঙ্কে কোনও রকমে জায়গা পেয়েছিল। সে রাতেই বাঙ্কে বসে নিচু হতে গিয়ে ছেলের মোবাইল ফোনটি কামরার মেঝেতে পড়ে যায়। ছেলের মুখে সে-কথা শুনে তিনি ফোন খুঁজতে থাকেন। নেপালের অভিযোগ, তখনই তিনি খেয়াল করেন, তাঁর পকেট থেকে মানিব্যাগটি উধাও। তাতে ছ’হাজার টাকা ছিল বলে তাঁর দাবি। সেই সময় জীবনও তাঁকে জানায়, তাঁরও মানিব্যাগ উধাও। সেখানে ১০ হাজার টাকা ছিল বলে নেপালের দাবি।
আরও পড়ুন
দাড়িভিটে পুলিশ গুলি চালায়নি, দাবি ডিজি-র
তাঁর অভিযোগ, তাঁরা কাউকে সন্দেহ করার আগেই ওই কামরার যাত্রী অসমের জনাদশেক যুবক তাঁদের মোবাইল চুরির অপবাদ দেয়। এবং বেধড়ক মারতে শুরু করে। কামরার মধ্যেই বাবা-ছেলেকে বেঁধে রাখে তারা। ওই যুবকেরা তাঁদের অসমে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল বলেও অভিযোগ নেপালের। এর পরে মঙ্গলবার এক সময় সুযোগ বুঝে অন্য এক যাত্রীর মোবাইল থেকে বাড়িতে ফোন করে গোটা ঘটনাটি জানান নেপাল। এর পরই বাড়ির লোকজন তাঁদের উদ্ধারে উদ্যোগী হন।
মালাহার গ্রাম সংলগ্ন রামপুরের বাসিন্দা হামিদুর রহমান বৃহস্পতিবার স্টেশনে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমরা গ্রামবাসীরা ঘটনাটি মালদহ জিআরপি ও আরপিএফকে জানাই। জিআরপি কলকাতায় যোগাযোগ করার কথা বলেছিল কিন্তু আমরা মালদহ স্টেশনেই বাবা-ছেলেকে উদ্ধারের দাবি জানাই।’’ জানা গিয়েছে, বুধবার ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় দু’ঘণ্টা পরে রাত ১২টায় মালদহ স্টেশনে পৌঁছয়। এর পরে আরপিএফ ও রেল পুলিশ মিলে বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন
কেন একের পর এক বিপর্যয়? প্রশাসনকে সতর্কবার্তা রাজ্যপালের
দু’জনেই অসুস্থ থাকায় তাঁদের মালদহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। ট্রেন থেকে অভিযুক্ত সন্দেহে অসমের বাসিন্দা তিন জনকে আটক করা হয়। মালদহ রেল পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাবা ও ছেলে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় লিখিত অভিযোগ হয়নি এখনও। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে আটক করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ নেপাল বলেন, তিনি ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy