Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Nandigram

ডাকলে দুপুরের সভায় যেতাম, নন্দীগ্রামে গিয়ে বললেন ফিরহাদ

এ দিন সকালে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ নিয়ে একটি টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা লেখেন, ‘আজ নন্দীগ্রাম দিবস। ‘সূর্যোদয়’-এর নামে বর্বর হিংসার ১৩তম বছর।

তৃণমূলের ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালনের মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালনের মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ১৮:৫৫
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া নন্দীগ্রাম আন্দোলন হত না। ঠিক যেমন গান্ধীজি ছাড়া স্বাধীনতা আন্দোলন হত না। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সভায় দাঁড়িয়ে বলে দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দলের তরফে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালনের মঞ্চ থেকে ফিরহাদ বারবার উল্লেখ করলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তি নয়। দলনেত্রী মমতার জন্যই সব হয়েছে।’’ ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর তৃণমূলের থেকে নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ করে ‘সূর্যোদয়’-এর কথা বলেছিল সিপিএম। প্রতি বছর এই দিনটিকে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। কিন্তু এ বার দিনটি নন্দীগ্রামে ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’-র নামে সভা করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী

এ দিন সকালে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ নিয়ে একটি টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা লেখেন, ‘আজ নন্দীগ্রাম দিবস। ‘সূর্যোদয়’-এর নামে বর্বর হিংসার ১৩তম বছর। গোটা বিশ্বে রাজনৈতিক হিংসায় যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের সকলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা। সব সময় শান্তির জয় পাওয়া উচিত’।

প্রসঙ্গত, নিজের বক্তব্যে একবারও শুভেন্দুর নাম নেননি ফিরহাদ। কিন্তু তিনি বলেছেন, তাঁকে ডাকলে সেই সভাতেও তিনি যেতেন। এ দিন দুপুরে নন্দীগ্রামে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সভা করেন শুভেন্দু। বিকেলে ফিরহাদের উপস্থিতিতে সভার কথাও আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। দুপুরের সভায় তৃণমূল বা মমতার নাম না নিলেও শুভেন্দু বলেন, ‘‘ভোটের আগে আসছেন। ভোটের পরেও তো আসতে হবে!’’ আর বিকেলে ফিরহাদ বললেন, ‘‘সকালে ডাকলেন না কেন? ডাকলে ফিরহাদ হাকিম যেত। শহিদদের প্রণাম করে আসত। আপনি ডাকবেনও না আর সভাও করতে দেবেন না, এটা হয় না। নন্দীগ্রাম তৃণমূলের অধিকার। আপনি এই অধিকার ছিনিয়ে নেবেন কী করে?’’

এ দিন ফিরহাদ আরও বলেন, তৃণমূলের কেউই হেলিকপ্টারে করে ওঠেনি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেকে সিঁড়ি বেয়ে উঠেছি। আর সেই সিঁড়ি তৈরি করে দিয়েছেন মমতা।’’ প্রসঙ্গত, ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে কিছুদিন আগেই এক অরাজনৈতিক সমাবেশে নিজের সম্পর্কে শুভেন্দু বলেছিলেন, তিনি হেলিকপ্টার নয়, সিঁড়ি বেয়ে উঠেছেন। সেই প্রসঙ্গ অবশ্য টানেননি ফিরহাদ। বরং শুভেন্দুর নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে, মমতার হাত ছেড়ে দেওয়া মানেই বিজেপি-র হাত শক্ত করা। ’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তখনও মিরজাফর ছিল। আজও আছে। কিন্তু বিশ্বাস তো আমাদের করতে হবে।’’

নন্দীগ্রামের তৃণমূলের মঞ্চে হাজির ছিলেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বিশ্বাস। ফিরহাদ কিছু না বললেও তিনি অবশ্য সরাসরি শুভেন্দুর বিজেপি-তে যোগ নিয়ে জল্পনার কথা উল্লেখ করেন। পূর্ণেন্দু বলেন, ‘‘শুভেন্দু আমার অত্যন্ত স্নেহধন্য৷ কিন্তু এ কথা খুব পরিষ্কার, তিনি যদি রাজ্যের বিরোধী বিজেপি শিবিরে যান তা হলে সবাই তাঁকে রুখে দেবে!’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের আন্দোলনকে তৃণমূলনেত্রীই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। আজ নন্দীগ্রামের যে উন্নয়ন হয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রী সই না করলে হত না। এটা কারও ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় হয়নি।’’

আরও পড়ুন: বাংলাতেও টিকবে না মমতা সরকার, বিহারে প্রবণতা দেখে দাবি কৈলাসের

আরও পড়ুন: লাইভ: এই মুহূর্তে বিজেপি-আরজেডি সমানে সমানে টক্কর, নীতীশের দল তিন নম্বরে

সভায় ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনও। তিনি দুপুরের সভাকে কটাক্ষ করে জানান, প্রতিবার ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’-র সভায় মমতাকে সম্মান দেওয়া হলেও এবারই প্রথম তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই নন্দীগ্রামে আলাদা করে তৃণমূলকে সভা করতে হল। দোলা বলেন, ‘‘মমতার নির্দেশেই আমরা এখানে এসেছি। এর পর মমতা যা নির্দেশ দেবেন, তাই করব। তবে আমরা কোনওদিন বিভাজনের রাজনীতি চাই না। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, বিভাজনের রাজনীতি শেষ কথা বলে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE